প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৫৯ পিএম
মহিলা পরিষদ আয়োজিত রোকেয়া সদনের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মতবিনিময় সভা । ছবি : প্রবা
মৌলবাদের উত্থানের কারণে পৃথিবীজুড়ে নারী নির্যাতন বেড়েছে। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু। মহিলা পরিষদের আশ্রয়কেন্দ্র রোকেয়া সদনের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এর আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে নারী-পুরুষ সবাই মিলে যুদ্ধ করেছি। তখন ধর্মের বা লিঙ্গের প্রশ্ন আসেনি। ১৯৭৫ সালের পর মৌলবাদের আলোকে দেশ পরিচালিত হয়েছে। এখন তাদের প্রতিহত করে প্রতিরোধের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। নারী নির্যাতন সারা পৃথিবীতে প্রকট আকার ধারণ করছে মৌলবাদের উত্থানের কারণে। আমাদের এ অবস্থা প্রতিহত করতে হবে।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারী ও শিশুদের প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালনাকারীদের আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। মেয়ে শিশুদের সাহসী ও যোগ্য করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, একেকটা আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশ্য একেক রকম হয়। তবে নারী ও শিশুদের জন্য যেসব আশ্রয়কেন্দ্র আছে সেখানকার পরিচালিকার অবশ্যই সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনার হতে হবে। কোনো মেয়ে ছোট পোশাক পরে বাইরে গেলে তাকে অন্যরা ছোট করে দেখতে পারে, এমন চিন্তা থেকে মেয়েটাকে পোশাকের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়ার প্রবণতা যেন না থাকে। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে সংঘবদ্ধ আইন ও নীতিমালা করতে হবে।
সহিংসতার শিকার নারীদের সহায়তাদানের কাজকে সেবামূলক হিসেবে না দেখে তাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে এই সদন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ হিসেবে। বর্তমানে এমন আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও তা সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তাই তাদের জন্য আরও পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
টাঙ্গাইল শাড়ী কুটিরের কর্ণধার মুনিরা ইমদাদ বলেন, বিভিন্ন পল্লীতে ঘুরে খেয়াল করেছি তাঁতী সম্প্রদায়ের মধ্যে মেয়েদের বাল্যবিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আছে। আইনটি যদি আরও শক্ত হতো তাহলে হয়তো প্রতিরোধ করা সম্ভব হতো। সেজন্য বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইন আরও শক্ত করা দরকার।
দীর্ঘদিন মহিলা সদনে মানসিক সেবা দিচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহীদা চৌধুরী। তিনি বলেন, সহিংসতার শিকার মেয়েদের মানসিক অবস্থাকে আমরা গুরুত্ব দেই না। তাদের মনের মধ্যে থাকা কষ্টের জন্য সারাজীবনই ভুগতে থাকে। এগিয়ে যেতে পারে না। তাদের অনেক বেশি মানসিক সাপোর্ট দরকার।
সভার শুরুতে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন বিপ্লবী কর্মকার, অর্পণা কর্মকার, শংকরি মিত্র ও সাথী চক্রবর্তী। চিত্রে মহিলা পরিষদের রোকেয়া সদনের কর্মকাণ্ড উপস্থাপন করেন আইটি অফিসার দোলন কৃষ্ণ শীল।