প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫১ পিএম
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মৃত পাইলট মোহান্নাদ ইউসেফ হাসসান আল হিন্দির বোন তালা এলহেনদি। প্রবা ফটো
ভুল চিকিৎসা ও গাফিলতির কারণে ঢাকায় গালফ এয়ারের পাইলট মোহান্নাদ ইউসেফ হাসসান আল হিন্দি মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বেলা ১২টার দিকে এ অভিযোগ করেন পাইলটের বোন তালা এলহেনদি। ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করতে জর্ডান থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি।
জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক ওই পাইলট ফ্লাইট নিয়ে বাংলাদেশে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তালা এলহেনদি বলেন, ‘গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান আমার ভাই ইউসেফ হাসসান। এটা খুবই পরিষ্কার যে, প্রথম কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর আমার ভাইকে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে তাকে পিসিআই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অর্থাৎ অযথাই সাড়ে ছয় ঘণ্টা সময় নিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা হলে আমার ভাইকে বাঁচানো যেত। কিন্তু চিকিৎসার ক্ষেত্রে তারা অবহেলা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ সময় চিকিৎসাবিহীন থাকার কারণে বেশ কয়েকবার তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। একজন রোগীকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা চিকিৎসাবিহীন রাখার পরেও একজন কার্ডিওলোজিস্টকে তারা (কর্তৃপক্ষ) সেখানে আনতে পারেননি। তারা মূলত আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে আমি ন্যায়বিচার চাচ্ছি।‘
এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা বা ক্ষতিপূরণ চান তালা এলহেনদি। বলেন, ‘আমি চাই না অন্য কারও ভাই, বোন, বাবা, মা আমার ভাইয়ের যা হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে যাক। আমি চাই না, আমাদের আস্থা রাখা চিকিৎসকদের হাতে আরও কেউ ভুল চিকিৎসার শিকার হোক। আমি ইউনাইটেড হাসপাতালকে এ রকম ভয়াবহ চিকিৎসা অবহেলা থেকে বিরত রাখতে চাই। আর কেউ যেন চিকিৎসা নিতে গিয়ে এমন অবহেলার শিকার না হয়।’
রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ২০২০ সালের মে মাসে আগুনে পুড়ে প্রাণ হারান ৫ জন। এরপর হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিলের দাবি উঠেছিল।
গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষেরও অবহেলা ছিল বলে অভিযোগ করেন তালা এলহেনদি। তিনি বলেন, ‘কার্ডিয়াল এরেস্ট হওয়ার পর আমার ভাই অচেতন হয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেই অবস্থাতেই ছিলেন। তিনি গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ওঠার সময় এটা হয়েছে। তিনি এই ফ্লাইটের পাইলট ছিলেন। নিজের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। কাজেই গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল যাতে সঠিক চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া গালফ এয়ারের কাছে থাকা আমার ভাইয়ের চিকিৎসার অতীত ইতিহাস ইউনাইটেড হাসপাতালে জমা দেয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা তা করেনি।’