প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২২ ১৬:১৫ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২ ১৬:৫৮ পিএম
গ্রেপ্তার ৩৭ জন, ছবি : প্রতিদিনের বাংলাদেশ
মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীতে ছিনতাইকারী ও মলমপার্টি বেড়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব । রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের ৩৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মতিঝিল, মুগদা ও তেজগাঁও এলাকায় শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত বিষাক্ত মলম ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করা হয়।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এসব ছিনতাইকারী একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে এবং তাদের অনেকেই জামিন নিয়ে বের হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা একাধিক গ্রুপে ভাগ হয়ে ছিনতাই করে। এদের ১০-১৫টি গ্রুপ রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে প্রতিদিনের বাংলাদেশ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অপরাধের বিষয়ে নিশ্চিত নয়।
রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরেরটেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি থাকে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলো--মিজানুর রহমান (২১), সোহেল (২০), মাসুদ রানা (২১), সাব্বির (২২), আবু বকর সিদ্দিক (২২), শাকিল (২০), নাঈম মোল্লা (২০), সালমান (২৬), জালাল হোসেন (২১), শাওন (২২), শহিদুল ইসলাম (৪০), রফিক (৩৩), আজিজুর (৩৬), সৈকত মন্ডল (১৯), আরিফ গাজী (২৬), জনি (১৮), রুবেল (২৮), আফজল (১৮), দ্বীন ইসলাম (২৩), তুহিন (১৮), রবিউল আউয়াল হৃদয় (২২), আরমান (২২), সানোয়ার হোসেন (৩১), রুবেল (৩৪), সোহেল (৩৫), শান্ত (২৫), আজাদ (৩৫), আকাশ (২২), নাইম খান (১৬), আপন মিয়া (২০), নাজমুল হোসেন (২৮), মাসুম মিয়া (২৮), শান্ত (২০), সোহেল মাতব্বর (২৩), হৃদয় (১৯), সোহরাব (১৯) ও ইয়াছিন ব্যাপারী (২২)।
র্যাব-৩ অধিনায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রায় সকলেই মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নগরীতে বেড়ে চলেছে ছিনতাই অজ্ঞানপার্টির কার্যক্রম। অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয় না। ফলে এদের তৎপরতা দিন দিন বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করে। তারপর সহজ-সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদেরকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। বিভিন্ন চেতনানাশক বা এ জাতীয় বিষাক্ত মলমে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এ ছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। ওই সময়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশাহারা হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এসব ছিনতাইকারী সদস্যদের ভুক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই শনাক্ত করতে পারেন। ফলে এসব ছিনতাইকারী নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়াও সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের অনেক সময় হত্যা করতেও দ্বিধা বোধ করে না। মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরেরটেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি থাকে বলে জানিয়েছে র্যাব।
প্রবা/রাই/জেআই