× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সরকারের আমদানিনির্ভর নীতির কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে : গণতন্ত্র মঞ্চ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২৯ পিএম

আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫০ পিএম

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চ নেতারা। প্রবা ফটো

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চ নেতারা। প্রবা ফটো

আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ভুল নীতি’ ও ‘অতিমাত্রায় আমদানিনির্ভর’ নীতির কারণে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে বাংলাদেশ সরকার দেশটির আদানি গ্রুপের সঙ্গে যে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছে তার বিরোধিতা করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, ‘এক ইউনিট বিদ্যুৎ না দিলেও ভারতীয় কোম্পানিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে বাংলাদেশকে, যার দায় চোকাতে হবে জনগণকেই।’

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।

সরকারের নির্বাহী আদেশে ১২ জানুয়ারি বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গত ১৪ বছরে এ নিয়ে এগারোতম বারের মতো গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ল। নতুন দাম কার্যকর হবে জানুয়ারিতেই। দাম বাড়ানোর ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সংশোধনের সময় বলা হয়েছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে দাম বাড়াবে সরকার। এর আগে নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বিইআরসি। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয় এটি।

বিদ্যুতের এ দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘একতরফাভাবে নির্বাহী আদেশে জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের ৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৪ বছরে সরকার ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। গত বছর সব জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে ৪৬ থেকে ৫২ শতাংশ পর্যন্ত, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে ২২ শতাংশের ওপরে... পানির দাম বাড়িয়েছে। যতগুলো সেবামূলক খাত, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিটির দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার।’

সরকারের সমালোচনা করে সাইফুল হক বলেন, ‘বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যা আমার-আপনার টাকা। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সরকারের চুরি-দুর্নীতির জন্য, অব্যবস্থাপনার জন্য সাধারণ মানুষ কেন শাস্তি পাবে? বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে গণবিরোধী নীতির জন্য সাধারণ মানুষ কেন দুর্ভোগে থাকবে?’

এদিকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য ভারতের আদানি গ্রুপ ঝাড়খণ্ডে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক একটি কেন্দ্র চালু করছে। আদানির বিদ্যুতের জন্য প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হবে।

এর সমালোচনা করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘তারা এক বছরে যদি এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে, তবু এক বছর তার ক্যাপাসিটি চার্জ মানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য চার্জ দিতে হবে।’

এ বাড়তি ক্যাপাসিটি চার্জের সঙ্গে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বালানি সংকটের মধ্যে নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জোর দিলে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন সাকি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে বলেছিলাম স্থলভাগে ও সমুদ্রের তলদেশে পর্যাপ্ত গ্যাস আছে। আপনারা গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা করুন। সরকার পেট্রোবাংলা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা কোম্পানি ও নরওয়ের আরেকটা কোম্পানি তাদের সঙ্গে যৌথভাবে সমীক্ষা করে দেখল বাংলাদেশে ন্যূনতম ৩২ থেকে ৩৮ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিসিএফ) গ্যাস মজুদ আছে। এ গ্যাস তো আছে স্থলভাগেই আর সমুদ্রবক্ষে আরও বিপুল গ্যাস আছে।

আমরা যদি গ্যাস উত্তোলন করতে পারি এবং ধীরে ধীরে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে পারি তাহলে বিদ্যুৎব্যবস্থার একটা টেকসই ও সাশ্রয়ী ব্যবস্থার দিকে যেতে পারব। কিন্তু সরকার সে পথে গেল না। তারা সেই আমদানিনির্ভরতার দিকেই গেল। আর এ বাড়তি টাকা যে বিদ্যুতের জন্য নির্ধারণ করা হলো সে টাকাটা যাবে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সেসব মালিকের পকেটে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ূম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারসহ গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দলের নেতারা। এদিন এ কর্মসূচিতে যোগ দেয়নি নুরুল হক নুরের দল গণঅধিকার পরিষদ।

জানা যায়, ১১ জানুয়ারি যুগপৎ আন্দোলনে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হকের দেশে এসে সরাসরি যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তার অংশগ্রহণের বিষয়টি গণতন্ত্র মঞ্চের অন্য নেতাদের জানালেও সেদিন তারা সমাবেশ দীর্ঘায়িত না করে দ্রুত শেষ করে দেন। ফলে নুর সমাবেশে যোগ দিতে পারেননি। এর প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেয়নি।

এদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অসুস্থতার কারণে এ সমাবেশে যোগ দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা