প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ১৫:৩৬ পিএম
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) অনিয়মিত শ্রমিকদের নিয়মিত করাসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে অনিয়মিত শ্রমিকরা। এ সময় সারাদেশ থেকে আসা শ্রমিকরা বিএডিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা সংস্থাটির চেয়ারম্যান রুহুল আমিন খান বরাবর একটি স্মারকলিপি পাঠিয়ে দেন।
শনিবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মতিঝিলস্থ বিএডিসির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানান, শ্রমিকদের দাবির পরিপেক্ষিতে চেয়ারম্যান ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। তিনি মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের। যে কারণে শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, বর্তমানে বিএডিসি সংস্থার বিভিন্ন দপ্তরে বেশির ভাগ কাজ মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে অফিস পর্যন্ত শ্রমিক দিয়ে পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু তারা মৌসুমি শ্রমিক বলে প্রহসনের শিকার হচ্ছেন। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে বেতন/মজুরী সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী না দিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়োজিত শ্রমিকদের উপর জুলুম ও নির্যাতন করে আসছে।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কৃষি মন্ত্রণালয়ের জারি করা কৃষি নীতিমালা ২০১৭ এর বাস্তবায়ন; অনিয়মিত শ্রমিক থেকে নিয়মিতকরণ ও নিয়োগ প্রদান; শ্রমিকদের নায্য মজুরি প্রদান; কাজের নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া এবং অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য বাড়তি পারিশ্রমিক; বিনা কারণে চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা; বৈষম্যবিহীন কর্মপরিবেশ-অধিকার সুরক্ষা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা; নারী শ্রমিকদের বেতন ভাতাসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস নিশ্চিত করা; মৌসুমী শ্রমিক নামক ‘প্রহসন’ থেকে মুক্তিসহ অবৈধ শ্রমিক ম্যানুয়েল বাতিল করা।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শ্রমিক আলম হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিএডিসির বীজ উৎপাদনে তারা কাজ করছেন। তারা দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে এ ধরনের শ্রমিকের সংখ্যা দেড় হাজারের অধিক। যারা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার।
সিলেট থেকে আসা শ্রমিক রাজন আহম্মেদ বলেন, সরকারের ২০১৭ সালের জারি করা কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা অনুযায়ী অনিয়মিত শ্রমিকদের নিয়মিত করার বিধান রয়েছে। তবে দীর্ঘ ৮ বছরেও শ্রমিকদের নিয়মিত করা হয়নি। অথচ এই সময়ের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মো. জুনায়েদসহ ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। পরে তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাদের দাবির বিষয়ে কোন সমাধান দেয়নি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলবো। যতক্ষণ এ বিষয় সুরাহা না হবে ততক্ষণ আমাদের এ কর্মসূচি অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলবে। সঙ্গে আমাদের সকল শ্রমিকেদের কর্মবিরতি থাকবে।’