× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঈদবাজার

জুতা-স্যান্ডেলের দোকানে ভিড়

হাসনাত শাহীন

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫ ১২:০৮ পিএম

ঈদের কেনাকাটার শেষ পর্যায়ে এবার ভিড় জমেছে জুতার দোকানে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেটে। প্রবা ফটো

ঈদের কেনাকাটার শেষ পর্যায়ে এবার ভিড় জমেছে জুতার দোকানে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেটে। প্রবা ফটো

প্রাচীন যুগে পা রক্ষা করাই ছিল জুতা-স্যান্ডেল বা পাদুকার মূল উদ্দেশ্য। বরফ যুগ বা প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক সভ্যতা পর্যন্ত পাদুকা মানুষের অন্যতম আবশ্যিক ব্যবহার্য সামগ্রী। তবে সময়ের পরিবর্তনে এর ভূমিকাও বদলেছে। এখন এটি কেবল পায়ের সুরক্ষা বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহৃত হয় না, বরং ফ্যাশন সচেতন মানুষের স্টাইলিশ লুকের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং জুতা না থাকলে যেন সাজই অসম্পূর্ণ। এই চাহিদাকে কেন্দ্র করে ঈদে রাজধানীর বিভিন্ন জুতা-স্যান্ডেলের মার্কেটে চলছে জমজমাট ব্যবসা। ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারাও। বিশেষ করে পোশাকের সঙ্গে মানানসই ডিজাইনের জুতা-স্যান্ডেলের চাহিদা এবার ঈদে বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে বাজারে এসেছে হাজার রকমের নতুন ডিজাইনের পাদুকা। তাতে রয়েছে উৎসবের সাজ। জুতা-স্যান্ডেল, লোফার, কেডস, রানিং সুÑ সবকিছুতেই নকশা বা রঙের চমৎকারিত্বের চেষ্টা। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ক্রেতারা বেছে নিচ্ছে পায়ের সুরক্ষাকারী বিভিন্ন পাদুকা। তাতে গুরুত্ব পাচ্ছে পায়ের আরামের বিষয়টিও।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষ সাধারণত জামা-পোশাক আগে কেনে। তারপর সেই পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে কেনে জুতা বা স্যান্ডেল। যে কারণে আমাদের মার্কেটে কেনাকাটা শুরু হয় কিছুটা দেরিতে। এখন রোজা শেষদিকে চলে এসেছে, বেশিরভাগ মানুষের পোশাক-আশাক কেনা শেষ। এখন তারা এসেছেন জুতার বাজারে, পোশাকের সঙ্গে মিল রেখেই জুতা কিনছে অধিকাংশ মানুষ। বলা যায় এখন জুতার মার্কেট জমজমাট।

ধানমন্ডি ১৫ নম্বরের হাতে তৈরি জুতা-স্যান্ডেলের দোকান অপর্ণা সুজ, সঞ্জীব সুজ, নিউ আরাফাত সুজ, বাবুল সুজ, নিউ অন্তু ফুটওয়্যার, গোলাপ সুজ, বাবুল সু স্টোর, নিউ জনি সুজসহ বিভিন্ন দোকান থেকে শুরু করে হাজারীবাগের ট্যানারি মোড়ের নূর লেদার এক্সপোর্ট, সাব্বির লেদার গুডস, সালমা’স ফুটওয়্যার, এস অ্যান্ড এস লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার, লেদার বিডি, জে আর লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার, ঢাকা লেদার এক্সপোর্ট, ইকোপেলি, টেক লেদার, আজিজ লেদার, ব্রাউন হাইড, সেঞ্চুরি লেদার ক্র্যাফট, সু স্টার, আমিন, আরমান লেদার গুডস, লেদার এক্ট, দেওয়ান লেদার ক্র্যাফট, ভেলোরা লেদার, বাইসন, এলিগ্যান্ট লেদার, এনেক্স লেদার, পাপ্পু সু, এইচএমএস লেদার, ব্ল্যাক স্নো, মাইশা লেদার, মারনিয়া লেদার, শোভন লেদার, লেদার মার্ট, লাক্সারি লেদার, ডায়মন্ড লেদার, ইয়াসিন লেদার, আর্টিস্ট্রি লেদার, আমিন ফুটওয়্যার, সিলভা, গ্লোসি লেদার গুডস বিডি, জোনাকি সুজ, লেদার কার্নিভালসহ প্রায় সবখানেই চলছে বেচাকেনা। আর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর নিউমার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোডের জুতা-স্যান্ডেলের বিপণিগুলোতে। এর মধ্যে রয়েছেÑ এলিফ্যান্ট রোডের ভিআইপি শপিং সেন্টার, সিটি সুপার মার্কেট, জিন্নাত ম্যানশন, সিদ্দিকী প্লাজা, হাই ম্যানশন, ইউসুফ ম্যানশন, জাহানারা ভবন, আমেনা ভবন, গফুর ম্যানশন মার্কেটসহ বেশ কয়েকটা মার্কেটের বাটা, বে, ওরিয়ন, লোটো, এপেক্স, স্পেরো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাশাপাশি নন-ব্র্যান্ডের দোকানগুলো।

ট্যানারি মোড়ের জায়ান’স লেদারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জোবায়ের হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের বেশ কয়েকটা দোকান ও শোরুম আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো দোকান হলো নূর লেদার অ্যান্ড গুডস। ১৯৯১ সাল থেকে শতভাগ চামড়া দিয়ে তৈরি জুতা বিক্রি করে আসছি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জায়ান’স লেদার। আমরা মূলত পাইকারি ও খুচরা উভয়ভাবেই ব্যবসা করি। যে কারণে ঈদের সময় ছাড়াও আমাদের সারা বছরই ব্যবসা হয়। সারা দেশ থেকেই এখানে পাইকারি জুতা-স্যান্ডেল কিনতে আসে। আর ঈদের সময় রাজধানীবাসী ভিড় জমায়। এবার আমাদের ব্যবসা বেশ ভালো হচ্ছে।

এবার জুতা-স্যান্ডেলের দাম বেড়েছে কি নাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমাদের এই অঞ্চলে প্রায় দুইশ দোকান আছে, যেসব দোকানে পিওর চামড়ার জুতা-স্যান্ডেল পাওয়া যায়। প্রায় সব দোকানেই পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ দোকানেরই জুতা-স্যান্ডেল তৈরির নিজস্ব কারখানা আছে। যে কারণে আমাদের এখানে দামও তুলনামূলক কম।

একই কথা বললেন এই অঞ্চলের অন্যতম ফ্যাশনেবল জুতা-স্যান্ডেলের দোকান লেদার কার্নিভালের মালিক জামিল আহমেদ এলিচ। তিনি বলেন, আমার বাবা আগে থেকেই লেদারের ব্যবসা করেন। আমি বাবার ব্যবসার পাশাপাশি ২০১৯ সাল থেকে জুতা-স্যান্ডেলের কারখানা দিই। শুরুর দিকে অনলাইনে ব্যবসা করতাম। এখন শোরুম দিয়ে বসেছি। নারী-পুরুষ উভয়েরই জুতা-স্যান্ডেল তৈরি করি নিজস্ব কারখানায় রিফাইন করা চামড়া দিয়ে। আমাদের পণ্য আধুনিক ডিজাইনের হওয়ায় বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

এলিফ্যান্ট রোডের স্পেরোর এক বিক্রয়কর্মী শাকিল আহমেদ বলেন, ঈদের তিন-চার দিন বাকি আছে; আমাদের এখন দম ফেলার সময় নেই। এই সময়ের প্রত্যেকটা দিনের সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ধুমছে বেচাকেনা হবে। এবার জুতার দাম বেড়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে দাম তেমন বাড়েনি। আগের বছরের মতোই আছে।

তার সঙ্গে কথা বলা শেষ করে নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি মার্কেট ও গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের জুতা-স্যান্ডেলের বিক্রেতাদের কাছে এবারের দাম কেমন এবং বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তারা জানান, জুতা-স্যান্ডেলের দাম আগের বছরের মতোই আছে। যে কারণে এবারে বিক্রি ভালো হচ্ছে। এখন রোজা শেষদিকে; ঈদ প্রায় চলেছে এসেছে। এই সময়ে বিক্রি বাড়বেÑ এটাই স্বাভাবিক।

অন্যদিকে রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ব্র্যান্ডের জুতার দোকানগুলোতে ভিড় অনেক বেশি। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। এপেক্সের এক বিক্রয়কর্মী জানান, এ বছর ঈদ সামনে রেখে আড়াই হাজার নকশার জুতা নিয়ে এসেছে এপেক্স। আমাদের এখানে এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। প্রতিবছর রোজার শেষদিকে জুতার বেচাকেনা ভালো হয়। এবারও তাই হচ্ছে। এ বেচাকেনা চাঁদরাত পর্যন্ত চলবে।

বে’র এক বিক্রয়কর্মী জানান, রোজার শুরুর বেশ পরে জুতা-স্যান্ডেলের দোকানে বিক্রি জমতে শুরু করে। এবারের রোজার শুরু থেকেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন রাত ১২টায় শোরুম বন্ধ হওয়া পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। এবার বে থেকে নতুন অনেক ডিজাইনের জুতা-স্যান্ডেল এসেছে। যা সবারই নজর কেড়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা