ওকাপের গোলটেবিল বৈঠকের তথ্য
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫ ২২:৩৯ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫ ১৭:০৮ পিএম
প্রবা ফটো
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। তারা নিজেদের ঘর-বাড়ি, সহায়-সম্বল হারিয়ে উদ্বাস্তে পরিণত হচ্ছে। ফলে তারা নিজ জন্মস্থান থেকে মাইগ্রেশন করতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ৯২ শতাংশই সাইক্লোনে আক্রান্ত হয়। তা ছাড়া তাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ মানুষ নানাভাবে বন্যায় আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সংস্থাটির চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম এক উপস্থাপনায় এসব তথ্য তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ, মাইগ্রেশন এন্ড মর্ডান স্লাভেরি’ শীর্ষক ফেলেশিপ-২৫ প্রোগ্রাম উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইকোনোমিক রিলেশন ডিভিশনের এডিশনাল সেক্রেটারি এ কে এম সোহেল, বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের হেড অব ক্লাইমেট কাজী এমদাদুল হক, এফইএসের বাংলাদেশ রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. ফিলিক্স গারডেস, সুইডেন দূতাবাসে ঢাকাস্থ ক্লাইমেট এন্ড এনভাইরণমেন্ট প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
শাকিরুল ইসলাম বলেন, উপকূলের জমিতে প্রতিনিয়ত লবণাক্ততা বাড়ছে। এতে কৃষি কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে। আবার লবণাক্ততার কারণে জমিতে কৃষক সেচ দিতে পারে না। এতে করে কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে পড়ছে। তারা পেশা বদলে অন্য কাজে যুক্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগে ঘরবাড়ি হারানো মানুষের মধ্যে ৮১ শতাংশই ঋণ করে এসব নির্মাণ করছে। বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হওয়ায় তারা সেইসব ঋণও সময় মতো পরিশোধ করতে পারে না। এক্ষেত্রে তাদের সমস্যা সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
ওকাপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ওমর ফারুক জানান, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সাল থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু নিরাপদ অভিবাসনের কথা বলবো আর মানুষ সব মেনে নিবে এটা হবে না। সবাইকে সম্পৃক্ত করেই কাজ করতে হবে। এজন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। সেদিকটি খেয়াল করেই ফেলোশিপের মতো কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ুর কারণে অনেক মানুষ বিদেশে যায়, নিজ এলাকা থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়। মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। জলবায়ু ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে অনেকে ব্যবসা করে কিন্তু ওকাপ ব্যবসা নয় মানুষের প্রকৃত দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরবে। সমস্যার সমাধান করবে। সবাইকে নিয়ে কাজ করে সমস্যার সমাধান করবে।
মাইগ্রেশনে সর্বশান্ত হওয়া লোকটাকে কী সরকার অর্থায়ন করতে পারে না প্রশ্ন রেখে কাজী এমদাদুল হক বলেন, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের টাকা দিয়ে ড্রেন, ওভারব্রিজ করছে অথচ এসব লোকদের বিদেশে পাঠানোতে কেন টাকা দেওয়া যাবে না। সরকার কেন ইপিজেটগুলোতে এসব লোকদের নিয়োগে প্রাধান্য দিতে হবে তা বলে না। বিশেষ করে বিদেশে বাংলাদেশের যে সব শ্রমিক নির্যান ও অত্যাচারের শিকার হয় তাদের ক্ষেত্রে ঢাকাস্থ সে সব দেশের রাষ্ট্রদূতদের জবাবদিহিতায় আনা হয় না।