প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫৪ পিএম
রবিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে সকাল ১০টায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রবা ফটো
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক (ডিজি) ছাইফুল আলমসহ আওয়ামী দোসরদের অপসারণ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করেছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা।
রবিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর খামারবাড়িতে সকাল ১০টা-দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ফেস্টুন হাতে খামারবাড়ির সামনে সড়ক অবরোধে অংশ নেন ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ। আন্দোলনের এক পর্যায়ে রাস্তা অবরোধ করে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব মো. রেজাউল ইসলামের (মুকুল) নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে কর্মকর্তারা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান কর্মসূচি ভেঙে দেয়। এ সময় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের সরে যেতে দেখা যায়। তবে এ সময়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের অর্থ সম্পাদক কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ডিএইর প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের উপপরিচালক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদকে মেহেরপুরের বারাদি হর্টিকালচার সেন্টারে উপপরিচালক পদে বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করে কৃষি মন্ত্রণালয়। মাহবুবুর রশীদের স্থলাভিষিক্ত করা হয় উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের উপপরিচালক (আমদানি) মো. মুরাদুল হাসানকে। এ বদলি ঘিরে খামারবাড়িতে এ অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচি সম্পর্কে মো. রেজাউল ইসলাম (মুকুল) বলেন, আমরা সকাল ১০টা-দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। এতে সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নিয়েছেন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরমুক্ত দেখতে চাই। এ লক্ষ্য আদায়ে আমাদের কর্মসূচি চলবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মহাপরিচালক ছাইফুল আলম বলেন, সরকারের নির্দেশনায় আমরা চলি। খামারবাড়িতে যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘কৃষি সেক্টরকে ফ্যাসিস্টের দোসর যুক্ত করে কৃষি উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। রবিবার (১৬ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিরলস কাজ করছে। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী পর্যায়ে ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশের কৃষি উৎপাদনের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছে। বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশন ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়তা এবং একইসঙ্গে কৃষি সেক্টরে ফ্যাসিস্টদের দোসর মুক্ত করায় বিশ্বাস করে। এমন পরিস্থিতিতে বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে কতিপয় কর্মকর্তা ১৫ মার্চ ‘কৃষি সেক্টরকে ফ্যাসিস্টের দোসর যুক্ত করে কৃষি উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে। এ সংবাদ সম্মেলনটি বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের আলোকে করা হয়নি। এটি একতরফাভাবে করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারের অপব্যবহার করে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাধারণ কৃষিবিদদের মধ্যে শুধু বিভক্তিই সৃষ্টি করবে না, বরং কৃষি উপদেষ্টার কাছে ভুল বার্তা যাবে। এটি সচেতন কৃষিবিদদের কাম্য হতে পারে না। পূর্ণাঙ্গ ফোরামে আলোচনা ব্যতীত এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের অধিকাংশ সদস্যদের মতামত ও অংশগ্রহণ ছিল না এবং আমরা এ সংবাদ সম্মেলনের সঙ্গে একমত না। এমতাবস্থায় ভবিষ্যতে এ ধরনের অনৈতিক ও অ্যাসোসিয়েশনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. রেজাউল ইসলাম (মুকুল) বলেন, আমরা অবশ্যই সর্বাধিক সদস্যের মতামত নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছি। কেননা আমাদের ৩১ জন সদস্যের মধ্যে শনিবার ২২ জন উপস্থিত ছিলেন।