× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নীরবে বিলুপ্ত হচ্ছে হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্র

রাহাত হুসাইন

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৫ পিএম

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৩ পিএম

লক্ষ্মীবাজার রোকনপুর হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়। প্রবা ফটো

লক্ষ্মীবাজার রোকনপুর হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়। প্রবা ফটো

জীর্ণশীর্ণ একতলা ভবনটিতে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। স্থানে স্থানে খসে পড়েছে পলেস্তারা। মেঝের প্লাস্টার উঠে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ইট-বালু। জংধরা সাইনবোর্ডের নিচের অংশের কয়েকটি স্থানে ক্ষয়ে গেছে। এর মাঝে বসেই চিকিৎসক রোগী দেখছেন, দিচ্ছেন ওষুধও। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালিত হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়ের একটি কেন্দ্রের চিত্র এটি। সূত্রাপুরের ডালপট্টি মোড়ে অবস্থিত এই চিকিৎসা কেন্দ্রের নাম ‘ফরাশগঞ্জ হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়’। 

অযত্ন আর অবহেলায় হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর রোগ সারানোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিজেই অসুস্থ, দুর্বল। আসবাব বলতে যা আছে তার সবই পুরোনো। মেরামত করা ধুলোমলিন কাঠের শোকেসটি ফাঁকা। এ ছাড়া রয়েছে চারটি পুরোনো চেয়ার, একটি টেবিল, স্টিলের আলমারি ও রোগীদের বসার জন্য একটি বেঞ্চ। আলমারিতে ডিএসসিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া ওষুধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখা।

সরেজমিন দেখা গেল, চার জন পুরুষ রোগী পাশের বেঞ্চে বসে আছেন। টেবিলের এপাশে বসা একজন নারী রোগীর সমস্যার কথা শুনে ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দিচ্ছেন হোমিও চিকিৎসক ফারজানা বেগম। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসেই চলছে স্বাস্থ্যসেবা।

ডাক্তার ফারজানা বেগম বললেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন দু’ভাগ হওয়ার আগে ২০০৫ সালে আমি এখানে স্বাস্থ্য বিভাগে যোগদান করি, ২০০৫ সালে। আমাকে এই ফরাশগঞ্জ হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আগে একজন কম্পাউন্ডার ও আয়া ছিল। বর্তমানে কেবল একজন নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছে। আমার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন করে কোনো ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে না।’

এই হোমিও চিকিৎসক জানালেন, গেল জানুয়ারি মাসে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে ৪১০ রোগীকে ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দিয়েছেন তিনি। রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার মাসিক হিসাব প্রতিবেদন আকারে তুলে রেখেছেন। প্রতি মাসে ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগে এই প্রতিবেদন জমা দেন।

ফারজানা বলেন, ‘হোমিও দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো নিয়ে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা নেই। প্রচার থাকলে আরও বেশি রোগী আসতেন। আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুরবস্থা এবং বিদ্যুৎ, পানি ও টয়লেট না থাকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দফায় দফায় জানিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।’

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে রূপচান লেনে ১৩ বছর ধরে বসবাস করেন মোলিনা দাস। এই গৃহিণী মাত্র চার মাস আগে এই ফরাশগঞ্জ হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। এরপর থেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে তিনি এখানে আসছেন। নিয়মিত হোমিও চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

মোলিনা দাস বলেন, ‘আগে অন্য জায়গায় টাকা দিয়ে হোমিও চিকিৎসা নিতাম। উপকার পাইনি। চার মাস আগে অন্য এক জায়গা থেকে এই প্রতিষ্ঠানের (হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্র) খোঁজ পাই। তখন থেকে এখানে এসে নিয়মিত ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নেই। ওষুধে আমার উপকার হয়েছে। টাকাও লাগে না। বাচ্চাদেরও এখানে এনে ডাক্তার দেখাই। বিনামূল্যে ওষুধও পাওয়া যায়। এটা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের মতো রোগীদের জন্য তা বড় ক্ষতির কারণ হবে।’ 

স্থানীয়রা চান হোমিও স্বাস্থ্যসেবাটির প্রতি সিটি করপোরেশন ও সরকারের স্বাস্থ্যসেবা খাত সুনজর দিক। বাড়তি মনোযোগ দিয়ে অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে এটির কলেবর বাড়ানো হোক। একই সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

ডালপট্টি মোড়ের স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান বলেন, ‘পুরান ঢাকার মানুষের জন্য হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়টি অত্যন্ত জরুরি। এখানকার সব মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল না। সাধারণ জ্বর-কাশির জন্য ডাক্তারকে ফি (ভিজিট) দিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ কিনে খাওয়ার অবস্থা থাকে না। সবাই তো আর বাড়িওয়ালা নয়। বেশিরভাগ মানুষ ভাড়াটিয়া। এখান থেকে হোমিও ওষুধ নিয়ে অনেক মানুষের উপকার হচ্ছে। এটি বন্ধ না করে আরও উন্নত করা হোক। জনবল বাড়ানো হোক।’ 

জানা গেছে, প্রতি অর্থবছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাজেট প্রণয়নের আগে হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়ের জন্য বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সেই প্রস্তাব আমলে নেওয়া হয় না। সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সময়ে হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়ের বাজেট তলানিতে নামে। হোমিও ওষুধ কেনার জন্য প্রতি অর্থবছরের জন্য দুই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

জানা গেছে, বিনামূল্যের হোমিও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে ডিএসসিসি। সংস্থাটির ২০১৬ সালের সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী পদটি শূন্য হলে এই সেবা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। শূন্য পদে নতুন করে আর কাউকে নিয়োগ দেবে না। 

ইতোমধ্যে চুপিসারে বন্ধ হয়ে গেছে নাজিরাবাজারের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি। সেখানে ডাক্তার ও কম্পাউন্ডার দুজনই অবসরে চলে গেছেন। নাজিরাবাজার হোমিও চিকিৎসালয়ের ডাক্তার অবসরে যান প্রায় আট বছর আগে। তারপর থেকে কম্পাউন্ডার কেন্দ্রটি পরিচালনা করতেন। ২০২৩ সালে কম্পাউন্ডার মো. শরীফ অবসরে গেলে কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার আগে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের নোটিস দেওয়া হয়নি। তারা বলছেন, জনবহুল ঢাকা শহরে জনগণের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে শুরু থেকেই অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন হোমিও দাতব্য চিকিৎসা চালিয়ে এসেছে। নগরবাসীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখা হোক। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হোক। 

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার ডিআইটি মার্কেটের তিনতলায় রয়েছে ডিএসসিসির আরেকটি হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্র। এটি রোকনপুর হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় নামে পরিচিত। সেখানেও দেখা গেল রোগীদের আনাগোনা। এটিও একটি পুরোনো ভবনে অবস্থিত। গত বছরের ডিসেম্বরে এই কেন্দ্র থেকে সেবা নিয়েছেন ৪০৬ রোগী। 

রোকনপুর কেন্দ্রের হোমিও ডাক্তার মুহাম্মদ শরীফ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় পরিচালিত এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে হোমিও চিকিৎসার জন্য কোনো ধরনের ফি নেওয়া হয় না। ওষুধও ফ্রি দেওয়া হয়। সরকারিভাবে এলোপ্যাথি চিকিৎসা করাতে ১০ টাকার টিকিট কাটতে হয়। এ ছাড়া বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। আর বেসরকারিভাবে চিকিৎসা নিতে গেলে একজন এমবিবিএস ডাক্তারকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা ভিজিট দিতে হয়। এর ‍ওপর টেস্টের (পরীক্ষা) বাড়তি খরচ তো আছেই।’

তিনি বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে অনেক সময়ই টাকা-পয়সা খরচ করে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় না। তারা হোমিও চিকিৎসা গ্রহণ করেন। আবার কেউ কেউ অপারেশনের ভয়েও হোমিও চিকিৎসা নেন। দিন দিন হোমিও চিকিৎসার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অথচ ডিএসসিসি উল্টো পথে হাঁটছে। ২০১৬ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন সাংগঠনিক কাঠামোয় হোমিও দাতব্য চিকিৎসা নিয়ে মতামত দেওয়া হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।’

কথা বলার মধ্যেই মঈনুদ্দিন নামে একজন পুরোনো রোগী ওষুধ নিতে আসেন। তাকে ঠান্ডা-কাশি ও নেজাল পলিপ সমস্যার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। জানতে চাইলে মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আমার নাকের ভেতরের অংশে মাংস বেড়েছে। ঘন ঘন ঠান্ডাও লাগে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। এলোপ্যাথি ডাক্তার দেখিয়েছি, তিনি অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশন ছাড়া হোমিওপ্যাথি ওষুধের মাধ্যমে সুস্থ হওয়া যায়Ñ এমনটা শুনে এখান থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি।’

উপরোল্লিখিত তিনটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ছাড়াও চকবাজারের জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টারের কাটারা হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় এবং লালবাগের সাত শহীদ কমিউনিটি সেন্টারে সাত শহীদ হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় কেন্দ্র থেকে হোমিও দাতব্য চিকিৎসা দিচ্ছে ডিএসসিসি। 

শুরু থেকেই ঢাকা সিটি করপোরেশন রাজধানীর দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও ওষুধ দিচ্ছে। সপ্তাহে ছয় দিন দুটি অঞ্চলের এই পাঁচটি কেন্দ্রের মাধ্যমে নগরবাসীকে হোমিও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। 

২০১১ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন দু’ভাগে বিভক্ত হলে হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়গুলো দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত হয়। উত্তরের ভাগে জোটেনি একটিও। ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় পরিচালিত হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়গুলো নিয়ে কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। এসব কেন্দ্র থেকে নতুন-পুরোনো রোগী মিলিয়ে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার মানুষ সেবা পেয়ে থাকেন। অস্ত্রোপচার (অপারেশন) ছাড়া হোমিও ওষুধের মাধ্যমে সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেয় এসব কেন্দ্র। 

দাতব্য চিকিৎসালয়গুলোতে একজন হোমিও ডাক্তার, একজন কম্পাউন্ডার (ডাক্তারের সহায়ক) রয়েছেন। ওষুধের মাসিক খরচের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন রোগের জন্য ২৮ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করে সংস্থাটি। বাজেটস্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করতে পারছে না কেন্দ্রগুলো। এ কারণে অনেক রোগীকে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বাইরে থেকেও ওষুধ কিনতে বলা হচ্ছে। 

হোমিও দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে বলে স্বীকার করলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. নিশাত পারভীন। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘নতুন অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বর্তমানে যারা হোমিও চিকিৎসালয়গুলোতে কর্মরত আছেন, তারা অবসরে গেলে শূন্য পদে আর নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে না। আমরা নিজে থেকে কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি, বিষয়টি এমন নয়। ১৯৯০ সালের অর্গানোগ্রামে ছিল। ২০১৬ সালের অর্গানোগ্রামে কিছু পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা তো অর্গানোগ্রামের বাইরে কোনো কাজ করতে পারি না।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা