প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৩ পিএম
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৪ পিএম
ফাবিহা তামান্না জেরিন। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় মানব পাচারে জড়িতের অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত নারী হলেন- ফাবিহা তামান্না জেরিন। তিনি ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার।
সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তামান্না একটি মানব পাচার চক্রের সদস্য। চক্রটি রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ জনকে পাচার করেছে। চক্রটি প্রথমে ওই ১০ জনকে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ার সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখানে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। তারা অনিচ্ছা প্রকাশ করলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে তাদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর পর তারা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন।’
সিআইডি জানায়, যুদ্ধে নাটোরের সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামের আরেকজন গুরুতর আহত হন। পাচার হওয়া ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে তিনি অন্যান্য ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গত মঙ্গলবার যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার রাজধানীর বনানী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তামান্না নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। নিরীহ সাধারণ মানুষকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছেন তামান্নার ভাই তুহিন। তিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। পাচার হওয়া ১০ জনের আরেকটি দল বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হবে জেনে তারা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকার করেছেন। এর ফলে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এতে সৌদি আরবে তারা কোনো কাজ করতে পারছেন না এবং দেশেও ফিরতে পারছেন না। তাদের দেশে ফেরাতে সিআইডি সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে।