× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শান্ত-স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাসে চলছে দ্বিতীয় দিনের বইমেলা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৪ পিএম

আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৮ পিএম

রবিবার বিকালে বইমেলা থেকে ছবি তুলেছেন আলী হোসেন মিন্টু

রবিবার বিকালে বইমেলা থেকে ছবি তুলেছেন আলী হোসেন মিন্টু

শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশ। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর মোড় পর্যন্ত সবখানেই তার নিটোল পরশ। সেই পরিবেশকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে-মাঘের শীতের হালকা হিমেল বাতাস আর দুপুর গড়ানো হালকা তেজের মাঘের রোদ। এমনই পরিবেশে ঘড়ির কাটায় বিকাল ৩টা বাজতেই খুলে গেল প্রাণের মেলা বইমেলার প্রবেশ পথের মুখ। খুব বেশি ভিড় না হলেও যারা এসেছিলেন মেলায় প্রবেশের জন্য তারা সুশৃঙ্খলতার সঙ্গে প্রবেশ করলেন বইমেলার দুই প্রাঙ্গণে।


দ্বিতীয় দিনের বইমেলার শুরুতেই বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দুই প্রাঙ্গণের বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ঢুকতেই দেখা গেল, ইট বিছিয়ে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। সেখানে নতুন বালি। প্রকাশক মেলার প্রথম দিন থেকেই স্টল চালু করতে পারলেও কিছু কিছু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টলের পাশ থেকে শোনা যায় ঠুক ঠুক শব্দ। আর মেলার মাঠে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে নির্মাণ বিভিন্ন রকম সামগ্রী।

অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘মেলার শুরুর দিকে এ রকম থাকে। গুছিয়ে উঠতে সময় লাগে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শুরুতেই বইমেলা বেশ গোছালো হয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই মেলা গুছিয়ে যাবে। আশা করছি এবারের মেলা অন্য বারের চেয়ে ভালো হবে।’

মেলার দ্বিতীয় দিনের পরিবেশ কেমন জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেলা প্রাঙ্গণে কিছু কাজ চললেও মেলার পরিবেশ বেশ শান্ত-স্নিগ্ধ আছে। আবহাওয়াটা বেশ চমৎকার; না শীত না গরম। মেলায় এমন পরিবেশই আমাদের কাম্য। আশা করি আয়োজক কর্তৃপক্ষ এবার এদিকে নজর দিবেন এবং মেলার শেষ দিন পর্যন্ত মেলার সার্বিক পরিবেশ এমনই থাকবে।’


এর মধ্যেই যে মেলায় আসা দর্শনার্থীদের কেউ কেউ বইও কেনেন। নুসরাত নোভা নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রকাশনা সংস্থা রোদেলা থেকে ‘মানুষের সম্ভাব্য বিবর্তন ও তার মনোবিজ্ঞান’ শীরোনামের একটা অনুবাদ বই কিনেছি। আরও কয়েকটা বই কিনব।’

মেলার নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘মেলার প্রবেশদ্বারে পুলিশের পর্যাপ্ত উপস্থিতি আছে। মেলায় যারা প্রবেশ করছেন তারা স্বাচ্ছন্দেই প্রবেশ করছেন। মেলার ভেতরেও নিরাপত্তার বেশ ভালো বলেই মনে হচ্ছে। এখানেও পর্যাপ্ত পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষার লোকজন আছে। এটা ভালো দিক। কিন্তু মেলার পরিবেশ একটু অগোছালো আছে। এখনও স্টল ও রাস্তা নির্মানের কাজ চলছে। এগুলো দ্রুত শেষ করার প্রয়োজন; তাহলেই আমার মনে হয় মেলাটা গুছিয়ে উঠবে।’

তবে বইমেলা পরিচালনা কমিটি বলছে, তারা মেলার প্রথম দিন থেকেই গোছানো একটা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করেছেন। দু-একটা প্রকাশনা ছাড়া প্রায় সব স্টলই প্রথম দিন থেকেই চালু হয়েছে।

কমিটির সদস্য-সচিব সরকার আমিন বলেন, ‘বেশিরভাগ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানই প্রথম দিনই স্টল চালু করেছেন। আজ হাতে-গোনা কয়েকটি স্টলের কাজ চলেছে। কিন্তু তারা বিকালের মধ্যেই কাজ শেষ করবে এবং পুরোদমে স্টল চালু করবেন।’


 ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের মেলা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবারের মেলার প্রতিপাদ্যর মতোই তাই এবার মেলার রঙ আর দৃশ্যপটেও এসেছে নানান পরিবর্তন। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো ২৪-এর গণআন্দোলনের স্মৃতি স্মরণে ‘জুলাই চত্বর’। এর সঙ্গে পুরো বইমেলা জুড়েই লাল-কালো আর সাদা রঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিপ্লব, শোক আর আশার প্রদীপ।

এবার বইমেলায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান যেমন বেড়েছে; তেমনই আয়তনও। মেলায় ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার ৮৪ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতবার ৬৪২ প্রতিষ্ঠান এবং ৯৪৬ ইউনিট নিয়ে হয়েছিল বইমেলা। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকছে ৩৬টি। গত বছরও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি ছিল।

লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায় করা হয়েছে। সেখানে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩০টি লিটলম্যাগকে। তবে এখনও এ লিটলম্যাগ চত্বর চালু হয়নি। স্টল সাজিয়ে বসেছে হাতেগোনা তিন-চারটি লিটলম্যাগ। বাকিরা এখনও আসেনি।

এ ছাড়া শিশু চত্বরে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০ ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া দিয়ে কর্তৃপক্ষ। গত বছর শিশু চত্বরে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানকে ১০৯ ইউনিট দেওয়া হয়েছিল।


বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘জুলাই গণঅভুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তির পথে বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। আমরা একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক বইমেলা আয়োজনের চেষ্টা করেছি।’

এদিকে, মেলার দ্বিতীয় দিনে বিকাল ৪টায় দুই প্রাঙ্গণের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি) প্রাণের বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অবস্থিত বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক আয়োজন শুরু হয়েছে। এ সেমিনারে কবি হেলাল হাফিজ স্মরণে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন কুদরত-ই-হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মৃদুল মাহবুব ও সাইয়েদ জামিল। সভাপতিত্ব করছেন- সুমন রহমান। আর; সোরোওয়ার্দী উদ্যান অংশের মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।

মেলার সূচি

মেলার দ্বিতীয় দিন আজ রবিবার মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাড়ে ৮টার পরে আর কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবে না।

মেলায় কোথায় কি

টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চারটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রয়েছে।

খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে রাখা হয়েছে। নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবাও রয়েছে মেলায়। মন্দির গেইটের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে শিশু চত্বর, যাতে অবাধে চলতে-ফিরতে পারবে শিশুরা।

বাংলা একাডেমি ও মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বই বিক্রি করছে ২৫ শতাংশ কমিশনে। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন ও শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার জন্য রয়েছে একটি স্টল।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা