আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা
সাইফুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৩ পিএম
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৬ পিএম
পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শুক্রবার ছিল উপচেপড়া ভিড়। ছবি : প্রবা
রাজধানীর পূর্বাচলে চলমান মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সময় ফুরিয়ে আসছে। মেলা শেষ সপ্তাহে এসে দাঁড়িয়েছে। ছুটির দিন শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ছিল মেলার ২৪তম দিন। এদিনে পণ্য ছাড়ের ছড়াছড়ি ছিল মেলায়। সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় লেগেছিল।
মেলায় ইউরোপীয় স্টাইলে কে ওয়াই টো টোনের আস্ত বাড়ি এবং কয়েদিদের তৈরি পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। যদিও দাম ও মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল ক্রেতাদের।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে উপচে পড়া ভিড়। প্রতিটি স্টলই পণ্যে ছাড় দেওয়ার ঘোষণায় বেচাকেনা বেশ ভালো হচ্ছে। মিনিস্টার ইলেকট্রনিক প্যাভিলিয়নের ম্যানেজার হাবিবউল্লাহ বলেন, তাদের পণ্যে ৩০ শতাংশ ছাড়সহ লাখপতি এমনকি কোটিপতি অফার ঘোষণা সাড়া ফেলেছে।
এদিকে, মাত্র ১৪ লাখে ৩ মাসে ইউরোপিয়ান আস্ত বাড়ি নিয়ে এসেছে কেওয়াই টো টোন। এটি দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও বুকিং নেই তেমন। পাশাপাশি জেলখানায় কয়েদিদের তৈরি পণ্য কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা গেছে।
শীত কমে যাওয়ায় শীতের পোশাক আর ব্লেজারের দোকানে দেখা গেল ক্রেতার ভাটা। তারা ছাড় দিয়েও ক্রেতা পাচ্ছেন না। এ কারণে হতাশা। ব্লেজার বিক্রেতা নোমান বলেন, ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েও ক্রেতা পাচ্ছি না।
মেলায় কারাপণ্যের প্রদর্শনী আর বিক্রয় উভয় সমানতালে। নারায়ণগঞ্জ ডেপুটি জেলার নাসির উদ্দীন বলেন, কয়েদিরা তাদের তৈরি পণ্যের ৫০ ভাগ লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন। আমরা বাণিজ্য মেলায় বড় প্রদর্শনীর অপেক্ষায় থাকি। প্রায় সব পণ্যে ছাড় দেওয়া হলেও দাম ও মান নিয়ে ক্রেতাদের অনেক অভিযোগ।
ছুটির দিনে মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়েছে। ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। সকালে দর্শনার্থী কিছুটা কম থাকলেও বিকালে পুরো মেলা মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। ছুটির দিন হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও তাদের স্টল নানান রঙের বাতি জ্বালিয়ে সাজসজ্জায় অন্য রকম করে তোলেন। এবার মেলার সাজসজ্জায় ভিন্ন পরিবেশ নিয়ে এসেছে।
ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকে। শুক্রবারও ব্যতিক্রম ছিল না। মেলায় আসা প্রচুর মানুষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সববয়সি দর্শক-শ্রোতা উপভোগ করেন অনুষ্ঠান। এদিন মেলা শেষ সপ্তাহে প্রায় প্রতিটি স্টলেই উপচে পড়া ভিড় ছিল। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় গৃহস্থালি, ইলেকট্রনিক্স, প্রসাধনী, কাশ্মীরি স্টলগুলোয়।
এ ছাড়া শিশু পার্ক ও রেস্তোরাঁগুলোয় বসার কোনো জায়গা ছিল না। মেলার ভেতরে শিশু পার্কে যেন দাঁড়ানোর মতো কোনো জায়গা ছিল না। শিশু পার্কের ভেতরে রাইডগুলোর টিকিট কাটতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। বেশি লোকের সমাগম হওয়ায় রেস্তোরাঁগুলোয় খাবারের দাম অনেক বেশি নেওয়া হয়। এতে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বেজায় নাখোশ।
এদিকে হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনের চেষ্টা করলেও এত লোকের সমাগমে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। যানজটে আটকে থাকে শত শত যানবাহন।