প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০২ পিএম
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ার দত্তপাড়া এলাকা থেকে এক নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে দত্তপাড়ার একটি নার্সারির ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তার স্বামী নয়ন মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত নারীর নাম- শান্তনা বেগম। পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহের জেরে দু-একদিন আগে স্বামী নয়ন মিয়া মাথা ও কনুই থেকে দুই হাত কেটে স্ত্রীকে হত্যা করেন।
নিহতের বাবার বাড়ি ধামরাইয়ের বালিয়ায়। আটক নিহতের স্বামী নয়নের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মৈশামুড়া গ্রামে। নয়ন পেশায় রাজমিস্ত্রী। তারা দত্তপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সাভার মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেখানে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দত্তপাড়া এলাকায় সেতু নার্সারির ভেতরে অজ্ঞাত একটি মরদেহ পড়ে থাকার খবর জানতে পারে সাভার মডেল থানা-পুলিশ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাথা ও কনুই থেকে দুই হাত কাটা অবস্থায় একটি মরদেহ উদ্ধার করে। অদূরেই একটি পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় কাটা মাথা ও দুই হাত পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজন চেহারা দেখে এটি শান্তনার মরদেহ বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শান্তনার প্রথম স্বামীর প্রতিবেশী ছিলেন নয়ন। ছয়-সাত মাস আগে নয়ন ও শান্তনা বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে সাভারে চলে আসেন। তবে বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক দ্বন্দ্ব লেগে থাকত। নয়ন সব সময় সন্দেহ করতেন, বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে শান্তনার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। তিন দিন আগে শান্তনা মা ও বোনকে ফোন দিয়ে জানান, নয়ন তাকে নির্যাতন করছেন। এ ঘটনায় শান্তনার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নয়ন তাকে দু–তিনটি থাপ্পড় মারেন। ওই ঘটনার পর কোনো এক সময় নয়ন বাসা থেকে বের হয়ে গেলে শান্তনাও তার পেছন পেছন যান। এরপর সেতু নার্সারিতে স্ত্রীকে হত্যা করেন নয়ন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী।
সাভার মডেল থানার ওসি মো. জুয়েল মিয়া বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কোনো সময় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহত শান্তনার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এদিকে, শান্তনা বেগমকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গতকাল বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন বামপন্থি ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী। তারা দাবি করেন, শান্তনা বেগম একজন পোশাকশ্রমিক। তবে সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানিয়েছেন, শান্তনা গৃহবধূ ছিলেন।
বক্তারা বলেন, এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চললে দেশের মেহনতি মানুষ বর্তমান সরকারকে আর চাইবে না।
নারীদের নিরাপত্তা দিতে যে সরকার ব্যর্থ হয়, সেই সরকার চান না বলে মন্তব্য করেন নূজিয়া হাসিন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের আমলে একটা বিচারবহির্ভূত হত্যারও বিচার হতে দেখছি না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলতে থাকলে দেশের চাষা-শ্রমিক মেহনতি মানুষ আপনাদের (সরকার) আর চাইবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে শ্রমিকদের পক্ষে থাকার আহ্বান জানান তিনি।