প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১০:১৭ এএম
বাংলাদেশের শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বায়ুদূষণ, পানি, মাটি, খাদ্য, রঙ ও রান্নার পাত্রের মতো সামগ্রী থেকে এসব সিসা শিশুদের দেহে আসতে পারে। দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে ভারী ধাতুর দূষণ বেড়েছে, যা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশেও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
সম্প্রতি ইউনিসেফের সহযোগিতায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) উদ্যোগে ঢাকা, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় গবেষণাটি করা হয়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘সিসামুক্ত বাংলাদেশ : আমরা কীভাবে পৌঁছাব?’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়টির উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স, ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক রিড আইশ্লিম্যান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম প্রমুখ।
বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, উচ্চ তাপপ্রবাহ, সিসা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম ও পারদের মতো সাতটি ভারী ধাতুর কারণে স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষত শিশুদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সংকট মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে গবেষণাটি করা হয়।
গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, সিসাদূষণে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। এতে বিশেষ করে শিশুদের আইকিউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সিসাজনিত স্বাস্থ্যহানির কারণে সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষতি জিডিপির প্রায় ৯ শতাংশ।
সিসা ও ভারী ধাতু দূষণকে ‘নীরব সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, সরকার সকল অংশীজনের সহযোগিতায় ২০৪০ সালের মধ্যে সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছে।
জাতীয় বায়ু মান ব্যবস্থাপনা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে সরকার
এদিকে গতকাল পরিবেশ অধিদপ্তরে জাতীয় বায়ু মান ব্যবস্থাপনা কর্মপরিকল্পনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেছেন, বায়ুদূষণের উৎস নিয়ন্ত্রণ, বায়ু মান মনিটরিং ব্যবস্থা উন্নত করা এবং আইন প্রয়োগের প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে সরকার জাতীয় বায়ু মান ব্যবস্থাপনা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এটি কঠোর নিয়ম বাস্তবায়ন এবং শিল্প, পরিবহন ও নগরায়ণে পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির প্রসারে একটি পথনকশা হিসেবে কাজ করবে।
৪ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ
পলিথিনের বিরুদ্ধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রির দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সারা দেশে ১৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। এতে ৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করেছে। তা ছাড়া প্রায় ৪ হাজার ৪৪ কেজি পলিথিন জব্দ করেছে।