প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১১:৪৩ এএম
ফাইল ফটো
রাজধানীর বারিধারা ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এসএমটি সাবমেশিনগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে। এসএমটি সাবমেশিনগান দিয়ে মিনিটে ৬০০ রাউন্ড গুলি করা যায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কূটনৈতিক জোনে দায়িত্ব পালনের জন্য কিছুদিন আগে পুলিশ সদস্যদের জন্য ব্রাজিল থেকে এসএমটি সাবমেশিনগান আনা হয়েছিল। সেই অস্ত্র দিয়ে ওই এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল পুলিশ সদস্যরা। দায়িত্বরত কনস্টেবল কাওসার আলীর হাতে এসএমটি সাবমেশিনগান ছিল। সহকর্মীকে লক্ষ্য করে তিনি সেই অস্ত্র দিয়ে ৩৮ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন।
শনিবার (৮ জুন) মধ্যেরাতে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে দুজন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিলেন। তাদের মধ্যে কনস্টেবল কাওসার আলীর গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান।
এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাজ্জাদ হোসেনের শরীরে ৩ রাউন্ড গুলি লাগেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবর পেয়ে ওই রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় ডিবির সোয়াট টিমকে। পরবর্তীতে কাওসারকে নিরস্ত্র করে থানায় নেওয়া হয়। কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কিছু গুলির খোসা এবং ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
এদিকে কাওসার আলী কী কারণে মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেছেন তা জানতে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
ওই রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, যে পুলিশ সদস্য গুলি করেছেন তাকে আটক করে গুলশান থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার ব্যাপারে এখনও তারা পরিস্কার নন। তবে প্রাথমিকভাবে তিনি মনে করছেন, কোনো মানসিক চাপের কারণেই হয়তো ওই কনস্টেবল এ ধরনের আচরণ করেছেন।
শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আইজিপি। প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ কী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আইজিপি বলেন, ঘটনার কারণ জানতে আমরা কনস্টেবল কাওসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করব। আক্রমণকারীকে আমরা ইতিমধ্যে আটক করে ফেলেছি, ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানাটা খুব কঠিন হবে না।
দূতাবাস এলাকা খুবই সুরক্ষিত, এ ধরনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলার দুর্বলতা প্রকাশ পায় কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যে ঘটিয়েছে, সেও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে, সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।
কাওসারকে কীভাবে আটক করা হয়, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঘটনার পর কাওসার তার অস্ত্রটা রেখে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। তখন তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।
জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জানতে চাইলে পুলিশপ্রধান বলেন, তিনি পথচারী হিসেবে যাচ্ছিলেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন।