× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নিত্যপণ্যের চড়া দামে নাকাল স্বল্প আয়ের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২২ ১৪:৪৮ পিএম

আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২২ ১৬:০৬ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে নাকাল স্বল্প আয়ের মানুষ। মূল্যস্ফীতির সম্পর্কে এসব মানুষের খুব একটা ধারণা না থাকলেও দিনে দিনে যে পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে এটা বেশ ভালভাবেই বুঝেছেন তারা। তবে বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়লেও বাড়েনি খেটে খাওয়া মানুষের আয়। তাইতো উচ্চমূল্যের বাজারে টিকে থাকতে অনেকেই ছোট করে নিয়েছেন দৈনন্দিন খরচের তালিকাটা।

ঢাকার রিক্সাচালক হিরু মিয়া জানান, ১ বছর আগেও দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার আয়ে পরিবার নিয়ে ভালভাবেই  চলতে পারতেন। তার এখনকার অবস্থা একেবারে বদলে গেছে, ১ বছর পরে এসেও দৈনিক আয় আগের মতো থাকায় ঠিকমতো সংসার চলছে না। কারণ একটাই বাজারে চাল, ডালসহ প্রায় সকল নিত্যপণ্যের দামই বেড়ে গেছে। এই উচ্চমূল্যের বাজারে তার এখন মূল ভরসা ব্যয় সংকচন নীতি।

হারুন মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাজারে গেলে যে জিনিসেই হাত দেই ঐটারই দাম বেশি লাগে। কিন্তু করার কিছুই থাকে না, দরকারি জিনিসপত্র না নিয়াও পারি না। কিনি তবে আগে যে জায়গায় ২ কেজি দরকার হইতো এখন ঐ জায়গায় ১ কেজি নিয়া কোনমতে চলি।’

একই অবস্থা দিনমজুর হিরন খানের। সারাদিন জুতা, স্যান্ডেল সেলাই করে দৈনিক আয় করেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। যা আয় করেন তার পুরোটা ব্যয় করেও চলছে না সংসার। তিনি বলেন, ‘এখন আর পারি না, ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিছি। কি আর কমু, এক কেজি তেল কিনতে গেলেই তো ইনকামের অর্ধেকটা চলে যায়।’

রাজধানীর কলেজ গেইটে অ্যালোভেরা শরবত বিক্রেতার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘দৈনিক আয়ে বেগ পেতে হচ্ছে জীবিকা নির্বাহে। যা আয় করি তা দিয়ে সবজি কেনারই টাকা হয়না। মাছ মাংস কেনার কথা নাই বা বলি।’

ডাব বিক্রেতা আবুল বাসার বলেন, ‘আগের মতো হচ্ছে না বেচোকোনা। মানুষ মনে হয় ডাব খাওয়া কমাই দিছে, আগে দিনে ৭০ থেকে ১০০ পিচ ডাব বিক্রি করে ফেলতাম, এখন ৪০ টা ডাবও বিক্রি হয় না। এমন মন্দা বেচাকেনা দিয়ে চলতে কষ্ট হয়। জিনিসপত্রের যা দাম।’

পণ্যের দাম যে লাগামহীনভাবে বাড়ছে তা সুস্পষ্ট বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যেও। সংস্থাটির তথ্য বলছে, জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। যা গত জুন মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা তার আগের মাসে অর্থাৎ মে মাসে ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর এই হার এপ্রিল মাসে ছিল ৬ দশমিক ২৯।

বিবিএসের তথ্য মতে, জুলাই মাসে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমিক ০২ শতাংশ, অথচ শহরে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ শহরের থেকে মূল্যস্ফীতির আগুণে বেশী পুড়ছে গ্রামের মানুষ।

পণ্যেমূল্যের বাজার যে চড়া তার চিত্র ফুটে উঠেছে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবির দৈনিক বাজার হালনাগাদ তথ্যেও। টিসিবির তথ্য মতে, বছর ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর ভোজ্যতেল খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশের ওপরে। একইসঙ্গে দেশীয় ডালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।

দব্রমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি নিয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি  গোলাম রহমান বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির চাপে এখন দিনমজুরের পাশাপাশি বেশ কষ্টে আছে স্বল্প আয়ের বেতনভুক্ত কর্মচারী বা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ। একইসঙ্গে যারা সঞ্চয়পত্র বা ফিক্সড ডিপোজিটের আয়ে চলেন, তারাও বেশ কষ্টে আছেন। এসব মানুষ চিকিৎসা সেবা নেওয়া দরকার হলেও নিচ্ছেন না, সন্তানের যেসব প্রযোজনীয় চাহিদা রয়েছে তাও মেটাতে পারছেন না, এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। সমস্যা সমাধানে দরকার একচেঞ্জ রেট ম্যানেজমেন্ট ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। একচেঞ্জ রেটকে অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়াও মানুষের আয় যেন বাড়ে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে।’

প্রবা/রাই


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা