প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৫১ পিএম
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের উদ্যোগে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী বিজনেস এক্সপো। প্রবা ফটো
আগামী অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী বিজনেস এক্সপো। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ হাই কমিশন অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় ৩ ও ৪ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস কনভেনশন সেন্টারে মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সভাপতি আব্দুল খান রতন, বিকেএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রাশেদ, বিজেএমইএ’র পরিচালক সোভন ইসলাম, এফবিসিসিআই’র পরিচালক রাকিবুল আলম দিপু, বেজা এ প্রতিনিধি মো. আলী আহসান, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার এম. আল্লামা সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাই কমিশনার ক্লিন্টন পবকে, সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক জোনের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আব্দুল খান রতন বলেন, ‘বর্তমানে বছরে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। গত দুই বছরে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩ শতাংশের মতো। সম্ভাবনার দ্বার আরও উন্মোচিত করতে আমরা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ৯১ শতাংশ রপ্তানি তৈরি পোষাক খাতের। তবে কৃষি, সি ফুড, চামড়া, প্লাস্টিক পণ্য, পাটজাত পণ্য, ওষুধ, টাইলস সেবা ও আইটি খাতে ভালো করার সুযোগ আছে। বছরে অন্তত ৮ বিলিয়ন বা ৮০০ কোটি ডলারের রপ্তানি করা সম্ভব। কিন্তু এই বাজারে চায়না ও ভারতের মতো দেশ আধিপত্য বিস্তার করছে। অস্ট্রেলিয়া আমদানি নির্ভর দেশ। রপ্তানি বাড়াতে হলে তাই ভালো মানের পণ্য বাজারজাতের বিকল্প নেই।’
অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রতন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীরা সব ধরনের বিনিয়োগ নিরাপত্তা শতভাগ পেলে তারা বিনিয়োগ করবেন। এখনও পর্যন্ত তারা সে ধরনের পরিবেশ পাননি।’
আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাধীনতার সময় থেকেই। গত দশ বছরে দেশটিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের বেশি। গত এক বছরেই বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। শুধু বাণিজ্য সম্পর্কই নয়, দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্ভাবনা অনেক। গত বছর আমরা অস্ট্রেলিয়ায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মেধাসম্পদ দিয়েছি। কিন্তু এত ব্যবসা সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও আমাদের ব্যবসা তেমন বাড়ছে না, কারণ আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের গবেষণা সেলগুলো এত দুর্বল, তারা বুঝে উঠতে পারে না কি করবে। এক্ষেত্রে আমাদেরকে আরও স্মার্ট হতে হবে, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে স্মার্ট লোক লাগবে। আর এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও অস্ট্রেলিয়া আমাদের এখন যে শুল্ক সুবিধা দিয়ে আসছে, সেগুলো তারা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। শুধু আমাদের ক্ষেত্রে তারা এ সুবিধা চালিয়ে নেবে।’
ক্লিংটন পোবকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা অস্ট্রেলিয়ার বাজারে নেই। আমরা চাই বাংলাদেশ দেশ থেকে আরও গুনগত মানসম্পন্ন পণ্য আমাদের বাজারে প্রবেশ করুক। আমরাও এদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ক্ষতিয়ে দেখছি।’ এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন তিনি।
আলী আহসান বলেন, ‘সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে এখনও একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকও বিনিয়োগ করেননি। আমাদের জমি খুবই সাশ্রয়ী দামে আছে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে, এগুলো দেখিয়ে দেশটির বিনিয়োগ আকর্ষণের কার্যক্রম চলছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের যে ক্ষেত্র প্রস্তুত তা প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’
আয়োজকরা জানান, প্রদর্শনীতে শতাধিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবে। অস্ট্রেলিয়ার বাজারে তাদের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উন্মোচনে নানা খাতের পণ্য উপস্থাপন করা হবে। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে প্রদর্শনীতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান আয়োজকেরা।