× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাকরি ছাড়ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১১ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কারণে এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কর্মপরিবেশে মারাত্মক অবনতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের ঘাটতিতে হতাশায় আছেন অনেক কর্মকর্তা। তাছাড়া চেইন অব কমান্ড বিঘ্নিত হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে অন্য চাকরির অজুহাত দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন অর্ধশতাধিতক কর্মকর্তা। অথচ এক সময় বিসিএস এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো চাকরি ছেড়ে অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসতেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রের তথ্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

তথ্যমতে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রথম শ্রেণির ৫৭ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) অন্য চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন। তাদের চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

নির্ধারিত মুখপাত্র ব্যতিত গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য নিষিদ্ধ। তাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে আসার একটি বড় কারণ ছিল নিজস্বতা। স্বাধীনভাবে তারা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। এখন পরিদর্শনসহ বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা রয়েছে। আবার অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সুযোগ-সুবিধাও কিছুটা বেশি পেতেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তরা। ধীরে ধীরে তা কমিয়ে অন্য চাকরির মতোই করা হচ্ছে। 

তথ্য বলছে, পদত্যাগকারীদের মধ্যে রয়েছেন একজন উপপরিচালক ও একজন অফিসার। বাকি ৫৫ জন সহকারী পরিচালক। তাদের মধ্যে ৪৮ জনের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। এছাড়া গত ৩১ মার্চ, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল একজন করে, ১৮ এপ্রিল ২ জন এবং ২১ এপ্রিল ৪ জনের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে। চাকরি ছেড়ে যাওয়া এসব কর্মকর্তা বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া খুলনা ও বরিশাল অফিসে ৩ জন করে, সিলেট অফিসে ২ জন, মতিঝিল, চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিসে একজন করে কর্মরত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশের অন্য যে কোনো চাকরির মধ্যে তুলনামূলকভাবে ব্যাংকের বেতন বেশি। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে নানাভাবে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা ছিল। সব ক্ষেত্রে মেধাবীদের প্রাধান্য ছিল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর একাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। ২০১৯ সালের এডি ব্যাচ থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২০২২ সালের আগ পর্যন্ত তিন বছর পূর্ণ হলে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির যোগ্য হতেন কর্মকর্তারা। এখন পদ খালি থাকলেও ৫ বছর না হলে পদোন্নতি পান না। আগে যোগদানের পর ৯ মাসের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ করানো হতো। এখন এক থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। আবার এই প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। সেটিও এখন বন্ধ। আর সরকারি চাকরি পঞ্চম গ্রেডে প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা কার মেইনটেন্যান্স ভাতা দেওয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে তা দেওয়া হয় না।

তবে এসব সমস্যার মধ্যেও বিরক্তি নিয়েই অনেকে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কর্মপরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত মোবাইল ঘেটে দেখা হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে বাধ্যতামূলক বদলি করা হচ্ছে। এ ছাড়া শীর্ষ কর্মকর্তাদের ক্ষমতা খর্ব করার অভিযোগ রয়েছে। নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালকের দ্বারা ডেপুটি গভর্নরের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া কিছু জুনিয়র কর্মকর্তা কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দাপট দেখিয়ে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাজের আগ্রহ হারিয়েছেন মেধাবী ও উদিয়মান বেশ কিছু কর্মকতা। আগামীতে আরও অনেক কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রাকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা