× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের বক্তব্যের প্রতিবাদ

‘বেসিক শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক’

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:০৩ পিএম

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৩২ পিএম

বেসিক ব্যাংক ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। ছবি : সংগৃহীত

বেসিক ব্যাংক ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। ছবি : সংগৃহীত

বেসিক ব্যাংক লিমিটেডকে সরকারি ব্যাংক হিসেবে গণ্য করতে সম্প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক। নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বেসিক ব্যাংক। 

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয় বেসিক ব্যাংক শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্যের কারণে বেসিক ব্যাংকের বিষয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে এবং ব্যাংকের গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

প্রতিবাদ লিপিতে বেসিক ব্যাংক জানায়, গত ১৭ এপ্রিল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডকে সরকারি ব্যাংক হিসেবে গণ্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেমন একটি স্বনামধন্য পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে ‘বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি বলে স্বীকারই করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।’ 

সংবাদের আরেকটি অংশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি নন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, বেসিক সরকারের কোনো ব্যাংক অর্ডারের দ্বারা স্থাপিত ব্যাংক নয়। সোনালী ব্যাংকের যেমন ব্যাংক অর্ডার আছে, বেসিকের তেমন নেই। একটা আইন দ্বারা কিন্তু সোনালী, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত। বেসিক ব্যাংক কোনো আইন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নয়। সরকার যেমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ড করে, তেমনি বেসিকেরও শেয়ার হোল্ড করে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি আর বেসিকের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সরকার যেটা রেভেনিউ থেকে দেয় সেটাই কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে সরকারের কমার্শিয়াল কাজের জন্য স্টাবলিস্ট করা। বেসিকও তেমন একটা প্রতিষ্ঠান। বেসিক স্পেশালাইজড একটা ব্যাংক ছিল যেটা একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল। এটা কিন্তু ব্যাংক হিসেবে সরকারের আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের এমন বক্তব্যের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে বেসিক ব্যাংক। ব্যাংকটি বলছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিপত্রের মাধ্যমে বেসিক ব্যাংক লি.-কে শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তা ছাড়া আদালতের রায়ে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে সরকারি কর্মচারী হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। বর্তমানে দেশে কার্যরত রাষ্ট্র মালিকানাধীন অন্য ব্যাংকগুলো যে বিধিমালা ও নীতিমালার আওতায় পরিচালিত হচ্ছে শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক লিমিটেডও একই বিধিমালা ও নীতিমালার আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বিডিবিএল যে সাংগঠনিক কাঠামোর আওতায় (অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত) পরিচালিত হচ্ছে, শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে বেসিক ব্যাংক লিমিটেড ও একই সাংগঠনিক কাঠামোর আওতায় (অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত) পরিচালিত হচ্ছে। 

নিজেদের বক্তব্যের সপক্ষে সরকারি নথিপত্রও সরবরাহ করেছে বেসিক ব্যাংক। এটা দেখা যায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বার্ষিক প্রতিবেদনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের তালিকায় বেসিক ব্যাংকের নাম রয়েছে।  এ ছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের তালিকায় বেসিক ব্যাংকের নাম উল্লেখ রয়েছে।   

 বেসিক ব্যাংকের কার্যক্রম শুরুর প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, দেশের ক্ষুদ্র শিল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে ১৯৮৯ সালে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হয়, যা ১৯৯২ সালে শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে একটি রাষ্ট্র মালিকাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে সরকারি আর্থিক সেবা প্রদান করে আসছে যা ২০১৫ সালে পুরোপুরি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে রূপান্তরিত হয়। (বাংলাদেশ গেজেট, জুন ২৫, ১৯৯২), (বিআরপিডি (পি-৩)৭৪৫/২০১৫-১৭১৯, মার্চ ০৩, ২০১৫)। এসব নথিপত্র প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে ব্যাংকটি।

এ ছাড়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যাংকিং নীতি শাখা-১ হতে জারিকৃত পত্র নম্বর অম/অবি/ব্যা. নী. শাখা-১/১১(৩৯)/৯৭/অংশ-১/২১৩ তারিখ : ৩০.০৮.২০০৩ এ বেসিক ব্যাংক লিমিটেড এর প্রকৃত স্টাটাস উল্লেখ করা হয়, যেখানে বলা হয়েছে- ‌‌বেসিক ব্যাংক লিমিটেড এর ১০০ ভাগ মালিকানা সরকারের এবং ব্যাংকটি কোম্পানি আইনে নিবন্ধনকৃত। সুতরাং বেসিক ব্যাংক লি. সাধারণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে প্রশাসনিক, আর্থিক ও ব্যবসায়িক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, সেটাই যুক্তিসংগত।   

উল্লেখ্য, অন্যান্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ন্যায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে বেসিক ব্যাংকেও বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মাধ্যমে নিয়মিত অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বেসিক ব্যাংক একটি সরকারি খাতের ব্যাংক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর বাংলাদেশ সরকারকে বিপুল অঙ্কের মুনাফা প্রদান করেছে, যা অন্যান্য ব্যাংকের কাছে ছিল উদাহরণ। শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকে অন্যান্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অনুরূপ চাকরি বিধিমালা অনুসরণ করা হয়। জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের গ্রেড নির্ধারণ এবং বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের পেনশন সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া, বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ব্যাংকের অনুরূপ বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

এ ছাড়া, বেসিক ব্যাংকে ১২-তম থেকে ২০-তম গ্রেডের কর্মচারীগণের স্থায়ী চাকরি বিদ্যমান রয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেসিক ব্যাংকে সরকারি শ্রম অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত ও রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।   

দেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের ন্যায় শতভাগ রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ইতোমধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অনেকেই সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালার অধীনে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে একজনকে সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে পদায়ন পরবর্তীকালে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, রূপালী ব্যাংকে একজন ডিএমডি হিসেবে, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে একজনকে ডিএমডি ও একজনকে জিএম হিসেবে, জনতা ব্যাংকে একজনকে এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংককে দুজনকে জিএম হিসেবে পদায়ন করা হয়।  এসব কর্মকর্তারা অত্যন্ত সুনামের সাথে পদায়িত ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করছেন বলে দাবি করেছে বেসিক ব্যাংক । একইভাবে রূপালী ব্যাংকের একজন ডিএমডি, সোনালী ব্যাংকের দুজন জিএম এবং অগ্রণী ব্যাংকের দুজন জিএমকে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকে পদায়ন করা হয়েছে।

সরকারি ব্যাংকের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বেসিক ব্যাংক জানায়,  ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি উপরোক্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দেশের অন্যান্য রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ন্যায় শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডও একই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।’

বেসিক ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ প্রধান মোহাম্মদ ইশতিয়াক আজাদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা