ডিজিটাল পেমেন্ট
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১২:২৬ পিএম
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩৫ পিএম
নগদ টাকার লেনদেন কমাতে ক্যাশলেস বাংলাদেশ প্রচারণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি জনপ্রিয় করতে বাংলা কিউআর চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে দিন দিন ডিজিটাল লেনদেনে মানুষ অভ্যস্ত হচ্ছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অনলাইন পেমেন্টসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে দৈনিক লেনদেন হচ্ছে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) তিন দিনে এটিএম, পিওএস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও বাংলা কিউআর ব্যবহার করে মানুষ ২ হাজার ৭১৮ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হচ্ছে ৯০৬ কোটি টাকা।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগদ টাকা বহনে বাড়তি ঝামেলা থাকে। আছে জাল নোটের ঝক্কি। আবার ছিনতাইয়ের ভয় তো আছেই। আর কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা হারিয়ে যাওয়া বা ছিনতাইয়ের ভয় নেই। বিক্রেতাকে টাকা গুনে দেওয়ার ঝামেলাও নেই। লেনদেনে সময়ও লাগে কম। তাই দিন দিন ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। এ ছাড়া ঈদকেন্দ্রিক বিভিন্ন ছাড় বা ক্যাশব্যাক অফার থাকে। ফলে ঈদকেন্দ্রিক ডিজিটাল লেনদেনের ব্যাপক সাড়া দেখা যায়।
সাধারণ গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিজিটাল মাধ্যমে পেমেন্ট দিন দিন সহজ হচ্ছে। ঈদকেন্দ্রিক বেশি কেনাকাটা হয়। এর জন্য অনেক ক্যাশ টাকা বহন করতে হয়। ক্যাশ টাকা বহন করা এ সময় একটু রিস্কি। তাই ঈদের সময় ডিজিটাল পেমেন্টকে বেছে নিচ্ছে মানুষ। এ ছাড়া এ সময় কেনাকাটায় বিভিন্ন অফারও পাওয়া যায়। রাজধানীর ফ্যাশন হাউসগুলোতে ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ রয়েছে অনেক দিন ধরেই; ঈদের বাজারে এসে ক্রেতাদের একটি বড় অংশ নগদ টাকার বদলে দাম চুকাচ্ছে কার্ডে বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে।
ফ্যাশন হাউসগুলো বলছে, তাদের আউটলেটগুলোতে ঈদের সময় মোট লেনদেনের প্রায় ৫০ শতাংশ ডিজিটাল মাধ্যমে হচ্ছে। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ছাড় বা ক্যাশব্যাক অফার দিচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ফ্যাশন হাউসগুলো।
তথ্য বলছে, ২৮ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত এটিএম কার্ডের মাধ্যমে ৭ লাখ ৫২ হাজার ৫৭২টি লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৬২ কোটি ১২ লাখ ১১ হাজার ১২৪ টাকা। একই সময়ে পিওএস মেশিনে ১ লাখ ৭১ হাজার ১৩৪টি লেনদেন হয়। এসব লেনদেনে অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৫ কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯ টাকা। এ সময় ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের আওতায় ৪ লাখ ২৭১টি লেনদেন হয়। লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৭৭ কোটি ৬৮ লাখ ৯২ হাজার ২০১ টাকা। এ ছাড়া বাংলা কিউআরের ৩৩ হাজার ৫১২টি লেনদেন হয়েছে। এতে অর্থের পরিমাণ ছিল ১৩ কোটি ৬৭ লাখ ২৭ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।
এদিকে ব্যক্তিপর্যায়ে ডিজিটাল পরিশোধের সবচেয়ে বড় মাধ্যম এখন এমএফএস। গত জানুয়ারি মাসে এ মাধ্যমে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বর্তমানে ২১ কোটি ৯১ লাখের বেশি এমএফএস হিসাব রয়েছে। ডিজিটাল পরিশোধের আরেক অনুষঙ্গ ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক রয়েছে ৮৪ লাখের মতো। ইন্টারনেট ব্যাংকিং থেকে জানুয়ারি মাসে ৯৬ হাজার ২০৫ কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে। সারা দেশে এখন ১৩ হাজারের মতো এটিএম বুথ, এক লাখের বেশি পয়েন্ট অব সেলস, ২০০-এর মতো ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন এবং ৪ হাজারের বেশি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন রয়েছে। জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো সব মিলিয়ে ৪ কোটি ২৯ লাখের বেশি কার্ড ইস্যু করেছে। কার্ড ব্যবহার করে গত জানুয়ারিতে প্রায় ৪৬ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।