× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তরমুজ বেচে কৃষক খুশি দামে বেজার ক্রেতা

বরগুনা সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১১:৪২ এএম

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪ ২১:৩৪ পিএম

ক্ষেত থেকেই তরমুজ কিনে ট্রাকে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার। সম্প্রতি বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলীর চরপাড়া এলাকা। প্রবা ফটো

ক্ষেত থেকেই তরমুজ কিনে ট্রাকে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার। সম্প্রতি বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলীর চরপাড়া এলাকা। প্রবা ফটো

উপকূলের মাটি ও আবহাওয়া তরমুজ চাষের উপযোগী। স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার আশায় কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকছেন তরমুজ চাষে। একইসঙ্গে তরুণ উদ্যোক্তারাও আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন তরমুজ চাষে। তবে গেল বছর অতি বৃষ্টি, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তরমুজ চাষে লোকসান গুনতে হয়েছিল বরগুনার চাষিদের। তাই এ বছর আবাদ নেমে এসেছে অর্ধেকে। তবে এবার ফলন ভালো হয়েছে। আর দামও বেড়েছে ২ থেকে ৩ গুণ। এতে কৃষক লাভবান হলেও তরমুজ ছোঁয়ার যেন সাধ্য নেই ক্রেতা সাধারণের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর বরগুনায় তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮৩৮ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১৭৭ হেক্টর। ফলন হতে পারে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টন। আর গত বছর আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম হয়েছে ৪৯ ভাগ। 

তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের গাবতলীর চরপাড়া গ্রামে ১২০ একর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করেছেন কৃষক। এরই মধ্যে উৎপাদিত তরমুজ চলে গেছে রাজশাহী, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলায়। স্থানীয় চাষি আবদুল মজিদ বলেন, ‘গত বছর তরমুজ চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। এ বছর আগাম চাষ করে লাভবান হয়েছি। গত বছর এক একর জমির তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়। এ বছর তা বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায়। দাম বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ।

সদর উপজেলার মানিকখালী গ্রামের কৃষক মো. নজরুল বলেন, ‘তরমুজ আবাদ করে গত বছর লোকসান গুনলেও এবার লাভের মুখ দেখেছি। ৪ একর জমি চাষাবাদে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছি সাড়ে ১০ লাখ টাকা।’

‘কৃষি অফিস থেকে মোগো কোনো সহযোগিতা করে না, প্রশিক্ষণ দেয় না। তবে জমিতে এবার ফলন ভালো অইছে। তয় মোগো জমি নগদ টাকায় চাষ করতে দিছি। যদি মোরা তরমুজ চাষে অভিজ্ঞ থাকতাম, তাইলে মোগো টাহা মোগো কাছেই থাকতে।’ মনে ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন গাবতলী গ্রামের চরপাড়া এলাকার জমির মালিক আলী আহম্মেদ খান।

লোকসানের ভয়ে এ বছর তরমুজ আবাদ করেননি পৌর শহরের আমতলা সড়কের আবুল কালাম আজাদ। গত বছর তিনি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় করে ১৭ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। অতিবৃষ্টির কারণে সব তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গেছে। বিক্রি করে মাত্র এক লাখ টাকা পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এবার লোকসানের ভয়ে তরমুজ চাষ করিনি।’ 

বাজারে তরমুজের দামে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ক্রেতারা। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড় সাইজের একটি তরমুজ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তরমুজ কেনা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। মো. আল আমীন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘রোজার সময় তরমুজের বেশ চাহিদা। তবে এবার তরমুজের যে দাম তাতে কিনে খাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দাম কমলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে খাব।’

জেলা শহরের তরমুজ বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, ‘প্রতি পিস ৩৫০ টাকা করে একশ তরমুজ কিনেছি। এর মধ্যে ৩০টি তরমুজ ৫০০ করে আর বাকিগুলো কেনা দামে বিক্রি করতে হবে। এদিকে বড় তরমুজ ৫০০ টাকায় বিক্রি করলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে। এভাবে চললে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।’ 

শহরের আড়তদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ বছর বাজারে তরমুজ কম। আর যা আছে, তাও চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। কৃষকদের কাছ থেকেও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। কাজেই কম দামে তরমুজ বিক্রি করার সুযোগ নেই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, ‘রমজানের কারণে এ বছর তরমুজের ভালো দাম পেয়েছেন কৃষক। কিছুদিন পর হয়তো কমতে পারে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তরমুজ চাষে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে কৃষকদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’

জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তরমুজের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা