প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ২১:১৩ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ২২:০৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
সিঙ্গার ও বেকো ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনের জন্য কনসেপ্ট স্টোর চালু, রাজধানীতে কর্পোরেট হেডকোয়ার্টার স্থানান্তর ও একটি অত্যাধুনিক কারখানা নির্মাণের মধ্য দিয়ে দেশে নতুন যাত্রা শুরু করছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। তুরস্কের কচ গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ ও আৰ্চেলিকের সহযোগিতায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড রূপকল্প 'ট্রান্সফর্ম ফর গ্রোথ' (উন্নতির লক্ষ্যে রূপান্তর) উন্মোচন করে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেল এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে জানানো হয়, সিঙ্গার নতুন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করবে, যার মধ্যে গুলশান ১-এ কনজ্যুমার ডিউরেবলস ইন্ডাস্ট্রিতে অনন্য একটি কনসেপ্ট স্টোর চালু। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পুরস্কার বিজয়ী আৰ্চেনিক কনসেপ্ট স্টোরের ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এটি করা হয়েছে। স্টোরটিতে সিঙ্গার ও বেকো ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনের জন্য বিশেষ এক্সপেরিয়েন্স জোন রয়েছে। স্টোরটির পণ্য ক্রয়ের আগে সেটি যাচাই-বাছাই করার সুযোগ। এই স্টোরে প্রথমবারের মতো আর্চেলিকের গ্লোবাল ব্র্যান্ড বেকোর ‘শপ-ইন-শপ’ রাখা হয়েছে।
সিঙ্গার বাংলাদেশ কর্পোরেট হেডকোয়ার্টার ঢাকার গুলশান ২-এ স্থানান্তরিত করছে। তুর্কি স্থপতিদের দ্বারা ডিজাইন করা এই অত্যাধুনিক অফিসটি কর্মীদের জন্য রয়েছে বিশ্বমানের কর্মক্ষেত্র ও সুযোগ-সুবিধা।
সম্মেলনে সিঙ্গার বাংলাদেশের নতুন কারখানা উৎপাদন শুরু করার জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আৰ্চেলিকের ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত নতুন কারখানাটি ৪ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং স্থানীয় উৎপাদনে কোম্পানির প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
সিঙ্গার বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য দেশেই উৎপাদন করা। আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করা এবং একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরবরাহকারী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় টেকসই হওয়ার জন্য সিঙ্গার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টটি লিড গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও এম এইচ এম ফাইরোজ, আর্চেলিকের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল মার্কেটিং, বিজনেস ট্রান্সফর্মেশন অ্যান্ড গ্রোথ পরিচালক হান্দান আব্দুররহমানোউলু প্রমুখ।
সিঙ্গারের এই পরিবর্তন বিষয়ে আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার বলেন, সিঙ্গার বাংলাদেশের ১১৮ বছরের ইতিহাস। সিঙ্গারই দেশে কনজ্যুমার ডিউরেবলস ইন্ডাস্ট্রিতে অগ্রগামী। সিঙ্গারকে দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়ে ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে পরিবর্তন করছি। সিঙ্গার বাংলাদেশের যাত্রায় ‘উন্নতির লক্ষ্যে রূপান্তর’ চালু করা একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। নতুন কনসেপ্ট স্টোর, নতুন কর্পোরেট অফিস এবং আমাদের উৎপাদন কারখানায় বিনিয়োগ এই পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ। ভবিষ্যতেও উদ্ভাবনী শক্তি, গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক দক্ষতা এবং বিশ্বমানের পণ্য বাজারে নিয়ে আসছি যাতে কনজ্যুমার ডিউরেবলস ইন্ডাস্টিতে এবং বাংলাদেশি জনগণের জীবন মানে অবদান রাখা যায়। সেইসঙ্গে নতুন সদর দপ্তর আমাদের কর্মীদের আৰ্চেলিকের আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রের মান এবং সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সহায়তা করবে। আমাদের কনসেপ্ট স্টোরটি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পুরস্কার বিজয়ী আর্চেলিক স্টোর ডিজাইন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছে।’
আমরা সিঙ্গার বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো এবং বাংলাদেশকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার একটি কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দীর্ঘ মেয়াদে এই অঞ্চলের দেশগুলোতে বাংলাদেশের কারখানা থেকে পণ্য রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছি। আমরা সিঙ্গার বাংলাদেশের টেকনোলোজি, স্টোর এবং কমিউনিকেশনে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখব।
ফাইরুজ বলেন, ‘অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রাহকদের জীবনযাত্রার মানও পরিবর্তন হচ্ছে। তাই সিঙ্গার বাংলাদেশ গ্রাহকদের কাছে সবচেয়ে সমসাময়িক ও বিশ্বমানের সেবা নিয়ে আসার জন্য তার কার্যক্রম রূপান্তর করছে। আমাদের ওপর ভোক্তাদের দৃঢ় ভরসা আছে। তাই সিঙ্গার অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কনজ্যুমার ডিউরেবল পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিতে পরিণত হবে বলে আশা করি।’