প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ২০:৫৩ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ২২:০৮ পিএম
এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে অ্যাগ্রিকালচার, অ্যাগ্রো প্রসেসিং অ্যান্ড অ্যাগ্রো-বেজড ইন্ডাস্ট্রিজ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক। প্রবা ফটো
কৃষিতে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনশীলতা অর্জনে কৃষক পর্যায়ে উন্নত জাতের বীজ সহজলভ্যকরণ, উচ্চফলনশীল ও জলবায়ুসহিষ্ণু জাতের খাদ্য উদ্ভাবন প্রক্রিয়া জোরদার ও গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি খাতের ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় হ্রাসে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন, উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর জোর দিয়েছেন তারা। বুধবার (২০ মার্চ) এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে অ্যাগ্রিকালচার, অ্যাগ্রো প্রসেসিং অ্যান্ড অ্যাগ্রো-বেজড ইন্ডাস্ট্রিজ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন আলোচকরা। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘কৃষির বিকাশে সবচেয়ে জরুরি হলো গুণগত ও উন্নত জাতের বীজ। বীজের মান উন্নয়নে আমাদের গবেষণায় জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহারে বেশি বেশি মনোযোগ দিতে হবে। কৃষিতে প্রযুক্তি যত উন্নত হবে উৎপাদনশীলতা তত বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণের বিভিন্ন ধাপে কৃষিপণ্যের অপচয় রোধে সারা দেশে কুল-চেইন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের জন্য পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।’ এ ছাড়া কৃষকদের ছোট করে না দেখতে সবার মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়।
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে কৃষিকেন্দ্রিক স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। এ সময় ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। গতানুগতিক ফসলের পাশাপাশি হর্টিকালচার, ফিশারিজ, লাইভস্টক, পোল্ট্রিসহ ডাল ও তেল বীজ জাতীয় শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নজর বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেশে একটি ক্রপ ক্যালেন্ডার তৈরি করা জরুরি বলে জানান এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। কৃষকদের সমস্যাসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানে কৃষক সমিতি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি সম্প্রসারণে কমপ্লায়েন্স ও গ্যাপ (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস) বাস্তবায়নের সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান শাইখ সিরাজ।
কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের পথ খুঁজে পেতে কমিটির সদস্যদের কাছে লিখিত আকারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা ও সুপারিশ আহ্বান করেন কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মোহাম্মদ ইসহাকুল হোসেন সুইট।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষিপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন ও মজুদের সঠিক ও সমন্বিত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলার পরামর্শ জানান কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। সেই সঙ্গে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কৃষিপণ্যের স্টক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তারা। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালকবৃন্দ, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, কৃষিবিদ ও কৃষি খাতের উদ্যোক্তারা।