× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক্সিমে পদ্মা ব্যাংকের একীভূতকরণ

বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া জানা যাবে আজ

রেদওয়ানুল হক

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ০০:৩৮ এএম

আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪২ পিএম

বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া জানা যাবে আজ

দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে এক্সিম ব্যাংক। রবিবার (১৭ মার্চ) এ সংক্রান্ত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেছে ব্যাংকটি। এর ফলে একীভূত হওয়ার খবর পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। রবিবার শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব বোঝা যায়নি। আজ সোমবার লেনদেন শুরু হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাবেন তারা। অবশ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা কী প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা কেবল শেয়ার মূল্যের হ্রাসবৃদ্ধি দেখে বলা যাবে না। অপেক্ষা করতে হবে এজিএম পর্যন্ত। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, সাধারণভাবে বিষয়টি ভালোভাবে নেওয়ার যৌক্তিক কারণ নেই।

‘প্রতিক্রিয়া জানতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে’

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মনোভাব জানতে এজিএম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেখানে তারা প্রশ্ন তুলতে পারেন- কেন পদ্মা ব্যাংকের মতো একটি দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংককে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে অনেকগুলো প্রশ্নেই অজানা। যেমন- পদ্মা ব্যাংকের মূলধন থেকে দায় (দেনা) বাদ দিলে ব্যাংকটির সম্পদ পজিটিভ নাকি নেগেটিভ আছে? খেলাপি ঋণের কী হবে? বাংলাদেশে এখনও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নেই। যদি এমন কোনো কোম্পানি দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদ কিনে নেয়, তাহলে কত দামে কিনবে, বাকি অর্থের দায়ই-বা কে বহন করবে? কবে নাগাদ এই বেচাকেনা হবে?’ তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে, পুরো বিষয়টিই এখনও অস্পষ্ট। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় তা বোঝার জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।’

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে আজ

গতকাল রবিবার এক্সিম ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্যসংবলিত নোটিসে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৮৭তম বৈঠকে পদ্মা ব্যাংককে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনসহ সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতার পর এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ব্যাংক দুটি একীভূত করার লক্ষ্যে সোমবার (আজ) বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছায় একীভূত না হলে আগামী বছর থেকে সেগুলোকে চাপ দিয়ে একীভূত করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে শিগগির নীতিমালা করা হবে। সেই নীতিমালার আওতায় একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। তবে নীতিমালা হওয়ার আগেই সরকারের শীর্ষ মহলের নির্দেশে পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এতে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।

দুর্দশাগ্রস্ত একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চাইলে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘সব ব্যাংকই রাষ্ট্রের সম্পদ। এখন রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই তাকে রক্ষা করতে হবে। রক্ষার দায়িত্বটি পালন করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটিই বড় কথা।’ 

‘ইতিবাচকভাবে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না’

পদ্মা ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এক্সিম ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর দেখছেন না পুঁজিবাজারের আরেক বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংক যেহেতু লিস্টেড কোম্পানি নয়, তাই ব্যাংকটির সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের ধারণা স্পষ্ট নয়। পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যতটুকু ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ইতিবাচক কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিনিয়োগকারীদের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া এর আগে যেসব প্রতিষ্ঠান একীভূত হয়েছে, তাতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগকারীরা লাভবান হয়নি। কারণ শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গড় মূল্য কমে গেছে। এক্ষেত্রে এক্সিম ব্যাংক যদি কোনো ভালো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হতো, তাহলে বিনিয়োগকারীদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যেহেতু পদ্মা ব্যাংক এক্সিমের চেয়ে দুর্বল প্রতিষ্ঠান, তাই সাধারণ অর্থে এটা বলা যাচ্ছে না যে, এক্সিম ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো কোনো খবর আছে। তবে অন্তর্নিহিত কী কারণ আছে এবং বিনিয়োগকারীরা তা কীভাবে নেবেÑ সেটা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে।’ 

দুই ব্যাংকের আর্থিক চিত্র

বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকের আমানত আছে ৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকার। অন্যদিকে ব্যবসার পরিধি বা বিতরণকৃত ঋণের আকার গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এর ৩ হাজার ৬৭২ কোটি অর্থাৎ ৬৪ শতাংশই খেলাপি। বিপরীতে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকার পোর্টফলিও থাকা এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছিÑ যা শতকরা হারে চার শতাংশের সামান্য বেশি।

এক্সিম ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। আর পদ্মা ব্যাংকের ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ বা ৭২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী ও আইসিবির। এক্সিম ও পদ্মা ব্যাংকের আমানত ৪২ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা ও ৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। উভয় ব্যাংকের ঋণ যথাক্রমে ৪৫ হাজার ৯৮৮ কোটি ও ৫ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। খেলাপির পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৫ ও ৩ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। খেলাপির হার ৪.০৪ ও ৬৩.৭৩ শতাংশ। আদায় অযোগ্য ঋণ যথাক্রমে ১ হাজার ৫৪৫ এবং ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। 

২০২২ সালে এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৩৭২ কোটি টাকা। তবে পদ্মা ব্যাংকের মুনাফার কোনো প্রকাশিত তথ্য নেই। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা