× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুর্ঘটনার পরেই শুধু টনক নড়ে, সারা বছর ঘুম!

ফয়সাল খান

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১২:০৬ পিএম

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১২:২২ পিএম

দুর্ঘটনার পরেই শুধু টনক নড়ে, সারা বছর ঘুম!

দুর্ঘটনা ঘটলেই নানান অনিয়মের অভিযোগ এনে অভিযান চালাতে তৎপর হয়ে ওঠে সরকারি সংস্থাগুলো। কিন্তু যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ অর্থের বিনিময়ে নিয়ম লঙ্ঘন করে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ করে দেন তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। বেইলি রোডে সাম্প্রতিক আগুন এবং প্রাণহানির পর রাজধানীতে শুরু হওয়া অভিযানে কোনো ধরনের বাছবিচার ছাড়াই কর্মীদের ধরে নেওয়া হচ্ছে এবং অনেক রেস্টুরেন্ট ভাঙা হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা অনেকে নিজে থেকেই রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছেন। 

তারা বলছেন, কোনো অনিয়ম হলে সেটা তো আর এক দিন দুই দিনে হয়নি। একটি রেস্টুরেন্ট দিতে ১২ থেকে ১৩টি সনদ লাগে। এর একটিও ঘুষ ছাড়া পাওয়া যায় না। একদিকে টাকা নিচ্ছেন, আবার কদিন পর এসে ভাঙছেন। এমন অবস্থা হলে ব্যবসা চলবে কীভাবে।

বেইলি রোডে আগুনের পর হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান শুরু করে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। এ অভিযানে রেস্টুরেন্ট ভাঙচুর, কর্মীদের গ্রেপ্তার ও সিলগালার ঘটনাকে ‘তাণ্ডব’ বলে আখ্যা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ। তা ছাড়া এমন অভিযানকে লোকদেখানো ও দায়সারা মনে করছেন অনেকেই। তাদের মতে, এর আগেও দুর্ঘটনার পর এমন অভিযান হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে আবার থেমেও গেছে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মানুষ ঝুঁকির মধ্যেই থেকে গেছে। 

গত রবিবার রাজধানীর খিলক্ষেত ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় অনুমোদন না থাকায় ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের রুফটপ রেস্টুরেন্ট গুঁড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া ওই এলাকার আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ প্রসঙ্গে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রিজেন্সির ছাদের রেস্টুরেন্টটি অনুমোদন ছাড়াই চলছিল। তাদের একটি রান্নাঘর ছিল। পার্টি এবং গ্রাহকদের বসার ব্যবস্থা ছিল। তবে এগুলোর কোনোটিরই অনুমোদন ছিল না। তাই তাদের রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযান চলাকালীন হোয়াইট হল, খাজানা এবং মেইনল্যান্ড রেস্টুরেন্টকেও জরিমানা করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্র রাজউক কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।’

এর এক দিন পর রাজধানীর ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের রুফটপে অবস্থিত দুটি রেস্তোরাঁর স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে রাজউক। সংস্থাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারোয়ারের নেতৃত্বে ভবনটির ছাদে অভিযানে ভেঙে দেওয়া দুটি স্থাপনার মধ্যে একটি ছিল রেট্রো লাইভ কিচেন। একই ভবনে অবস্থিত ‘দ্য প্যান প্যাসিফিক লাউঞ্জ’কেও জরিমানা করা হয়।

ভবনের সার্ভিস ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রাজউক কর্মকর্তারা রবিবার পুরো বিল্ডিং ঘুরে দেখেছেন। এরপর সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছেন। থানার পক্ষ থেকে আজ চিঠি দেওয়া হয়েছে, সব রেস্তোরাঁকে লাইসেন্স নিয়ে তিন দিনের মধ্যে থানায় যেতে। এর মধ্যে রাজউক টিম নিয়ে এসে ভাঙা শুরু করেছে। কোনো মালামাল সরানোরও সুযোগ দেওয়া হয়নি।’

রাজউক কর্মকর্তারা জানান, গাউসিয়া টুইন পিক ভবনের বাণিজ্যিক ভবন এফ-১ হিসেবে অনুমোদন ছিল। তবে রেস্তোরাঁ করতে হলে বাণিজ্যিক ক্যাটাগরি এফ-২ অনুমোদন থাকতে হবে। সেটি এই বিল্ডিংয়ের নেই। তা ছাড়া নকশা অনুযায়ী ছাদের অংশে কোনো স্থাপনা থাকার কথা ছিল না। সেটিও মানা হয়নি।

এমনিভাবে রাজধানীর বেইলি রোড, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, বানানী, নিউমার্কেট ও এলাকার অনেক রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হয়েছে। সরকারি সংস্থাগুলোর মোবাইল কোর্টের এসব অভিযানে ভবনের অনুমোদন, ব্যবহারসহ নানা বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। এখন পর্যন্ত সহস্রাধিক রেস্টুরেন্টে অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। অভিযানের মধ্যে অনেকেই রেস্টুরেন্ট সাময়িক বন্ধ রেখেছেন। 

ঘুষ ছাড়া সনদ মেলে না

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তরা, বানানী ও খিলক্ষেত এলাকার ছয়টি রেস্টুরেন্টের মালিক জানান, প্রতি সনদেই টাকা লাগে। এরপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই ঢালাও অভিযানের নামে আমাদের ক্ষতি করা হচ্ছে। বনানী এলাকার এক রেস্টুরেন্ট মালিক জানান, আমার জানামতে রেস্টুরেন্টের জন্য ১৩টি সংস্থার অনুমোদন লাগে। এর মধ্যে আমি দুই বছর চেষ্টা করে ৭টি সনদ নিয়েছি। বাকিগুলোর শর্ত পূরণ করে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। তিনি বলেন, এখন সিটি করপোরেশন বা রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত এলেই আমার রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করতে পারবে। জরিমানা করার আগে এই প্রক্রিয়াগুলো সহজ ও স্বচ্ছ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। 

উত্তরা এলাকার এক রেস্টুরেন্ট মালিক জানান, রাজউকের কোনো গাইডলাইনে উল্লেখ নেই যে কোন ধরনের ভবনে রেস্টুরেন্ট করা যাবে। তাই বাণিজ্যিক ভবনেই রেস্টুরেন্ট করা হয়। বেইলি রোডে আগুন লাগার আগে এ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। 

একই এলাকার আরেকটি রেস্টুরেন্টের মালিক বলেন, সনদের কোনো শেষ নাই। ট্রেড লাইসেন্সসহ ৫টা সনদ নিয়েছি। এখন শুনি আরও লাগবে। 

তিনি বলেন, কাগজপত্র কোনো বিষয় না, দালাল না ধরলে সনদ মেলে না। প্রতিটি সনদ সংগ্রহে ৩০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়েছে বলে জানান তিনি। রাজউক, সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেতে কয়েক ধাপে টাকা দিতে হয়েছে বলেও দাবি তার। 

রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ইমরান হাসান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সারা দেশে সাড়ে চার লাখ রেস্টুরেন্টের মধ্যে মাত্র ৭০ হাজার রেস্টুরেন্টের মালিক সমিতির অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু নিরাপদ রেস্তোরাঁ বাণিজ্য গড়ে তুলতে কোনো সরকারি সংস্থা সহায়তা করছে না। আমরা বিভিন্ন সংস্থার কাছে যেতে চাই না। হয় সিটি করপোরেশন বা জেলা পরিষদ বা অন্য কোনো সংস্থা সেখানে দেখানো হয়, আমাদের সদস্যরা এক স্টপে অনুমোদন নেবেন। তবে নিয়মের তোয়াক্কা না করে যারা রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি টাস্কফোর্স গঠনের করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘যেভাবে গণহারে রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা হচ্ছে, তাতে আমাদের ব্যবসায়ীরা বাঁচবে কী করে?’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীতে ভবন নির্মাণ, তদারকি ও তাতে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রয়েছে। তারা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে নগরে দুর্যোগের ঝুঁকি এমনিতেই কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাদের দায়িত্বে অবহেলা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে বারবার দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ নগরবাসীর। যেকোনো দুর্ঘটনার পর ওই ধরনের ভবন বা প্রতিষ্ঠানে হুট করেই অভিযান শুরু করে সংস্থাগুলো। যাতে অনেক ‘নিরপরাধ’ মানুষও হয়রানির শিকার হচ্ছে। 

২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীতে রাসায়নিক গোডাউনের অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। এর ৯ বছরের মাথায় (২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা যায়। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনে ২৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ সিদ্দিক বাজারে ভবন ধসে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই সব ঘটনার পর কিছু দিন চললেও এখন আর কোনো অভিযান নেই। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর বরাবরের মতোই রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই ভবনে থাকা খাবারের দোকান থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়েছে ধারণা করে ১ মার্চ থেকে ঢাকার সব এলাকার রেস্টুরেন্টে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ভবন বা রেস্টুরেন্টে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার দায় অবশ্যই ব্যবসায়ীদের। যারা এই সুযোগ করে দিয়েছে, অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর সঙ্গে জড়িত কি না, তা চিহ্নিত করতে হবে। মালিক পক্ষ বা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারাই জড়িত থাকুক চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। 

তিনি বলেন, প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের সামনে না আনলে এ ধরনের অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে, কিন্তু গোড়ায় হাত না দেওয়া না গেলে সমস্যার সমাধান হবে না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করার কথা, দুর্ঘটনার পর বিচ্ছিন্ন অভিযান কাম্য নয়। তার মতে, সমস্যা সমাধানে সমন্বিত অভিযান জরুরি। অভিযানের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দূর করতে না পারলে মানুষের আস্থা হারাবে। 

তিনি বলেন, অভিযানে যেন নিরপরাধ কোনো মানুষ হয়রানির শিকার না হয়, সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কারও বৈধ সম্পদের ক্ষতি করা যাবে না। 

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, একধরনের ঘুষ বাণিজ্যের বিস্তৃতির জন্য অভিযানগুলো করা হয়। অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত অভিপ্রায় থেকে এ ধরনের অভিযানে নামে। এতে ফায়দা লোটা ছাড়া তেমন কিছু হয় না।

রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে দিয়েছি, যাতে রেস্টুরেন্ট না ভাঙে। অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী সিলগালা করে দেবে। অগ্নিকাণ্ডের পর বেইলি রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় রেস্টুরেন্ট সিলগালা করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্র দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা বলে দিয়েছি অনুমোদনবিহীন রেস্টুরেন্টে অভিযান চলবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, কারও সম্পদ যেন নষ্ট না হয়। অনিয়মের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। এফ আর টাওয়ারের ঘটনাসহ অতীতে এ ধরনের নজির রয়েছে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আমাদের এই অভিযান সারা বছর চলে। আমরা সব সময় সোচ্চার থাকি। বিশেষ করে যেসব ভবন ঝুঁকির মধ্যে আছে সেগুলো নিয়ে আমরা তৎপর থাকি। নগরবাসীকে নিরাপদ রাখতেই আমাদের এই অভিযান।



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা