প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২০:৪৯ পিএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ২১:৪৪ পিএম
সিআইডির স্মার্ট ইনভেস্টিগেশন মডেল ফর দ্য সিআইডি অফিসার্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। প্রবা ফটো
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মো. আলী মিয়া (অতিরিক্ত আইজিপি) বলেছেন, মাদক ও মানি লন্ডারিং মামলায় শুধু বাহক বা ব্যবহারকারী নয়, গডফাদারদের খোঁজা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তাদের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সোমবার (১১ মার্চ) সংস্থাটির সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘স্মার্ট ইনভেস্টিগেশন মডেল ফর দ্য সিআইডি অফিসার্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিআইডির প্রধান বলেন, ‘ইতঃপূর্বে মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত মামালায় শুধু কেরিয়ার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সিআইডি মাদক ব্যবসার গডফাদার বা মূল হোতাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় মামলা করে তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পত্তি ক্রোক করছে এবং তাদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করছে। এতে করে অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে এবং এ অবৈধপথ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে।’
কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সিআইডি অনলাইন গ্যাম্বলিং নিয়ে কাজ করছে, এটিতে আরও জোর দিতে হবে। কারণ এতে আমাদের যুবসমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা পরিবারের কাছ থেকে জোর করে টাকা এনে অনলাইন প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এতে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছে।’ এ ছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়েও সিআইডিকে জোরালোভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন আবদুর রউফ তালুকদার।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আইনে কিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ করতে হলে কোনোভাবেই ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং অ্যালাউ করা যাবে না। এই দুটি বিষয়ে সিআইডিকে বিশেষ জোর দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘‘আইনে মানি লন্ডারিংয়ের ২৯টি ধরন চিহ্নিত করা আছে; এর মধ্যে ১৮টি নিয়ে সিআইডি সরাসরি কাজ করে। আরও ছয়টিতে অন্য সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে। তাই পাচার প্রতিরোধে সিআইডিকে কঠোর হতে হবে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার রোধে আরও কঠোর হতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর আছে। অন্য সংস্থাগুলো যদি কঠোর হয়, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করতে পারি, তাহলে চলমান ‘টেম্পোরারি চ্যালেঞ্জ’ মোকাবিলা করতে পারব।’’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় একটি সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য বিএফআইইউ, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগকে স্মার্ট হতে হবে। বর্তমানে আমরা ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস লেনদেনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। বিষয়গুলো স্মার্টভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব হবে না।‘
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংকিং সেবা তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে চলে যাচ্ছে। এর সুবিধাও যেমন আছে, আবার অসুবিধাও আছে। এসব মোকাবিলায় সিআইডিকে দক্ষ হতে হবে। যেকোনো প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে স্মার্ট প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। স্মার্টভাবে আলামত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে তা স্মার্টভাবে বর্ণনা করতে হবে। অন্যথায় অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে যাবে।’
প্রশিক্ষক হিসেবে আরও বক্তৃতা করেন সিআইডির মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের ট্রেইনিং অ্যাডভাইজর ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ ড. খান সরফরাজ আলী (অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর)। সমাপনী বক্তব্য দেন অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) কুসুম দেওয়ান।