কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ১৭:২০ পিএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:২৪ পিএম
বাংলাদেশে এলএনজি সম্প্রসারণ : সমস্যা ও করণীয়’ বিষয়ক এক আলোচনা সভা। সোমবার কক্সবাজারের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে। প্রবা ফটো
প্রতি বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ। এর বড় অংশ চলে যায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে। এতে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর অসহনীয় চাপ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার কারণে গ্যাস সরবরাহে প্রভাব পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতে বাংলাদেশে নতুন করে টার্মিনাল ও এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে তা দেশের অর্থনীতির গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত হবে প্রস্তাবিত এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও টার্মিনাল নির্মাণ বাতিল করে সমপরিমাণ অর্থ সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া।
সোমবার (১১ মার্চ) কক্সবাজারের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলএনজি সম্প্রসারণ : সমস্যা ও করণীয়’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় নানা খাতের বিশিষ্টজনরা এই পরামর্শ দিয়েছেন। সংসপ্তক, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্ম জোট যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় জানানো হয়, চার বছরে সরকার ১১টি এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর চারটি নির্মাণাধীন এবং সাতটির নির্মাণ কাজ শুরুর অপেক্ষায়। দেশে চালু থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। গ্যাসের ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার ২০১৮ সাল থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করে। প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানিতে ৭৯ দশমিল ৩৩ টাকা ব্যয় হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ খাতে বিক্রি করা হয় ১৪ দশমিক ৭৫ টাকায়। ফলে প্রতিঘন মিটারে ক্ষতি হচ্ছে ৬৪ দশমিক ৫৮ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দুটি বেসরকারি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। এগুলোর দৈনিক ক্যাপাসিটি চার্জ সাড়ে ৪ লাখ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোটের সদস্য সচিব হাসান মেহেদী। তিনি বলেন, উৎপাদন, পরিবহন ও ব্যবহার-প্রক্রিয়ায় এলএনজি দিয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড়ে ৯৫০ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে নির্গত হয়– যা প্রায় কয়লার কাছাকাছি। সৌর ও বায়ু শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে নির্গমন হয় না বললেই চলে। সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য কোনো জ্বালানি দরকার হয় না– যা প্রতি বছর অন্তত দুই বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় না, এতে বিদেশে পাচারের সম্ভাবনাশূন্যের কোঠায় নেমে আসতে পারে।
আরও বক্তব্য দেন, সংসপ্তকের প্রধান নির্বাহী লিটন চৌধুরী, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে, নোঙরের প্রধান নির্বাহী দিদারুল আলম রাশেদ, এসকেএমডির প্রধান নির্বাহী বাহলুল আলম, উন্নয়নকর্মী রাফিয়া সুলতানা, পরিবেশকর্মী মো. ইলিয়াস, মিজানুর রহমান বাহাদুর, মাহবুব আলম প্রিন্স, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিবেদক নুপা আলম, সাংবাদিক নুরুল আমিন সিদ্দিকি প্রমুখ।