প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ২১:৫৪ পিএম
ডি-৮ জোটের সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সপ্তম সভা ও মঙ্গলবার ট্রেড মিনিস্টারস কাউন্সিলের তৃতীয় সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। প্রবা ফটো
ঢাকা ঘোষণায় নিজেদের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ঐক্যমত হয়েছে উন্নয়নশীল আটটি দেশের জোট ডি-৮। এজন্য নিজেদের মধ্যে মোট বাণিজ্যের ১০ শতাংশ উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া সংস্থাটি ২০৩০ সালের মধ্যে আন্ত:বাণিজ্য ৫০০ মিলিয়নে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রাও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এর আগে সোমবার এ জোটের সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সপ্তম সভা ও মঙ্গলবার ট্রেড মিনিস্টারস কাউন্সিলের তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দীর্ঘ ৮ বছর পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, ডি-৮ এর মহাসচিব আব্দুল কাদের ইমাম, তুরস্কের ডেপুটি বাণিজ্যমন্ত্রী মোস্তফা তুস্কো ও বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ।
ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিশর, ইরান ও তুরস্ক।
সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১) ঢাকা ঘোষণায় ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত সুপারভাইজরি কমিটির সভাসমূহে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রেড মিনিস্টার্স কাউন্সিলের সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তসমূহের ধারাবাহিকতায় সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সর্বাত্মক অঙ্গীকার করা হয়।
২) সদস্য দেশসমূহের মধ্যে সম্পাদিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (ডি-৮ পিটিএ) কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন এবং চুক্তির আওতায় বিদ্যমান কনসেশনাল অফার তালিকা সম্প্রসারণ এবং এ লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিতকরণ।
৩) সভায় “প্রটোকল অন ডিসপুট সেটলমেন্ট মেকানিজম অব দ্য ডি-৮ পিটিএ” এবং “ডি-৮ ট্রেড ফেসিলিটেশন স্ট্রেটেজি” বিষয়ক দলিলাদি গ্রহণ এবং ডি-৮ পিটিএ এর সফল বাস্তবায়নে দেশসমূহকে অনুরোধ জানানো হয়।
৪) ডি-৮ এর ২০২০-২০৩০ মেয়াদে দশকব্যাপী অঙ্গীকারসমূহের আলোকে দেশসমূহের আন্ত:বাণিজ্য মোট বাণিজ্যের ১০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
৫) ডি-৮ পিটিএ বাস্তবায়নে সদস্য দেশসমূহের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে। অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নকারী দেশসমূহের ট্রেড নেগোসিয়েশন দক্ষতা উন্নয়ন, অর্থায়ন ও পারস্পারিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডি-৮ সচিবালয়কে একটি সমীক্ষা করা হবে।
৬) রাষ্ট্রসমূহের শুল্ক-অশুল্ক বাধা শনাক্তকরণ ও অপসারণের উদ্দেশে একটি স্কোপিং অ্যাসেসমেন্ট পরিচালনার জন্য একটি কারিগরি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। কারিগরি কমিটি স্যানিটারি, ফাইটো-স্যানিটারি, ইমপোর্ট লাইসেন্সিংসহ সকল শুল্ক-অশুল্ক বাধাসমূহের জন্য একটি উপাত্ত ব্যাংক স্থাপন করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৭ সালে ডি-৮ জোট গঠনের সময় অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ৮টি মুসলিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমরা তা কাজে লাগাব।’
চিনি ও সয়াবিন তেল নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে ১৬৩ টাকায় বোতলজাত এক লিটার ও খোলা বাজারে ১৪৯ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। কোথাও এর বেশি দাম নিলে আমাদের জানালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া চিনির কারখানায় আগুন লাগলেও রমজানে কোনও ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে না। কেননা, চাহিদা, আমদানি ও মজুদ হিসেব করে দেখা গেছে, এ আগুনে চিনির বাজারে প্রভাব ফেলবে না। আমাদের হিসাবে ৩০ টনের মতো চিনি ছিল। তবে কেউ আগুন নিয়ে ব্যবসা করবে এটি হতে দেওয়া হবে না।’
মোস্তফা তুস্কো বলেন, ‘ডি-৮ ভুক্ত ৮ দেশের মধ্যে ১২০ কোটি মানুষের বসবাস। আমরা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।