× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাজার

খেজুর এখন মানে নিচু দামে উঁচু

ফারুক আহমাদ আরিফ, ঢাকা ও হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:৫১ এএম

আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৫:০৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সারা বছরই নিয়মিত খেজুর খান জহিরুল ইসলাম। গত শুক্রবার তার সঙ্গে কথা হয় রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায়। খেজুর কিনতে কয়েকটি দোকানে দরদাম করছিলেন তিনি। জহিরুল জানালেন, কয়েক মাস আগে তিন কেজি খেজুর কিনেছিলেন তিনি। বর্তমানে তা শেষের দিকে। আসন্ন রমজানে ইফতারের জন্য কয়েক কেজি খেজুর কিনতে এসেছেন। কিন্তু চড়া দামের কারণে কেনা হচ্ছে না।

কথায় কথায় জহিরুল জানান, তিনি বা তার পরিবারের কেউই খেজুর সরাসরি খান না। খেজুর, পেস্তা ও অল্প দুধ একত্রে ব্লেন্ডিং করে শরবতের মতো করে খান তারা। এতে খেজুর ব্যবহারও হয় কম। কিন্তু তার পরও বর্তমানে পকেটের অবস্থা এত নাজুক আর জিনিসপত্রের দাম এত বেশি যে, রমজানে অপরিহার্য খেজুর কেনাও মনে হচ্ছে বিলাসিতা।

সেখানে দাঁড়িয়েই দেখা গেল, খেজুরের দাম শুনেই হাঁটতে শুরু করলেন দুজন ক্রেতা। এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জুমার নামাজ পড়ার পর তারা সচরাচর খেজুর বা বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। তাদের একজন সজীব হাসান, আরেকজন জিয়াউল হক। জিয়াউল ৩৫০ টাকা কেজি দরের খেজুর খুঁজছিলেন। কিন্তু মনমতো খেজুর মিলছিল না। দুই-তিনজন বিক্রেতা তাকে বলে দিয়েছেন, এ দামে ভালো মানের খেজুর বাজারে মিলবে না। তাই খেজুর না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

গতকাল জুমার নামাজের পর প্রায় আধাঘণ্টা বায়তুল মোকাররম এলাকায় খেজুরের দোকানগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানকার পাঁচটি দোকানে ছয় কেজি খেজুরও বিক্রি হয়নি।

কী বলছেন খুচরা বিক্রেতারা

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে ব্যবসা করছেন মো. সিরাজুল ইসলাম। বরই খেজুর এখন ২২০ বেড়ে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য খেজুরের দাম গত এক বছরে কত বেড়েছেÑ সে হিসাবও দিলেন তিনি। তার ভাষ্যমতে, ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কামরাঙা মরিয়মের দাম বর্তমানে ৬০০, ২৫০-৩০০ টাকার চুকাইয়ের দাম ৬০০, ৩৫০-৪০০ টাকার আমবার বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০, ৮০০ টাকার কার্টনের (৫ কেজি) জাহিদি খেজুর এখন ২৭০০, ২৫০০ টাকার বরই খেজুরের কার্টন (১০ কেজি) বর্তমানে ৪০০০, ১২০ টাকা কেজির বস্তায় রাখা জাহিদির বর্তমান দাম ২৬০ টাকা।

সিরাজুল বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খেজুর কিনছে না। এক বছর আগে রমজানের আগের ‍দুই শুক্রবারও প্রচুর খেজুর বিক্রি হতো। কিন্তু এবার বিক্রি নেই। দাম শুনেই কাস্টমার চলে যাচ্ছেন।

গুলিস্তানে ৩৫০ টাকা কেজি দরে খোরমা খেজুর কিনে ভুবনজয়ী হাসি দিলেন তৈয়বুর রহমান। তিনি বললেন, ‘এই খেজুর ৫০০ টাকার নিচে পাচ্ছিলাম না। তিন-চারটা দোকানে দেখলাম ৪০০-৪৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এ দোকানেই কম দামে পেলাম।’ 

বাজারে সবচেয়ে কম দামে বেশি বিক্রি হয় জাহিদি খেজুর। বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে জাহিদি প্রতি কেজি ২৮০, দাবাস ৪২০-৪৪০, দাবাস ক্রাউন ৫২০, বরই ৪৫০, আদম খেজুর ৬০০ এবং সাদা খোরমা ৩৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

দেশের বিত্তবানদের পছন্দের খেজুরের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের মেডজুল, মাবরুম, আজওয়া ও মরিয়ম। এক মাসের ব্যবধানে এসব খেজুরের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০০-৩০০ টাকা। বাজারে দেখা গেছে, ইরানি মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৯০০, সৌদি আরবের মরিয়ম ১১০০-১২৫০, সাফারি ৯০০-১০০০, আজওয়া ১১০০ টাকায়। এ ছাড়া মেডজুল ১৩০০, মাবরুম ১৩০০, সুক্কারি ৮০০, কালমি ৯০০-১০০০, মেডজুল জাম্বো ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক বছরের ব্যবধানে খেজুরের দাম ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে। জাতভেদে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত।

কারওয়ান বাজারের খেজুর বিক্রেতা মো. ইয়াসিন আরাফাত বললেন, ‘শুল্ক কমানোর কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি। কেননা এখনও নতুন খেজুর বাজারে আসেনি। অল্প কিছু খেজুর ঢুকেছে। তবে তা দামের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।

 চট্টগ্রামে খেজুরবাজারের চালচিত্র 

চট্টগ্রামের ফলমণ্ডি এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রমজানকে সামনে রেখে সব ধরনের খেজুরের দাম বাড়ছে। তবে আজওয়া, মরিয়মসহ দামি খেজুরের তুলনায় কম দামি খেজুরের দাম বেড়েছে বেশি। জাহিদি, ফরিদাসহ কম দামি খেজুরের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আগে যেখানে প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১৭০-১৮০ টাকায়, সেখানে এখন প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৭০-৩০০ টাকায়। ফরিদা খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০-২৬০ টাকায়। কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা বেড়ে সাধারণ মানের খোলা খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়।

অন্যদিকে প্রতি কার্টনে (৫ কেজি) ১০০-১৫০ টাকা দাম বেড়ে প্রতি কেজি আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৯৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১২৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে মরিয়ম খেজুর। মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে আরেকটু বেশি দামে। প্রতিকেজি মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।

অতিরিক্ত দামে শুল্কায়নের অভিযোগ

গত দুই মাসে খেজুরের শুল্কায়ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশ খেজুরের ঘোষিত মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৬২ সেন্টস থেকে ১ ডলার। এ হিসাবে আমদানিকারকদের ঘোষণা ছিল, এসব খেজুর প্রতি কেজি ৬৮ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসেবে) কেনা। কিন্তু এই খেজুরের প্রায় ৮০ শতাংশই শুল্কায়ন করা হয়েছে প্রতি কেজি ৪ ডলার বা ৪৪০ টাকা হিসেবে।

আমদানিকারকদের দাবি, নিম্নমানের হওয়ার পরও বেশি দাম ধরে শুল্ককর আদায় করায় বাজারে এসব খেজুরের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ৬২ সেন্টস থেকে ১ ডলার দামে কেনা খেজুরগুলো যদি এক ডলার মূল্য ধরে শুল্কায়ন করা হতো তাহলে কেজিতে শুল্ককর পরিশোধ করতে হতো ৫২ টাকা। কিন্তু এখন প্রতি কেজি চার ডলার করে শুল্কায়ন করায় শুল্ককর দিতে হচ্ছে ২০৪ টাকা। এই হিসেবে খেজুরগুলোর প্রকৃত আমদানিমূল্য যদি এক ডলারও হয়ে থাকে, তার পরও কেজিপ্রতি অতিরিক্ত বা বেশি শুল্ককর আদায় করা হচ্ছে ১৫২ টাকা।

কী বলছেন ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফআইএ) সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘সবচেয়ে কম দামি খেজুরে বর্তমানে এনবিআর ১৭০ টাকার মধ্যে ৩০ টাকা ডিউটি কমিয়েছে। এতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। আমরা যে দামে পণ্য আমদানি করে থাকি, সেই দামে শুল্কায়ন করা হলে দাম অনেক কমে যেত। ভোক্তারা এর সুবিধা পেত। আমরাও মালগুলো বিক্রি করতে পারতাম। এখন আমদানি করা মালগুলো এত টাকা ডিউটি দিয়ে বিক্রি করতে পারব কিনা, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস আমদানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য খেজুর ব্যবসায়ী মো. আল আমিন মোল্লা বলেন, ‘মরিয়ম, মাবরুম ও রেফার্স ২৫ টন তথা এক কন্টেইনার খেজুরে গত বছর শুল্ক দিতে হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চলতি বছর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়িয়ে শুল্কায়ন করার কারণে তা দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ টাকা।’ তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ থেকে খেজুর আমদানি করা হয়, সেসব দেশে আমাদের মিশন ও রাষ্ট্রদূতরা রয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কমার্শিয়াল কাউন্সেলররাও আছেন। তাদের কাছে জেনে প্রকৃত দাম ধরে শুল্কায়ন করা হোক। তাতে খেজুরের শুল্ক কমবে এবং ভোক্তারাও কম দামে খেজুর কিনতে পারবেন।’ 

মো. আল আমিন মোল্লা জানান, পাইকারি পর্যায়ে এক কেজি জাহিদি খেজুর বিক্রিতে দাম পড়ে ২৫০, দাবাস ৩৫০, দাবাস ক্রাউন ৪০০-৪৫০, মেডজুল ১২০০, মরিয়ম ৯০০-১০০০, সাফাভি ৭০০-৮০০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা তাদের অন্যান্য ব্যয় যুক্ত করে নিজ নিজ হিসাবে এসব খেজুরের দাম ধরে থাকেন। তিনি বলেন, ‘সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক কমালেও সেটি সার্বিকভাবে দাম কমাতে ভূমিকা রাখছে না। কেননা সৌদি আরব ও মিশর থেকে খেজুর আমদানি হলেই ৪০০০ ডলার অ্যাসেসমেন্ট করা হচ্ছে।’ 

কাস্টমসের ভিন্ন ব্যাখ্যা

তবে ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, আমদানিকারকরা শুল্ককর ফাঁকি দিতে বেশি দামে কেনা খেজুর কম দামি দেখাচ্ছেন। বাস্তবে খেজুরগুলো বেশি দামে কেনা। তাই অ্যাসেসমেন্ট করার সময় খেজুরের প্রকৃত দাম ধরেই শুল্কায়ন করা হচ্ছে। 

এদিকে বেশি দাম ধরে খেজুর শুল্কায়ন করার অভিযোগে অনেক আমদানিকারক আমদানি করা খেজুর চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসার পরও শুল্কায়ন করছেন না। কন্টেইনার ভর্তি খেজুরগুলো চট্টগ্রাম বন্দরসহ বেসরকারি বিভিন্ন কন্টেইনার ডিপোতে পড়ে রয়েছে। 

উদ্ভিদ সংঘনিরোধ (চট্টগ্রাম বন্দর) কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে গত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খেজুর আমদানি হয়েছে ৩৮ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে আমদানি হয় ৬ হাজার ১৬ মেট্রিক টন। জানুয়ারি মাসে খেজুর আমদানি হয় ৬ হাজার ১৬৯ মেট্রিক টন। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে খেজুর আমদানি হয় ২৬ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিন মাসে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন আমদানি হলেও এর বিপরীতে শুল্কায়ন হয় কম। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ কন্টেইনার খেজুর শুল্কায়ন করা হতো। কিন্তু গত ১০-১৫ দিন ধরে এর পরিমাণ বেড়ে গেছে। এখন গড়ে প্রতিদিন ৫০-৬০ কন্টেইনার খেজুর শুল্কায়ন করা হচ্ছে। প্রতিটি কন্টেইনারে ২৪ থেকে ২৫ মেট্রিক টন খেজুর থাকে, সেই হিসেবে গত তিন মাসে ১৮ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন খেজুর শুল্কায়ন করা হয়। বাকি খেজুরগুলো এখন পড়ে আছে বিভিন্ন কন্টেইনার ডিপোতে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে উপকমিশনার ইমাম গাজ্জালী বলেন, ‘শুল্কায়নের ক্ষেত্রে বেশি দাম ধরা হচ্ছে না। অ্যাসেসমেন্ট করার সময় খেজুরের মান যেই গ্রেডে পড়ে, ওই গ্রেড অনুযায়ী নির্ধারিত শুল্কায়নমূল্য ধরে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। আমদানিকারকরা ঘোষিত মূল্যে দাম কম দেখালেও বাস্তবে অ্যাসেসমেন্ট করার সময় দেখা যায় সেগুলো উন্নতমানের খেজুর।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শুল্ক কমানোর আগে খেজুর আমদানিতে ব্যবসায়ীদের কাস্টমস শুল্কসহ মোট ৫৩ শতাংশের মতো বিভিন্ন শুল্ককর দিতে হতো। এর মধ্যে কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করতে হয় ২৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ এবং অগ্রিম কর ৫ শতাংশ দিতে হয়। সেখানে এখন অন্যান্য শুল্ককর ঠিক রেখে শুধু কাস্টমস শুল্ক কমানো হয়েছে ১৫ শতাংশ। তাই এখন খেজুর আমদানিতে শুল্ক কর পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৪৩ শতাংশ। 

এই হিসেবে যেই খেজুরের শুল্কায়নমূল্য চার ডলার করে পড়ছে, ওই খেজুরের (হিমায়িত কন্টেইনার) এক কেজির পেছনে শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে প্রায় ২০৪ টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসেবে)। শুল্ক কমানোর আগে এই খেজুরে শুল্ককর পরিশোধ করতে হতো ২৬৪ টাকা। অন্যদিকে যেই খেজুরের দাম পড়ছে ২ দশমিক ৭৫ ডলার, সেই রিটেইল প্যাকেটজাত খেজুর আমদানিতে শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ১৪২ টাকা। আগে এই খেজুর আমদানিতে প্রতি কেজির বিপরীতে শুল্ক দিতে হতো ১৮১ টাকা। এ ছাড়া ড্রাই কন্টেইনারে আনা যেই খেজুরের শুল্কায়ন মূল্য ধরা হচ্ছে ২ দশমিক ৫ ডলার, ওই খেজুরের শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ১২৯ টাকা। আগে এই খেজুর আমদানিতে শুল্ক দিতে হতো কেজিতে ১৬৫ টাকা। এর বাইরে বস্তায় করে আনা সবচেয়ে নিম্নমানের খেজুর যেগুলোর শুল্কায়ন মূল্য ১ ডলার, ওই খেজুরের পেছনে শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ৫১ টাকা। এই খেজুর আমদানিতে আগে শুল্ককর দিতে হতো ৬৬ টাকা।

শুল্ক কমানোর প্রভাব পড়েনি বাজারে

এদিকে ১০ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি কমানোর পরও বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। উল্টো বাজারে খেজুরের দাম বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, শুল্ক কমানো হলেও অতিরিক্ত মূল্য ধরে শুল্কায়ন করার কারণে বাজারে দাম বাড়ছে সাধারণ খেজুরের। তাদের দাবি, সাধারণ খেজুর তারা কিনছেন প্রতি টন ৫০০ ডলার করে। কিন্তু ওই খেজুর শুল্কায়ন করা হচ্ছে প্রতি টন ১০০০ ডলার দাম ধরে। এতে কেজিতে দ্বিগুণ শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। ৫৫ টাকায় (এক ডলার সমান ১১০ টাকা হিসেবে) কেনা খেজুর ১১০ টাকা দামে শুল্কায়ন করায় কেজিতে বিভিন্ন শুল্ককর দিতে হয় প্রায় ৫৫ টাকা। অর্থাৎ খেজুর যত টাকা দিয়ে কেনা ওই পরিমাণ টাকায় শুল্ককর পরিশোধ করতে হচ্ছে। শুল্ককর বেশি হওয়ায় বাজারে এ ধরনের খেজুরের দামও বেশি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা