× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নীতির ভুলে অস্থির অর্থনীতি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫৭ পিএম

ব্যাংকিং অ্যালমানাক পঞ্চম সংস্করণ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো

ব্যাংকিং অ্যালমানাক পঞ্চম সংস্করণ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো

অন্যের পরামর্শে বাস্তবতা বিবর্জিত ও প্রভাবিত সিদ্ধান্তের কারণে দেশের ব্যাংক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাবে সার্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। প্রভাশালীদের সুবিধা দিতে অনেক নীতি প্রণয়ন এবং ছাড় দেয়া হয়, যা পরবর্তীতে আবার পরিবর্তন করতে হয়। এতে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই ফের নতুন সমস্যা হাজির হয়। 

শনিবার (১০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্যাংকিং অ্যালমানাক পঞ্চম সংস্করণ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সুদহার বেধে দেওয়া বিষয় নিয়ে যখব খুব আলোচনা হচ্ছিল। আমানত ও ঋণে ‘ছয়-নয়’ সুদহার একসময় করা হয়েছিল, তখন এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মতামত ছিল। আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলেছিল এটা (সুদহার) উদারিকরণ করা হোক। সেই উদারিকরণ করার পরে নয়-ছয়ে আবারও বেধে দেওয়া হলো। অনেক দিন ধরে বেধে দেওয়া হয়েছিল, উচিৎ ছিল তার আগেই ছেড়ে দেওয়া। আবার যখন সম্পূর্ণ ছেড়ে দেওয়া হলো তখন আগের সব যুক্তিগুলো আমরা ভুলে গেছি।’ 

তিনি বলেন, ‘শুধু আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বাস্তবতা বোঝে না। একবারে সম্পূর্ণ ছেড়ে দিলে ছোট ছোট ব্যাংক, যারা নাজুক অবস্থায় আছে, যারা আমানত পায় না, তারা তো গ্রাহককে আমানতের জন্য বেশি সুদহার দিয়ে আকৃষ্ট করতে চাইবে। যারা খুব নিরপাদ ঋণ গ্রহীতা না, রিস্কি ঋণ গ্রহীতা, তাদের ঋণ দিয়ে আপাতত বেঁচে থাকতে চাইবে। সেখানেও সমস্যা তৈরি হবে। এটার আপাতত একটা সীমা থাকা দরকার। কারণ ঋণের সুদহারে যদি ঊর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে ওই ঋণ গ্রহীতারা যারা ঋণ নিচ্ছেন তারা হয় খুব ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ নেবেন অথবা যারা মনে করেন ঋণ নিচ্ছি আর ফেরত দেবো না তাদের কাছে তো সুদের হার কোনো বিষয় না। আমাদের বাস্তবতায় ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দেওয়ার বাস্তবতা আছে। কিন্তু এই বাস্তবতা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক বোঝে না।’

ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির হৃদপিন্ড হলো ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান। হার্ট ভালো থাকে রক্ত সঞ্চালনের কারণে। আজ আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভালো অবস্থানে নেই। বাংলাদেশের ঋণ মানে আন্তর্জাতিকভাবে যে অবনতি হয়েছে তা আর্থিক খাতের কারনেই হয়েছে।’ 

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দেশের ব্যাংক খাত উল্টো রথে চলছে। প্রতি বছর খেলাপি ঋণ বাড়ছে। খেলাপি ঋণের বিদ্যমান পরিমাণের বাইরে প্রতি বছর বিরাট অংকের খেলাপি ঋণকে রাইট অফ (ঋণ অবলোপন) করা হচ্ছে। যেটা ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। ঋণ অবলোপন করা এসব ঋণ ব্যালান্স শিটের অন্তর্ভুক্ত থাকে না বিধায় সেগুলো খেলাপি ঋণ হিসেবেও প্রকাশ করা হয় না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘একটা বড় অংকের খেলাপি ঋণ বিভিন্ন মেয়াদে রিশিডিউল করা হয়। এক্ষেত্রে গ্রাহক খেলাপি হলেও রিশিডিউল করার কারণে আর খেলাপি ঋণে গণ্য হচ্ছেন না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশে খেলাপি হলে তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন। ঋণ খেলাপি বাড়ি ভাড়া নিতে পারেন না, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন না, সামাজিতভাবেও নানা প্রতিবন্ধকতা থাকে। আমাদের এখানে ঋণ খেলাপি মহা আনন্দে থাকেন।’

নতুন ব্যাংক নিয়ে সাবেক এ গভর্নর বলেন, ‘একটা ব্যাংক খোলা হবে আর শহরে কিছু শাখা দিয়ে চলবে, এর দরকার নেই। তাদেরকে তো প্রান্তিক পর্যায়ে শাখা খুলতে হবে, হাওড় এলাকায় শাখা পরিচালনা করতে হবে। একটা সময় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হলে তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি এ খাতের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে। কিভাবে চলতে হবে তা আমাদের দিবে আমরাও তাদের প্রতিবেদন দিবো।  কিন্তু পরে ব্যাংক খোলার সিদ্ধান্ত আসলো রাজনৈতিকভাবে। এতে ব্যাংকে খেলাপি বাড়ছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণকারি সংস্থা স্বচ্ছ না হলে চুরি হবে ব্যাংক খাতে। তাদের অবশ্যই অন্যের কথায় চললে হবে না।’ 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা