প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:২১ পিএম
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫০ পিএম
বিআইসিসিতে ফিতা কেটে সেফ ফুড কার্নিভালের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। প্রবা ফটো
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম করছি।’ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) আয়োজিত সেফ ফুড কার্নিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সমৃদ্ধি চাই, নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই—এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সেফ ফুড কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সকলের এগিয়ে আসার লক্ষ্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মসজিদের ইমাম যদি জুমার নামাজের আগে নিরাপদ খাদ্য নিতে সচেতন করেন, তাহলে মানুষ কিন্তু শুনবে। স্কুলের শিক্ষকরা তার লেকচারের আগে দুই মিনিট নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করলে তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রভাব ফেলবে। এভাবে সবার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য পেতে যা যা করণীয়, তা আমরা জেনেও করছি না। আমরা জেনেশুনে খাবারে ভেজাল দিই এবং তা বিক্রি করি। কিন্তু সেই ব্যবসায়ীরা ভাবে না, অন্য ভেজাল দেওয়া খাবারগুলো তো তাকেও খেতে হবে।’
দেশের পূর্ববর্তী ও বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘একসময় আমরা মঙ্গাতে অবস্থান করতাম। আমাদের খাদ্যের ব্যাপক অভাব ছিল। তবে সে সময় বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণের চাল ও গম আসত, সেই ত্রাণ খাদ্য খেয়ে আমাদের বাঁচতে হতো। এখন আমরা দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছি। আমরা বর্তমানে মসৃণ ও সরু প্যাকেটজাত ভালো মানের চাল খাই। আমাদের দেশে মানুষ এখন নিরাপদ খাদ্যের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্যের কথা ভাবে। কারণ আমাদের দেশে একটা সময় ছিল অনেকে ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পান্তা করে খেত। তবে এখন পান্তা শখ করে খায়, বৈশাখের উৎসবমুখর পরিবেশে খায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে সচেতনতা ছড়াতে কাজ করছে। তবে আইন দিয়ে তো সবকিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, যদি নিজের ভেতর সচেতনতা না থাকে। সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতেই ‘স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সমৃদ্ধি চাই, নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী মেলার এ আয়োজন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার সভাপতিত্ব করেন। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
এ ছাড়া এই কার্নিভালে ৭০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে—আকিজ, প্রাণ, কোকাকোলা, ফিনলে, বেঙ্গলমিট, ইউনিলিভার, নেসলে, ডমিনোজ, আবুল খায়ের, স্কয়ার গ্রুপ। মিষ্টান্ন দোকানের মধ্যে রয়েছে—বনফুল, ওয়েলফুড, প্রিমিয়াম সুইটস, বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার, বনলতা সুইটস, ভাগ্যকূল, ব্রেড এন্ড বিয়ন্ড, সুমি'স হট কেক, ননী। ফাইভ স্টার হোটেলের মধ্যে রয়েছে—হলিডে ইন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ক্রাউন প্লাজা, প্যান প্যাসিফিক, ঢাকা রিজেন্সি, হোটেল আমারি। ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে রয়েছে—কক্সবাজারের শালিক, মুক্তাগাছার মণ্ডা, রাজশাহীর কালাই, কুমিল্লার মাতৃভান্ডার, বগুড়ার দই, চট্টগ্রামের মেজবান প্রভৃতি। রেস্টুরেন্টের মধ্যে কেএফসি, পিৎজা হট, হারফি, বার্গার কিং, সুলতানস ডাইন ও কাচ্চি ভাই অংশ নেবে। এ ছাড়াও রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানের স্টল।