× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শীত যায়, সবজির দাম আর কমবে কবে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:২১ এএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলল, অথচ শীতকালীন সবজিতে কিছুটা কম দামের ‘উষ্ণতা’ এখনও মেলেনি রাজধানীর বাজারে। সামনের দিকে দাম যে কিছুটা কমবে এমন আশাও দেখা যাচ্ছে না। বাজেটের সঙ্গে বাজারের ফর্দ মেলাতে গিয়ে ক্লান্ত ক্রেতাদের একটাই জিজ্ঞাসাÑ শীত তো যায় যায়, এবার লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কি আর কমবে না? বর্তমানে সারা দেশের বাজারচিত্র প্রায় একই রকম।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু সবজির দাম যেন পাল্লা দিয়েই বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। আরও বেড়েছে ডিম ও খাসির মাংসের দাম। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মিষ্টিকুমড়া ও পেঁপের দাম। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। 

সরেজমিনে হাতিরপুল বাজারে টমেটো, শিম, করলা কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ওই বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম জানান, প্রতি ক্যারেট (২৫ কেজি) টমেটোর দাম ৩০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাতে করে টমেটোর কেজি ১০ টাকা বেড়ে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ১০ টাকা বেড়ে ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে লম্বা বেগুন ১১০ টাকা ও গোল বেগুন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পিস। গাজরের কেজি ৫০ টাকা, মুলার কেজি ৪০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেড়েছে কাঁচা মরিচের দামও। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মরিচ। মিষ্টিকুমড়া কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। লাল শাক ও মুলা শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা। পেঁয়াজ পাতা ৪০ টাকা ও পালং শাক ১৫ টাকা মুঠো। 

এই বাজারের চাল বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে যে দাম বেড়েছে তা কমেনি। এমনকি গত ১৫ দিনেও পাঁচ টাকা বেড়েছে কেজিপ্রতি। বড় কোম্পানিগুলো কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে দুই টাকা কমানোয় মন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নেন না। তিনি আরও বলেন, এক মণ ধানের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। অথচ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। অটো রাইস মিলের ছাই পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। কোনো কিছুই ফেলনা নয়। অথচ বাড়ছে শুধু চালের দাম। ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে গিয়ে আমাদের মন বেজার হয়ে যায়। বিক্রি কমে গেছে। 

রবিউল ইসলাম বলেন, এক কেজি স্বর্ণা চাল ৫০ টাকা, যা আগে ৪১ টাকা কেজিতে কেনা যেত। এখন পাইকারি দর ৪৬ টাকা। ৫৯ টাকার মিনিকেট কিনতে হচ্ছে ৬৭ টাকায়, আর বিক্রি করছি ৭২ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও নাজিরশাল চাল পাইকারি কেনা হতো ৭৭ টাকায়। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বাজারটিতে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি, ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা, লেয়ার ৩০০ ও পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন। অর্থাৎ ৪৮ টাকা হালি। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৪২ থেকে ৪৩ টাকা হালি। সাদা ডিমের ডজন ১৩৫ টাকা। 

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, সবচেয়ে ছোট বাঁধাকপি ৩৫ ও ফুলকপি ৪৫ টাকা পিস। সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি, শিম প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও পেঁপে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। বাজারটিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩১০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজিতে। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। 

মোহাম্মদপুরের মাংস বিক্রেতা রাজু আহমেদ জানান, এখন অনুষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় খাসির মাংসের চাহিদা বেশি। গত এক সপ্তাহের মধ্যে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। তবে চাহিদা বাড়লে বাজারে খাসির সরবরাহ কম। কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার খাসির মাংসের চাহিদা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, এসব অঞ্চলের খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর শুধু খাসির মাথা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পিস।

টাউন হল বাজারে কথা হয় সাব্বির হোসেনের নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি শিম কিনতাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। লাউয়ের পিস ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আলুর দাম ২৫ টাকা। আর এবার সব সবজির দামই বেশি। বাজারের সবজি বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁপের দাম। বর্তমানে এক কেজি কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। শিম ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। লম্বা বেগুন ১০০ টাকা ও গোল বেগুন ১২০ টাকা, লাউ ১২০ টাকা পিস। ফুলকপি, বাঁধাকপি ৫০ টাকা পিস। ২০ টাকা বেড়ে করলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। তিনি আরও বলেন, গত বছর এ সময় যে পরিমাণ সবজি বাজারে আসত এ বছর তার চেয়ে অনেক কম আসছে। কারওয়ান বাজার ও শ্যামবাজার থেকে পাইকারি কিনলে কিছু কম পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ঢাকার পাশেই সাভার থেকে সবজি আনলে দাম বেশি পড়ছে। 

বাজারটিতে মুরগি বিক্রেতা আব্দুস সোবহান বলেন, ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, সোনালি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মসলাজাতীয় পণ্যের বিক্রেতা মো. এরশাদ হোসেন বলেন, দেশি রসুন ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুন ২৪০ টাকা কেজি। বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ১০ টাকা কমে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে।

বাজারে সব ধরনের সবজির দাম এত চড়া হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী গতকাল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আমি এ মুহূর্তে সিলেটে অবস্থান করছি। এ অঞ্চলেও পর্যাপ্ত সবজির আবাদ হয়েছে। শুধু সিলেট নয়, সারা দেশেই উৎপাদন বেড়েছে। কোনো কিছুরই কমতি নেই। বাজারে যান দেখবেন প্রচুর শাক-সবজি। তবে দাম এবার আসলেই চড়া। কৃষকরা এবার দাম কিছু বেশি পাচ্ছে। আর সবজি চাষের ব্যয়ও বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, সবজির দাম বেশি থাকলেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার ভেতরেই আছে। তবে দাম আরও কিছু কম হলে সবার জন্যই ভালো হতো।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা