× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ডলার সংকট

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ে ধস

তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪০ এএম

আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৩ এএম

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ে ধস

বেনাপোল কাস্টম হাউসে ৩২৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। গত ২০২২-২৩ (জুলাই-ডিসেম্বর) অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছর (২০২৩-২৪) বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি কমেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন। কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ডলার সংকট ও বৈশ্বিক বাজারে পণ্যের মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানিকারকরা আমদানি কমিয়ে দেওয়ার ফলে এ সংকট তৈরি হয়েছে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রতিটি পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া ও ভুল এইচএস কোড হলে শতকরা ২০০ ভাগ জরিমানা আদায় করায় লোকসানের আশঙ্কায় অনেকে বাধ্য হয়ে আমদানি বন্ধ রেখেছেন। দ্রুত সংকট না কাটলে বছর শেষে আমদানির পরিমাণ আরও কমে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির কবলে পড়তে হতে পারে। 

কাস্টমস সূত্র জানায়, ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার ওপর প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের গেল ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ২ হাজার ৭৭৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হয়েছে ৩২৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

এ সময় ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৮ লাখ ২৪ হাজার ১২৩ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। সেসময় আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৬৩২ কোটি ১ লাখ টাকা। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি ছিল ৩০৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এ সময় আমদানির পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন পণ্য। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি কমেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন পণ্য এবং রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকেও। খাদ্যদ্রব্যসহ শিল্প, কল-কারখানার কাঁচামাল ও মেশিনারিজ দ্রব্য ডলারে আমদানি করতে হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মন্দায় ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক মাস ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছে। এতে আমদানি কমে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে এ সংকট মোকাবিলা করে বাণিজ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কমেছে ৩০ শতাংশ। এ সংকট কাটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে বিপুল পরিমাণে বাণিজ্য ও রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়তে হতে পারে।

এদিকে সাধারণ সিঅ্যান্ডএফের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমদানিযোগ্য অনেক পণ্য এখন বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। এটিও অনেকটা রাজস্ব ঘাটতি বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেসব পণ্য আমদানি হতো যেমনÑ চকলেট, ফেসওয়াশ, ক্রিম, ইমিটেশন এগুলো এখন চুক্তির মাধ্যমে চোরাইপথে এসে বেনাপোল-ঢাকা, বেনাপোল-খুলনা ও বেনাপোল-ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে চোরাচালানিরা। ট্রেনের রেল-পুলিশের সহযোগিতায় প্রতিদিন শত শত কম্বল ও এসব পণ্য নিয়ে গেলেও দেখার কেউ নেই। অথচ একজন সাধারণ মানুষ এক হাজার টাকা ভ্রমণ কর দিয়ে ভারত থেকে আসার পথে একটি কম্বলও নিয়ে আসতে পারে না।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, বৈশ্বিক মন্দায় ডলার সংকট দেখিয়ে ব্যাংকগুলো ডলারের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ানোয় এলসি খুলতে পারছি না। সরকারের নির্ধারিত ডলার রেট থাকলেও বর্তমানে ১ ডলারের বিপরীতে ব্যাংক ১২৫ থেকে ১২৮ টাকা পর্যন্ত কাটছে। এর ওপরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি পণ্যের ওপর মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া এইচএস কোড ভুলের কারণে ২০০ ভাগ জরিমানা আদায় করছে। এর বিরূপ প্রভাবে দেশে শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত ও আমদানি পণ্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বাড়ার আশঙ্কা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেক পণ্যের আমদানি কমে গেছে। এজন্য রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি সব ধরনের সংকট কেটে চলতি বছর রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি আদায় করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা