× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি

জোনায়েদ মানসুর

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৮ পিএম

জনতা ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার। প্রবা ফটো

জনতা ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার। প্রবা ফটো

জনতা ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার। সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। সেখানে তিনি ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা, খেলাপি ঋণ, তারল্য সংকটসহ নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জোনায়েদ মানসুর 

প্রবা : অধিকাংশ ব্যাংকের গ্রাহক ডলার সংকটের কারণে এলসি বা ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। আপনার ব্যাংকের অবস্থা কেমন?

আব্দুল জব্বার : ডলার সংকট বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এটা শুধু জাতীয় সমস্যা না। আমরা প্রথমে ভাবছিলাম কোভিডের পর হয়তো ভালো হবে। কোভিটের পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো। সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এটা তো সবাই জানেন। ফলে ডলার সংকট আমাদের দেশেও চলে আসে। আমাদের ব্যাংক অন্য ব্যাংকের তুলনায় সবচেয়ে বেশি আমদানি করে। সরকারের যে সাপোর্টÑ সার, তেল, গ্যাস, পোর্টসহ অন্যান্য সংস্থার বিশেষ আমদানিগুলোর বেশিরভাগই জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সংকটকালেও আমরা এই কাজগুলো করে যাচ্ছি। যেভাবেই হোক ডলার আমরা ম্যানেজ করি। 

প্রবা : ব্যাংকিং চ্যানেলে বাড়ছে প্রতারণা। এ ব্যাপারে আপনি কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? 

আব্দুল জব্বার : আমার মনে হয় না এখন খুব বেশি প্রতারণার সুযোগ আছে। গল্পে শুনি, বাস্তবে না। এলসির মাধ্যমে প্রতারণার একটা কথা শোনা যায়। একটা সার্টেইন অ্যামাউন্ট যদি এলসি করা হয়, সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও মনিটরিং থাকে। আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে যদি হয়, আমরা আন্তর্জাতিক মূল্য যাচাই করেই এলসি করি। অনেক সময় পেমেন্ট বিভিন্ন কারণে দেরি হওয়ায় পণ্য আসতে একটু দেরি হতে পারে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি যাচাই-বাছাই করার। যতগুলা থিউরি আছে অ্যাপ্লাই করি এবং সেটা আরও ওপর থেকেও যাচাই করা হয়।

প্রবা : যোগদানের পর গ্রাহকের জন্য নতুন কী কী সেবা যুক্ত করেছেন? 

আব্দুল জব্বার : আমি যোগদান করার পর প্রথমেই ১০১ দিনের একটা কর্মসূচি হাতে নিই। এটাই ছিল আমার মূল ভিত্তি। এখন পর্যন্ত যা অর্জন হয়েছে এ কর্মসূচির মাধ্যমেই হয়েছে। আমার একটা নির্দেশনা ছিল, অ্যাকচুয়াল যে পজিশন সেটাই বের করে আনতে হবে। বাড়লে বাড়বে, কমলে কমবে। এ কর্মসূচি নেওয়ার পর ডিপোজিট বেশ বাড়ল। জনতা ব্যাংকে বর্তমানে ১ লাখ ১২ হাজার কোটি আমানত রয়েছে। আমি যখন দায়িত্ব নিই তখন জনতা ব্যাংকের আমানত ছিল ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া হিসাব খোলার লক্ষ্যমাত্র নিয়েছিলাম ১ লাখ। কিন্তু হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার। অর্থাৎ সবাইকে কাজে সম্পৃক্ত করার সুযোগ হয়েছে। মাঠপর্যায়ে এটাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। তাদের সাধ্যমতো তারা কাজ করেছে। এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। যেখানে প্রতিষ্ঠান ঝিমিয়ে গিয়েছিল, সেই জায়গাটাতে সবাই কাজ করছেন।

প্রবা : ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

আব্দুল জব্বার : ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। কোনো রকম প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে, নিয়মনীতি ভঙ্গ করলে, আমরা ছাড় দিই না। কাউকে কোনো পানিশমেন্ট বা শাস্তি দেওয়ার পর ওপর মহাল থেকে তার জন্য কেউ সুপারিশ করতে এলে আমি আমলে নিই না। আমি বলে দিই, তাকে কেন পানিশমেন্ট দেওয়া হয়েছে, সেটা তাকে জিজ্ঞেস করেন। শৃঙ্খলার জন্য আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।

প্রবা : দায়িত্ব পালনে আপনাকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে?

আব্দুল জব্বার : আমি গ্রাহকদের সাইকোলজি বুঝে কাজ করার চেষ্টা করি। তাদের ক্ষতি হোকÑ এমন কোনো পদক্ষেপ নিই না। কারণ তারা যদি টিকে না থাকে তবে ব্যাংক টিকবে না। ব্যাংক না টিকলে দেশের অর্থনীতি টিকবে না। তাই আমি কোনো চাপ অনুভব করি না। আমাকে কেউ চাপ দেন না। আমিও তা নিই না। বরং সবার সহযোগিতা পেয়েছি। 

প্রবা : আপনার ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কেমন? খেলাপি ঋণ আদায়ে কীভাবে কাজ করছেন? 

আব্দুল জব্বার : ব্যাংককে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কোনো কিছু করতে আমি রাজি না। খেলাপি আদায়ে আমাদের কোনো গোপনীয়তা ছিল না। আমাদের খেলাপি ঋণ প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছিল। কীভাবে খেলাপি ঋণের তথ্য উন্মুক্ত করা যায়। তা আগে প্রকাশ করাটাই ছিল প্রধান কাজ। খেলাপি না করে এটাকে হয়তো অন্যভাবে কমানো যেত। সে জায়গা থেকে আমরা বললাম না, আমরা তা করব না। প্রকৃত যেটা সেটাই চলে এলো। আমি একটা পয়েন্টে খুব স্ট্রং ছিলাম যে, আমি কোনো অবস্থায়ই সুযোগ দিতে রাজি না। গ্রাহকের কাছে যখন এই বার্তাটা যাবে, তখন বাধ্য হয়ে টাকা দিতে থাকবে। গ্রাহকদের কঠোর বার্তা দেওয়ার কারণে পর তারা দেখল যে, আর টাকা না দিয়ে উপায় নেই। ব্যাংক অ্যাকশনে যাচ্ছে তখন তারা বাধ্য হয়ে টাকা দিচ্ছে। আমাদের এখন খেলাপি ঋণ ১৬ শতাংশ আছে। প্রতিবছর ১ থেকে ২ শতাংশের মতো টার্গেট থাকে। ২০২৪ সালের মধ্যে ১৪ শতাংশে আনা যায় কি না, এরপর পর্যায়ক্রমে ১৩, ১২ এভাবে চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এটাকে সিঙ্গেল ডিজিটে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। 

প্রবা : জনতা ব্যাংকে তারল্য সংকট কেমন? 

আব্দুল জব্বার : দেশের বর্তমান ৬২টি ব্যাংকেই তারল্য সংকট আছে। সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকেই আছে। এটা তো সব সময় হয় না। এটা আমরা বিভিন্নভাবে সমাধান করি। মাঝেমধ্যে যখন হয়; তখন আন্তঃব্যাংকে একটা লেনদেন সিস্টেম আছে। আমরা বিভিন্নভাবে এটাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি। 

প্রবা : ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কী লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছেন?

আব্দুল জব্বার : বড় লোনে (ঋণ) এ মুহূর্তে যাচ্ছি না। আমরা এখন ছোট লোনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশেষ করে এসএমই খাতে আমাদের টার্গেট বেশি। কারণ বড় লোন যেটা সেখান থেকে রিটার্ন আনা কঠিন। কর্মসংস্থান বলেন, প্রফিট বলেন, জিডিপি বলেন, যাই বলেন না কেন, একটা ইন্ডাস্ট্রি এস্টাবলিস্ট হতে দু-তিন বছর লেগে যায়। আর উদ্যোক্তা তৈরি না হলে বাণিজ্য সৃষ্টি হয় না। আমি এই জিনিসটাকে খুব পজিটিভলি দেখি। উদ্যোক্তাকে আসলে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা