× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সবজির দাম কিছুটা কম, অস্থির মাছের বাজার

প্রতিদিনের বাংলাদেশ ডেস্ক

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২২ ১৮:১৩ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সরবরাহ বাড়ায় বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। দুই-একটি সবজি ছাড়া বেশির ভাগেরই দাম কমেছে ৫-১০ টাকা করে। এতে অনেকটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা। তবে অস্থির মাছের বাজার। ঈদের আগেও রুই মাছের কেজি ছিল ২৬০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে। সেই রুই মাছের দাম কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা দরে। মাছের বাজারে ক্রেতাদের অসন্তোষ স্পষ্ট। বেড়েছে কাতলা মাছের দামও। আর চিংড়ি রয়ে গেছে আগের মতো বাড়তি দামেই, ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে নদীর চিংড়ি। শুধু তাই নয়, দাম বেড়েছে মুরগির দামেও। দাম কমেনি ডিমেরও। আর আগের মতোই ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু; যা নিয়ে নাখোশ ক্রেতারা।

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজার ঘুরে বাজার দরের এমন চিত্র পাওয়া গেছে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। তবে, দুই-একটি সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। দাম বাড়া সবজিগুলোর মধ্যে লাউ আর কচুর মুখি উল্লেখযোগ্য। এই দুই সবজি কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। অনেক কিছুরই দাম বাড়তি। ডিমের দাম কমছেই না। যারা মাংসের অভাব মাছে পূরণ করেন তাদের জন্য দামে হাপিত্যেস দশা।

হাতিরপুলে সপ্তাহের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০-৩৫ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, টমেটো ১১০-১২০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, শসা ৫৫ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, ধুন্দল ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেড়ে বর্তমানে কচুর মুখি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি পিস লাউয়ের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া প্রকারভেদে প্রতি আটি শাক হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়। তবে লাউয়ের শাক প্রতি আটি ৩০ টাকা।

হাতিরপুল কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন জানান, গত সপ্তাহে তুলনায় প্রতিটি সবজিতে ১০ টাকা করে দাম কমেছে। কোনো কোনোটির দাম ১৫ টাকাও কমেছে। তবে, সরবরাহ কম থাকায় বাজারে কয়েকটি সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকার মতো বেড়েছে।

তিনি জানান, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৬০-৫০ টাকায় বিক্রি হতো। এই সপ্তাহে দাম কমে ৪০ টাকা হয়েছে। ৫০ টাকার পটল আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। ১৬০ টাকা থেকে কমে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গাঁজর, যা আগের সপ্তাহে ছিল গাজর ১৪০ টাকা।

বাজারের আরেক সবজি ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া জানান, বেশির ভাগ সবজির দাম কমলেও সরবরাহ না থাকায় বেড়েছে লাউ ও কচুর মুখির দাম। লাউয়ের দাম ৪০ টাকা থাকলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। কচুর মুখি ৫০ টাকা থেকে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকায় বাজারে সব ধরনের শাকের দাম কমেছে। ব্যবসায়ী বলছেন, আগে সব ধরনের শাকের আটি প্রতি ২০ টাকা ২৫ টাকা দরে বিক্রি হতো। এখন সেগুলো ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

হাতিরপুল বাজারের শাক বিক্রেতা সবুজ জানান, গত সপ্তাহে কচুর শাক ২০ টাকা বিক্রি করতাম, আজ ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করছি। 

পাঁচ টাকা কমে ডাটা শাকের দাম ১৫ টাকা। শুধুমাত্র বেড়েছে ৫ টাকা বেড়েছে লাউয়ের শাকের দাম।

সপ্তাহের বাজার করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবু তালহা বলেন, সবজির বাজার মোটামুটি ঠিক আছে। গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছু-কিছু সবজিতে কমেছে। কিন্তু অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম তো কমে নাই।

তিনি আরও বলেন, সবজির দাম কমলেও আটা-ময়দা, চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। চালের দামে খুব বেশি হের-ফের হয়নি।

এদিকে মিরপুর উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে জানা যায়, সাদা কিংবা লাল যেটাই নেন আলুর কেজি ৩০ টাকা। ভর্তার জন্য জনপ্রিয় জাম আলু ৪০ টাকা, দেশি ছোট ঝুরি আলু ৩৫ টাকা। কোরবানির ঈদের পর পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমেছে, কিন্তু বেড়েছে রসুনের দাম। 

সবুর মিয়া নামে ক্রেতা বলেন, ছয় মাস ধরে এই দামেই কিনতে হচ্ছে। দাম একটুও কমছে না। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত এসব নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছি।

ক্রেতা মনসুর আলী বলছেন, কিনে খাবো এমন সামর্থ্যের মধ্যে শুধু শাক ও কিছু সবজি আছে। লাউ তো ছোঁয়া যাচ্ছে না। আলু আর যেন আমাদের নয়। মাছের বাজারও গরম।

মাছের বাজারেও অস্বস্তি স্পষ্ট। দর-দাম করে মাছ কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের।

বিক্রেতারা জানান, নদীর চিংড়ির কেজি ৬০০ টাকা, তবে লাল চিংড়ি ৫০০ টাকায় মিলছে। চাষের ট্যাংরা মাছ ৪৬০ টাকা।

রুই মাছ দিন দিন যেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে যাচ্ছে, কেজি ওজনের রুই ৩৬০ টাকা। কাতলাও কেজি ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা। পাল্লা দিয়ে পাঙ্গাসও ধরে ফেলেছে তেলাপিয়া মাছকে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। 

মাছ বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ দিন আগেও রুই-কাতলা মাছ মিলতো সর্বোচ্চ ২৮০/৩০০ টাকায়। ক্রেতারা দুই কেজির জায়গায় এক কেজি কিনছেন। বর্ষার মাঝে কমতে পারে মাছের দাম।

পাশেই কাদের গোশতো বিতান নামক দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ডে লেখা দামে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি ৬৮০ টাকা, কোরবানির ঈদের পর থেকে বন্ধ খাসির মাংসের দোকান। 

বেড়েছে পাকিস্তানি ককের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি দরে। লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর অধিকাংশ দোকানে নেই দেশি মুরগি। যেসব দোকানে আছে ক্রেতা নেই। বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা দরে। তবে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

রমজানের ঈদ থেকে ডিমের দাম বাড়তি, যা এখনও কমেনি। একই দোকানে ডিম (লেয়ার) প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়, যা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

শরিফুল হক নামে একজন ক্রেতা বলেন, রমজানের ঈদের শুরুতে ডিম কিনেছি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা ডজন। সেই ডিম মাঝে কিনলাম ১২৫ টাকা ডজন। এখনও সে ডিমের দাম বাড়তি। ১১৫ টাকা ডজন কিনতে হলো।

অন্যদিকে কেউ ন্যায্য মূল্যে আবার কেউ আগের মূল্যে বিক্রি করছেন সয়াবিন তেল।

গত ২১ জুলাই সরকার নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে এর প্রভাব নেই বাজারে। 

উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারে এক দোকানে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম চাওয়া হয় ৯৮০ টাকা। বাড়তি দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা আতিকুল ইসলাম বলেন, আগের দামে কেনা তেল এখনও দোকানে রয়েছে। তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে পাশেই আরেক দোকানে তীর, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলে পাঁচ লিটার বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯১০ টাকা দরে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা