× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সংকটে সরকারের উন্নয়ন প্রচারের সেই প্রকল্প বাতিল

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২২ ২০:১৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সরকারের উন্নয়ন প্রচারে সারাদেশে ৪৯২টি উপজেলায় ১৩২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এলইডি ডিসপ্লে স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ। বর্তমান আর্থিক সংকট বিবেচনায় এ প্রকল্পটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

ব্যয় সংকোচন নীতিতে সরকার কঠোর অবস্থানে। খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে প্রকল্প আপাতত স্থগিত রাখতে গত জুলাই মাসে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে নতুন কোন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দিয়েছে উদ্যোগী সংস্থা তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ। কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছাড়া অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করতে হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন অনুশাসন বিবেচনায় প্রকল্পটি ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকল্পটি বর্তমানে বাস্তবায়ন করা সমীচীন নয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ‘সারা দেশে ৪৯২টি উপজেলায় এলইডি ডিসপ্লে স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় একনেক সভার কার্যতালিকা থেকে প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. মামুন আল রশিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রত্যাহারের চিঠি পাঠিয়েছে। তারা বলছে, এ মুহূর্তে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প প্রায়োরিটি দিতে চাচ্ছে তারা। এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল মূলত মুজিববর্ষকে লক্ষ্য করে। যেহেতু এখন মুজিববর্ষ পার হয়ে গেছে, তাই এ প্রকল্পটি থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সরে এসেছে।’

চিঠিতে প্রকল্পটিকে ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্প কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ প্রকল্প এখনও পাসই হয়নি, পাশ না হলে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে পড়বে কিভাবে।”

গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে ব্যয়ের লাগাম টানতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে থাকা কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই অংশ হিসেবে একেবারেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমন প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোও আপাতত একেনেকে উপস্থাপিত হচ্ছে না। গত কয়েকটি একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, খুব গুরত্বপূর্ণ না হলে নতুন কোন প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে না একনেক।

এর আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে প্রকল্প প্রস্তাবটি পাওয়ার পর গত বছরের ৩১ অক্টোবর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি একনেকের বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছিল। একনেকে প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করার কথা বলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর। প্রকল্প প্রস্তাবে এটি বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৩২ কোটি ৪২ লাখ ৭২ হাজার টাকা।

প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, মুজিববর্ষ ২০২০-২১ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপক প্রচার করা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, তথ্য ও সেবাগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচারের মাধ্যমে নাগরিক সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, তথ্য ও সেবাগুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচারের মাধ্যমে নাগরিক সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়ানো এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত বছরের সময়ের বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য ছিল। কিন্তু বর্তমান ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর তালিকায় রয়েছে এটি। তাই প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।’

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে পূর্ণ হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবছর এবং গতবছর ছিল দেশের সুবর্ণজয়ন্তী। সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ২০২০ ও ২১ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, উদ্যোগ কর্মসূচি গ্রহণ এবং অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করেছে।

শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর উদ্যোগ ও কার্যক্রমগুলো সব পর্যায়ের জনসাধারণের মাঝে উপস্থাপন ও প্রচার প্রয়োজন। এ বিষয়টি সামনে রেখে ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মিডিয়া, প্রচার ও ডকুমেন্টেশন উপকমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় আলোচনা হয় সারা দেশে ৩০ ফুট মাপের এক হাজারটি ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করে সারাদিন ধরে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর ওপর কনটেন্ট প্রচার করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে গঠিত ওয়ার্কি কমিটি এবং আইসিটি বিভাগ অডিও ভিজুয়াল প্রদর্শনী স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ৪৯২টি উপজেলায় এলইডি ডিসপ্লে, ঢকায় স্থাপিত কন্ট্রোল সেন্টারের জন্য যন্ত্রপাতি, ৪২ জন মাসে এক কোটি টাকার পরামর্শক সেবা, ৫৭০ জনের প্রশিক্ষণ এবং প্রকল্প কার্যালয়ের জন্য কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক, আসবাবপত্র ক্রয় করা হবে।

প্রবা/এসজি


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা