রিকোর্স চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৭ পিএম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪৮ পিএম
নিজের মাশরুম খামারে সুমেধ চাকমা
রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামারপাড়ার বাসিন্দা সুমেধ চাকমা ২০২১ সালের শুরুতে ইউটিউব দেখে শুরু করেন মাশরুম চাষের। শুরুতে কোনো প্রশিক্ষণ না থাকায় তার পথচলা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হলেও সাফল্যের দেখা মিলেছে। নিজেই গড়ে তুলেছেন বড়গাঙ মাশরুম অ্যাগ্রো ফার্ম।
গত তিন বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম উৎপাদন করে যাচ্ছেন তিনি। ফার্ম থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ কেজি মাশরুম তোলেন তিনি। বার্ষিক উৎপাদন প্রায় চার টন। সুমেধ চাকমা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তার মাশরুম ফার্মে বিনিয়োগ করেছেন ৭ লাখ টাকা এবং মাশরুম বিক্রি করেছেন প্রায় ১৪ লাখ টাকা। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে নিজের ব্যবসা বাড়ানোর কথাও ভাবেন তিনি।
সম্প্রতি সুমেধ চাকমার মাশরুম ফার্মে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি টাঙিয়ে রাখা মাশরুমের অধিকাংশ প্যাকেটে মাশরুম ফুটতে শুরু করেছে। খুব ভোরে উঠে সুমেধ চাকমা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাশরুম সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে পাইকারি ও খুচরা ব্যাবসায়ীদের নিকট পাঠানোর কাজ করেন।
সাপছড়ি ইউনিয়নের খামারপাড়ার বাসিন্দা রতন চাকমা বলেন, সুমেধের মাশরুম ফার্মটি দেখে ভালো লেগেছে। ভবিষ্যতে তার মতো একটা ফার্ম করার ইচ্ছা রয়েছে। যদি সরকারিভাবে সুমেধের ফার্মে কোনো সহযোগিতা করা হয়, তাহলে তার মাশরুম ফার্মটিকে ঘিরে আমাদের এলাকার মানুষের একটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সুমেধ চাকমা বলেন, মাশরুম চাষে আমার খুব আগ্রহ ছিল এটা কঠিনও ছিল আমার জন্য। কারণ প্রথমে আমি কোনো প্রশিক্ষণ পাইনি। অনেক চেষ্টা করেছিলাম সরকারি বা বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিতে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ইউটিউবের ভিডিও দেখে নিজেই মাশরুম চাষ শুরু করি। তবে ২০২৩ সালে হর্টি কালচার সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছি। এর আগে মাশরুমের বীজ পেতে ভোগান্তি হতো। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমি নিজেই মাশরুমের বীজ উৎপাদন করতে পারছি। তবে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমার মাশরুম চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা এবং মাশরুম বিক্রি করে আয় হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ কেজি মাশরুম সংগ্রহ করতে পারি।
সুমেধ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণ ওয়েস্টার মাশরুম চাষ হয়। তবে এবার পরীক্ষামূলকভাবে মিল্কি নামক এক প্রজাতি চাষ করে দেখেছি, খুব ভালো ফলন হয়েছে। এ বছরও মিল্কি ও খান প্রজাতির মাশরুম করার ইচ্ছা আছে। আপাতত এই তিনটি প্রজাতির মাশরুম চাষ করব।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রাঙামাটি আসামবস্তি হর্টি কালচার সেন্টারে আমাদের মাশরুমের প্রজেক্ট রয়েছে। সেখানে মাশরুম চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় এবং মাশরুম বীজ সংগ্রহ করে চাষিরা নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় বা খামারে চাষ করতে পারে। সেক্ষেত্রে কিন্তু আমরাও মাঝে মাঝে পরিদর্শন করি এবং যদি কোনো সমস্যা থাকে, সে সমস্যার আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি।