প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:২৩ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪৬ পিএম
প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয় মানি লন্ডারিংয়ের (অর্থ পাচার) কৌশল ও মাধ্যম। আর্থিক সেবা খাতের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল খাতকে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিশ্বে যে পরিমাণ মানি লন্ডারিং হয় তার প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএফআইইউর উদ্যোগে লাইফ ইনস্যুরেন্স ও নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলো নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিএফআইইউ প্রধান এসব কথা বলেন।
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বিশ্বে যে পরিমাণ মানি লন্ডারিং হয় তার প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হয়। মানি লন্ডাররা প্রতিনিয়ত তাদের কৌশল ও মাধ্যম পরিবর্তন করে থাকে। এক্ষেত্রে আর্থিক সেবা খাতের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল খাতকে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ বিবেচনায় বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের মানি লন্ডারিং ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিএফআইইউর কাছে দাখিল করা সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল মর্মে উল্লেখ করে বিএফআইইউর পরিদর্শনে পাওয়া সন্দেহজনক লেনদেনের বিভিন্ন রেড ফ্ল্যাগের বিষয় তিনি উল্লেখ করেন। বীমা খাতের সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে খাতটির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ছাড়াও তিনি, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানি পরিদর্শনে পাওয়া বিভিন্ন অনিয়ম তুলেন ধরেন। ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর রি-ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম বাবদ বিদেশি নামসর্বস্ব ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো, বীমা পলিসির মেয়াদপূর্তির পরও পলিসির বিপরীতে গ্রাহকদের দাবি নিষ্পত্তি না করা, প্রিমিয়াম বাবদ গৃহীত অর্থ সুষ্ঠুভাবে বিনিয়োগ না করে অন্যত্র স্থানান্তর, প্রিমিয়ামের অর্থ পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্নভাবে তছরুপ, বিভিন্ন ইনস্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের কর্মকর্তাদের নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন পরিচালনা, কর্মকর্তাদের এএমএল বা সিএফটি বিষয়ক আইন, বিধি, গাইডলাইনস ও সার্কুলার এবং এ সংক্রান্ত ঝুঁকি বিষয়ে সম্যক ধারণা না থাকা ইত্যাদি বিষয় এ কর্মশালায় তিনি তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এস এম মাসুদুল হক বলেন, বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পলিসির মেয়াদপূর্তি সত্ত্বেও গ্রাহকদের দাবি অনিষ্পত্তিকৃত থাকে। বীমা খাতে অর্থ পাচারের সিংহভাগ পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে ঘটে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরিচালক এস এম মাসুদুল হক ও সহকারী পরিচালক আবু মাহমুদ। এতে রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন হোছাইনী, যুগ্ম পরিচালক মো. রোকন-উজ-জামান ও মো. মোশাররফ হোসেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন লাইফ ও নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।