× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কপ-২৮

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে ঐতিহাসিক চুক্তি

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৩ পিএম

আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৬ পিএম

চুক্তির পর উৎফুল্ল দৃশ্য। ১৩ ডিসেম্বর দুবাইয়ে। ছবি : সংগৃহীত

চুক্তির পর উৎফুল্ল দৃশ্য। ১৩ ডিসেম্বর দুবাইয়ে। ছবি : সংগৃহীত

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পরিকল্পিতভাবে কমাতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮-এ একটি চুক্তি হয়েছে। জলবায়ু সম্মেলনের প্রায় ৩০ বছরের ইতিহাসে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এতটা স্পষ্ট ভাষায় আর কখনও কোনো প্রস্তাব পাস হয়নি। 

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চল বুধবার শেষ মুহূর্তে চুক্তিটিতে সম্মত হয়। চুক্তিটিকে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন কপ-২৮ এর প্রেসিডেন্ট সুলতান আহমেদ আল-জাবের। তবে বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো চুক্তিটাকে মন্দের ভালো বলে স্বাগত জানিয়েছে। 

এ চুক্তির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনটি হলে উষ্ণাতা বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমানো যাবে। 

চুক্তি অনুমোদনের পর  কপ-২৮ এর প্রেসিডেন্ট সুলতান আহমেদ আল-জাবের বলেন, আজকে একটি প্যারাডাইম শিফট বা যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে গেছে। আজকের সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন করে নির্ধারণ করবে। বিশ্ব এখন সঠিক পথে এগোচ্ছে। তবে যথাযথভাবে চুক্তি বাস্তবায়ন করা না গেলে একটি ভালো চুক্তিও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সুলতান আল-জাবের। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান জলবায়ু দূত জন কেরি বলেন, এ চুক্তি নিখুঁত নয়। কিন্তু তারপরও এ চুক্তি নিয়ে সবার খুশি হওয়া উচিত। ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল যুদ্ধ বিশ্বকে যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে, এমন একটি অবস্থার মধ্যে এ ধরনের চুক্তি আশাব্যঞ্জক। 

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করা হয়। তখন এটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ ঈদে। ঈদে বলেছেন, প্রথমবারের মতো বিশ্ব এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে একমত হয়েছে, যেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য স্পষ্টভাষায় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে দর কষাকষির এই কক্ষে শ্বেতহস্তী ঘাপটি মেরে আছে। যাই হোক, তার পরও আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসার নির্দেশনাটি এ প্রস্তাবে যথার্থভাবে উল্লেখ করতে পেরেছি। 

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বৃহত্তম চিরহরিৎ বনাঞ্চল আমাজন বড় হুমকিতে রয়েছে। আমাজনের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়েছে ব্রাজিলে। কপ-২৮ এর যৌথ ঘোষণাপত্রের খসড়া নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে দেশটি। খসড়া নিয়ে ব্রাজিলের প্রধান জলবায়ু আলোচক আন্দ্রে কাররা দ লাগো বলেন, আমি মনে করি আমাদের এ প্রস্তাবটি পাস করা উচিত। 

খসড়া প্রস্তাবটির কিছুটা সংশোধনী চেয়েছিল বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীন। দেশটির প্রধান জলবায়ু দূত লিউ জহেনমিন বলেছিলেন, চূড়ান্ত খসড়াটি নিখুঁত নয়। কিছু ইস্যু এখনও বাকি। তবে ইস্যুগুলো কী, তা তিনি ব্যাখ্যা করেননি। 

বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানিকে সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিশ্বের ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। 

তাই প্রস্তাবিত খসড়ায় জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরশীলতা কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে জোর দেওয়া হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এবারের জলবায়ু সম্মেলন থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার চিরতরে বন্ধ করার ঘোষণা চেয়েছিল ১০০ এর বেশি দেশ। কিন্তু সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারক দেশের সংগঠন ওপেক এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। তারা চিরতরে বন্ধের (ফেইজ আউট) পরিবর্তে ধাপে ধাপে ব্যবহার কমানোর (ফেইজ ডাউন) প্রস্তাব করে।

এখন চূড়ান্ত প্রস্তাবে ওই দুইটি শব্দগুচ্ছের কোনোটিই না রেখে তৃতীয় একটি পরিভাষা ‘ট্রানজিশন এওয়ে’ ব্যবহার করা হয়েছে। এটাও কিছুটা ফেইজ ডাউনের মতো। অর্থাৎ দুম করে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ না করে তা ধীরে ধীরে পরিকল্পিতভাবে কমিয়ে একপর্যায়ে বন্ধ করা হবে। 

কপ-২৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া সম্মেলনটি ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বর্ধিত সময়ে যৌথ ইশতেহার বা চুক্তি সই করার জন্য দর কষাকষি শুরু হয়। এক ঘণ্টার মধ্যে তা শেষ হয়। সর্বসম্মতিতে বিষয়টি ঘোষণা দেন কপ-২৮ এর প্রেসিডেন্ট সুলতান আল-জাবের। 

এখন বর্ধিত সমাপনী অধিবেশনে চুক্তি নিয়ে প্রতিটি দেশের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত দিচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেছেন, এটা একটি আপস  চুক্তি। তবে, মন্দ নয়। প্রথমবারের মতো বিশ্বের সব দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর বিষয়ে একমত হতে পেরেছে। এটা বিশাল প্রাপ্তি। কিন্তু আমরা আরও বেশি কিছু চাই। এখন প্রতিশ্রুতি কীভাবে রক্ষা করা হবে সেটাই দেখার বিষয়। 

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা