প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৯ পিএম
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২ ২০:১৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
এতদিন ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্পের জন্য বরাদ্দ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে শরিয়তসম্মতভাবে ঋণ নিতে পারত না ইসলামিক ব্যাংকগুলো। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শরিয়তসম্মতভাবেই সেই ঋণ নিতে ও গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করতে পারবে। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতিমালা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
দেশে কার্যরত সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের মাধ্যমে তহবিল সরবরাহ করা হচ্ছে। পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় তহবিল সংগ্রহ শরিয়া অনুবর্তী না হওয়ায় শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ আলোচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় তারল্য সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে না। এ পরিপ্রেক্ষিতে শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক/শাখা বা উইন্ডো এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে আলোচ্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় বরাদ্দকৃত তারল্য সুবিধা পুনঃঅর্থায়ন পদ্ধতির পরিবর্তে শরিয়াসম্মত প্রাক-অর্থায়ন (প্রি-ফাইন্যান্স) পদ্ধতিতে তহবিল প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মতিপত্র পাওয়ার পর ব্যাংক নিজস্ব ঋণ/বিনিয়োগ নীতিমালার আওতায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ/বিনিয়োগ বিতরণ করবে। তবে, শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য গ্রাহকদের বিনিয়োগ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সম্মতিপত্র পাওয়ার পর ব্যাংক নিজস্ব অর্থায়নে ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করবে। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ সম্মতিপত্র প্রাপ্তির পরবর্তী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রাক-অর্থায়নের (প্রি-ফাইন্যান্স) জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে প্রাক-অর্থায়ন (প্রি-ফাইন্যান্স) হিসেবে অর্থ প্রাপ্তির পর ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যেদিন অর্থ ছাড় করা হবে সেদিন থেকেই রেস্ট্রিকটেড মুদারাবা টার্ম ডিপোজিটের ওপর ধার্যকৃত মুনাফা হারে মুনাফা হিসাবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, সুদ বা মুনাফার হার হবে ৪ শতাংশ, যা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরভিত্তিক) আরোপিত হবে। তবে, শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে গ্রাহকপর্যায়ে শুধু মুদারাবা পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করার শর্তে প্রাক-অর্থায়ন (প্রি-ফাইন্যান্স) পদ্ধতিতে তারল্য সুবিধা প্রদান করা হবে। সেক্ষেত্রে, গ্রাহকপর্যায়ে মুনাফার হার হবে ৯ শতাংশ। এর মধ্যে ১ শতাংশ মুনাফা প্রফিট ইকুয়ালাইজেশন (পিইআর) হিসেবে রাখার পর অবশিষ্ট মুনাফার ৫০ শতাংশ মুদারিব এবং ৫০ শতাংশ সাহিবুল মালকে প্রদেয় হবে।
সাহিবুল মাল বা বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদেয় মুনাফা প্রভিশনাল রেট (বছর শেষে চূড়ান্ত মুনাফার সঙ্গে সমন্বয়ের শর্তে) ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে আরোপিত হবে। চূড়ান্ত মুনাফা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পিইআর ব্যবহার করা যাবে। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে মুদারিবের অবহেলা, অসদাচরণ বা চুক্তির কোনো শর্তের ব্যত্যয়ের কারণে সাহিবুল মালের মূলধন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মুদারিব হতে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।
প্রবা/এসজি/এমজে