× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পোশাক খাতে সবুজ বিপ্লব

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪৭ পিএম

পোশাক খাতে সবুজ বিপ্লব

‘সবুজ’ অর্থাৎ পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানায় বিশ্বনেতা হিসেবে নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে বাংলাদেশ। ফলে দেশের ২০৪টি কারখানা এখন ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) লিড সার্টিফিকেশন (সবুজ কারখানার জন্য প্রশংসাপত্র) পেয়েছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে গোল্ড ক্যাটাগরিতে ইউএসজিবিসি থেকে গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন পেয়েছে আরও একটি বাংলাদেশি পোশাক কারখানা। ১১০ পয়েন্টের মধ্যে ৯৯ পয়েন্ট পাওয়া গাজীপুরের সবুজ কারখানাটির নাম ‘ইন্টিগ্রা ড্রেসেস লিমিটেড’।

বাংলাদেশ ২০২২ সালে ২৭টি গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন অর্জন করেছেÑ যার মধ্যে ১৩টি প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে রয়েছে; যা এক বছরে সর্বোচ্চ। মোট ২০৪টি সবুজ সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে ৭৪টি প্লাটিনাম-রেটেড, ১১৬টি গোল্ড-রেটেড এবং বাকিগুলো অন্যান্য রেটেড। ইউএসজিবিসির লিড সার্টিফিকেশন পেতে আরও ৫০০টি কারখানা পাইপলাইনে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ মানের লিড গ্রিন কারখানার মধ্যে ৫৪টি বাংলাদেশে রয়েছে।

শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৯টি এবং ২০টি লিড সার্টিফিকেশন কারখানার মধ্যে ১৮টি বাংলাদেশে রয়েছে। তা ছাড়া বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০৪ স্কোর পাওয়া কারখানাটি বাংলাদেশেই অবস্থিত। ইউএসজিবিসি বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে কারখানাগুলোকে এ সনদ দেয়। যেমনÑ রূপান্তর কার্যক্ষমতা, জ্বালানি, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। সেরা পারফর্মারদের প্ল্যাটিনাম দিয়ে রেট দেওয়া হয়, এরপর গোল্ড ও সিলভার।

এ বিষয়ে তৈরি বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন বিশ্বের কিছু সর্বোচ্চ রেটপ্রাপ্ত লিড সার্টিফায়েড কারখানা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০টি সর্বোচ্চ মানের লিড গ্রিন কারখানার মধ্যে ৫৪টি বাংলাদেশে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০-এর মধ্যে ৯, এবং ২০-এর মধ্যে ১৮টি লিড প্রত্যয়িত কারখানা রয়েছে বাংলাদেশে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টিগ্রা ড্রেসেস লিমিটেড নিয়ে বর্তমানে দেশে সবুজ কারখানার সংখ্যা ২০৪টি। এর মধ্যে ৭৪টি মর্যাদাপূর্ণ প্ল্যাটিনাম ও ১১৬টি গোল্ড মর্যাদা অর্জন করেছে। আরও ৫০০ কারখানা সার্টিফিকেশনের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। ইন্টিগ্রা ড্রেসেসকে ৯৯ স্কোর দিয়ে প্ল্যাটিনাম রেট করেছে ইউএসজিবিসি।

১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসজিবিসি কোনো স্থাপনা বা ভবনের পরিবেশগত কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে লিড সনদ দেওয়া শুরু করে। স্থাপনাগুলোকে আরও পরিবেশবান্ধব করে তোলা এবং ভবনের নকশার ক্ষেত্রে টেকসই চিন্তাভাবনার প্রসারের লক্ষ্যেই এ সনদ দেওয়া হয়। 

ইউএসজিবিসি ২০১১ সালে প্রথমবার বাংলাদেশের দুটি কারখানাকে রেটিং দেয়। এরপর গত দেড় যুগে ধাপে ধাপে সনদ পাওয়া কারখানার সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭৪টি প্ল্যাটিনাম, ১১৬টি গোল্ড, ১০টি সিলভার ও চারটি গ্রিন সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা আছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ এক বছরে সর্বোচ্চসংখ্যক লিড সনদ পেয়েছে। এসময় ৩০টি কারখানা লিড সনদ পায়। এর মধ্যে ১৫টি প্ল্যাটিনাম ও ১৫টি গোল্ড সনদ। ২০২৩ সালের সবশেষ ২২ কারখানা এই স্বীকৃতি পেয়েছে। 

লিড সনদ তৈরি পোশাক খাতে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘দেশের লিড সার্টিফায়েড কারখানাই এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করছে। নেতিবাচক ধারণা দূর করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাখছে আরও শক্তিশালী ভূমিকা। এখন দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে।’ 

চারটি ক্যাটাগরিতে সনদ 

পরিবেশবান্ধব স্থাপনার শর্ত পরিপালন বিবেচনায় মোট চারটি ক্যাটাগরিতে সনদ প্রদান করে ইউএসজিবিসি আর তা হলোÑ সার্টিফায়েড : ৪০-৪৯ পয়েন্ট, সিলভার : ৫০-৫৯ পয়েন্ট, গোল্ড : ৬০-৬৯ পয়েন্ট, প্ল্যাটিনাম : ৮০+ পয়েন্ট। মোট ১১০ পয়েন্টকে সাতটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে এ সনদ দেওয়া হয়। 

একটি কারখানায় জমির ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ২৬ পয়েন্ট, পানি সাশ্রয়ের জন্য ১০ পয়েন্ট, প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহারের জন্য ৩৫ পয়েন্ট, পরিবেশবান্ধব নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের জন্য ১৪ পয়েন্ট, অভ্যন্তরীণ পরিবেশগত অবস্থার জন্য ১৫ পয়েন্ট, অতি সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত যন্ত্রের ব্যবহারে ৬ পয়েন্ট এবং এলাকাভিত্তিক প্রাধান্যতায় ৪ পয়েন্ট বিবেচনায় আনা হয়।

নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক সুনির্দিষ্ট পয়েন্ট অর্জন সাপেক্ষে ইউএসজিবিসি থেকে পরিবেশবান্ধব কারখানা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যায়। যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় তা হলোÑ কারখানা নির্মাণে কী ধরনের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে; কারখানায় সূর্যের আলোর কী পরিমাণ ব্যবহার হয়; সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার করা হয় কিনা; কারখানার নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে শ্রমিকদের বাসস্থান আছে কিনা; স্কুল, বাজার করার ব্যবস্থা বা বাসস্ট্যান্ড রয়েছে কিনা; সূর্যের আলো ব্যবহার করার পাশাপাশি সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার এবং বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি ব্যবহার করা হয় কিনা; বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা ব্যবহার করা হয় কিনা; কারখানা নির্মাণে নির্দিষ্ট পরিমাণ খোলা জায়গা রাখা হয়েছে কিনা; অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কিনা; বৈদ্যুতিক ফিটিংস স্থাপন ছাড়াও অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে কিনা ইত্যাদি। 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা