প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ। প্রবা ফটো
তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিক এবং কর্মচারিদের ন্যূনতম মজুরি পরিবর্তন হয়নি। ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকাই রেখে রবিবার (২৬ নভেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এটিই চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সম্মতির ওপর ভিত্তি করেই চূড়ান্ত করা হয়। যা শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ হবে। মজুরি বোর্ড চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ দিন বোর্ডের সপ্তম এবং সমাপ্ত বৈঠকে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিক এবং কর্মচারীদের গ্রেড-৫টা থেকে গ্রেড-৪ এ নামিয়ে আনা হয়। এখন থেকে শ্রমিকরা এই চারটি গ্রেডে বেতন-বোনাস পাবেন। এ বিষয়ে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘গ্রেডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কারণে শ্রমিকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি।’
চূড়ান্ত মজুরি নির্ধারণে ৪ ও ৩ নম্বর গ্রেডকে একীভূত করে ৩ নম্বর গ্রেড করা হয়েছে, এই গ্রেডে আগে ১৩ হাজার ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও নতুন করে তা ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা করা হয়েছে। দ্বিতীয় গ্রেডে ১৪ হাজার ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার ২৭৩ টাকা আর প্রথম গ্রেডে ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ৩৫ টাকা করা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন বোর্ডে পোশাক কারখানা মালিকদের প্রতিনিধি ও বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, পোশাক শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ জাতীয় পোশাক শ্রমিক লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনিসহ অন্যরা।
এর আগে ঘোষিত মজুরি পুন:মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে ১৯৪টি চিঠি আসে নিম্নতম মজুরি বোর্ডে। এসব চিঠির মধ্যে ১৬৮টি আসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে। এসব সংগঠন ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করা হয়। অন্যদিকে ২৩টি কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে ন্যূনতম মজুরি কমিয়ে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারশি করা হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মালিক পক্ষের দেওয়া প্রথম প্রস্তাব ১০ হাজার ৪০০ টাকায় ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করে। তবে সবকিছু বিবেচনা করে এ খাতের মজুরি নির্ধারণে সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের শেষ সভায় চুড়ান্ত মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়।
ন্যূনতম মজুরি বাড়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মজুরি বোর্ডের মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গত শনিবার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ন্যূনতম মজুরি সরকার ঘোষণা করেছে সাড়ে ১২ হাজার টাকা। এটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এটা বাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। দাবি তো সবাই করতে পারে।’ অন্য গ্রেডগুলোতে কোনো পরিবর্তন আছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমরা দেখবো, সভায় বসবো। উভয় পক্ষ থেকে আপত্তি জমা পড়ছে। সেগুলো আমরা বিচার বিশ্লেষণ করে আপনাদের জানাবো।’
ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা পরিবর্তনের কোনো আভাস আছে কী না জানতে চাইলে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ গত শনিবার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এখনও জানিনা ঠিক, কিছু পরিবর্তন হতেও পারে, নাও হতে পারে। কোনো আভাস দেওয়া যাবে না। সভার পরে জানান যাবে।
নিম্নতম মজুরি বোর্ড গত ৭ নভেম্বর গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে। বর্তমান মজুরির চেয়ে ৫৬.২৫ শতাংশ বাড়িয়ে এই মজুরি নির্ধারণ করা হয়। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করা হবে এবং আগামী বছরের জানুয়ারিতে শ্রমিকরা নতুন মজুরি কাঠামোতে বেতন পাবেন। আগে সাতটি গ্রেড থাকলেও বর্তমানে তা কমিয়ে পাঁচটি করা হয়েছে।