প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:১০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
জাতিসংঘের শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-২৬’-এ বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে ৯৯টি দেশ একটি চুক্তি করে। পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে সেই চুক্তিতে যোগ দেয় বাংলাদেশও। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন টন বা মোট নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের ২২ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এ চুক্তির লক্ষ্যে পৌঁছানোর অংশ হিসেবে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে গিয়ে নগর উন্নয়নে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মনে করছে উদ্যোগী সংস্থা।
এর ফলে ‘প্রমোটিং এনার্জি রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট (এলসিইউডি) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। আর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত। ৬ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের সব ব্যয়ভার অনুদান হিসেবে বহন করবে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বলে কমিশন সূত্রে জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানায়, সারা দেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছরের অক্টোবরের ১০ তারিখ পরিকল্পনা কমিশনে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সুপারিশক্রমে ‘প্রমোটিং এনার্জি রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট (এলসিইউডি) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পটি চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অনুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকায় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান অনুমোদন দেন।
উদ্যোগী সংস্থা মনে করছে, নিম্ন কার্বনভিত্তিক নগর উন্নয়ন সম্পর্কিত কার্যকর সমন্বিত পলিসি, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কারিগরি সহায়তাও প্রয়োজন। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতাও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছে উদ্যোগী সংস্থা বিদ্যুৎ বিভাগ।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার মূল কার্যক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরে জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ মাস্টারপ্ল্যান ২০৩০ বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান, সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং জ্বালানি দক্ষতাবিষয়ক বেঞ্জমার্ক নির্ধারণ সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক কার্যক্রমে সরকারি খাতে ১০টি যথাক্রমেÑ একটি আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ, তিনটি সোলার রুফটপ এবং ছয়টি জ্বালানি দক্ষতাবিষয়ক খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন। অন্যদিকে বেসরকারি ৩৫টি খাত যথাক্রমেÑ ১০টি রুফটপ, একটি আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ এবং ২০টি জ্বালানি দক্ষতাবিষয়ক খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন বলে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০টি মিডিয়া ইভেন্ট, নিউজ লেটার, লিফলেট তৈরি, ১৫ জন প্রশিক্ষকের মাধ্যমে ৫টি প্রশিক্ষণ সেশন আয়োজন, নিম্ন কার্বনভিত্তিক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা এবং ৪টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রস্তাবনায় জানানো হয়েছে।