প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২৩ পিএম
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ছবি : সংগৃহীত
মজুরি ঘোষণার পরেও কেন আন্দোলন চলছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘মজুরি বৃদ্ধিতে মালিকপক্ষের প্রস্তাব ছিল ১০ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে মানবিক বিবেচনায় মালিকেরা তা মেনে নিয়েছেন।’
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৫তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বৈচিত্র্যময় উদ্ভাবনী ডেনিম পণ্য প্রদর্শনের লক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল ৯ নভেম্বর পর্যন্ত।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যে মজুরি ধরা হয়েছে এটাও মালিকপক্ষের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু মজুরি ঘোষণার পরেও কেন আন্দোল চলছে। এভাবে চললে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের উচিত হবে কারো উস্কানির ফাঁদে পা না দিয়ে কারখানা রক্ষা করা, কাজে ফিরে যাওয়া।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘সরকার বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় রেখেই তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সমন্বয়ের চেষ্টা করেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে মজুরি বৃদ্ধি করে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার কথা বলেছেন। এতে মালিকদের কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত তারা (মালিকেরা) সেটা মেনে নিয়েছেন।’
ডেনিম এক্সপোর এবারের আসরে বাংলাদেশ, চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইতালি, স্পেন, জার্মানি, ভিয়েতনাম, জাপান, ভারত, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডসহ ১২টি দেশের ৮০টির বেশি কোম্পানি অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত বস্ত্র, পোশাক, সুতা, যন্ত্র, ফিনিশিং সরঞ্জাম ও উপকরণ প্রদর্শন করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের সুবিধার কথা আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের পরিবার কার্ড দেওয়ার কথা বলেছেন। তাতে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার কিনতে পারবে। মজুরি নিয়ে মালিকদের প্রাথমিক প্রস্তাব আরও কম ছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে তারা সেটা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কেউ কেউ সমস্যা করার চেষ্টা করছে।’
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করা আমাদের অগ্রাধিকার। আশা করছি ক্রেতারাও আমাদের এ কাজে সহযেগিতা করবে।’
ডেনিম এক্সপো নিয়ে ফারুক হাসান আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক ডেনিম খাতে এই এক্সপো গুরুত্বপূর্ণ জাযগা করে নিয়েছে। বর্তমানে আমরা তৈরি পোশাক খাতে ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করছি। ২০৩০ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে চাই। এ জন্য এই খাতে পণ্য বৈচবত্র্যকরণের বিকল্প নেই।’
এইচঅ্যান্ডএমের বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়ার আঞ্চলিক প্রধান জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমাদের পণ্যের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস বাংলাদেশ। আমরা যে দেশেই কার্যক্রম পরিচালনা করি, সেখানকার স্থানীয় নিয়ম মেনে চলি। এ জন্য বাংলাদেশে নতুন বেতন কাঠামোতে চূড়ান্তভাবে ন্যূনতম যে মজুরি নির্ধারণ করা হবে, সে অনুযায়ী আমরা মূল্য পরিশোধে রাজি আছি।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল মান্নান এবং বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজ উদ্দিন বক্তব্য দেন।
আয়োজকেরা জানান, ডেনিম জগতে আন্তর্জাতিকভাবে শীর্ষস্থানীয় প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো অন্যতম। ইতিমধ্যে এটি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে, বিশেষ করে ইউরোপীয় ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয় ডেনিম সোর্সিং প্ল্যাটফর্মের খ্যাতি পেয়েছে।