× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেবার হাত নিয়ে প্রান্তিক মানুষের দুয়ারে নগদ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:২৮ পিএম

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:২৯ পিএম

নগদ অ্যাপ সেবা প্রান্তিক মানুষের দুয়ারে। প্রবা ফটো

নগদ অ্যাপ সেবা প্রান্তিক মানুষের দুয়ারে। প্রবা ফটো

গাজীপুরের ভাওয়াল গড় ইউনিয়নের বাউল নিরঞ্জন চন্দ্র বর্মন। চোখে দেখতে পান না বলে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতাই তার শেষ সম্বল। কিন্তু এই টাকা তুলতেও দুর্ভোগের শেষ ছিল না। টেম্পু-বাসে করে ২০ কিলোমিটার দূরের ব্যাংকে যাও, লাইনে দাঁড়াও; সারাটা দিন খরচ। কখনও টাকা না পেলে আরও একটা দিনের কষ্ট। কিন্তু নিরঞ্জনের জীবনটা সহজ করে দিয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবা।

এখন ভাতা বিতরণের সঙ্গে সঙ্গে সেটা পৌঁছে যায় নিরঞ্জনের মোবাইল অ্যাকাউন্টে। প্রয়োজনে ঘরের পাশেই টাকা তুলে নিতে পারেন তিনি। কেবল নিরঞ্জন নয়, এমনই সহজ হয়ে গেছে কোটি কোটি মানুষের জীবন। 

মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে সরকারি ভাতা, উপবৃত্তি এবং আরও অনেক সহায়তা এখন বিতরণ হয় সহজেই। কোভিডকালেই এই ধারায় এগিয়েছে সরকার।

অনেকেরই মনে থাকার কথা। ভর কোভিডের সময় দুস্থ-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ভয়ও ছিল। ততদিনে নামকাওয়াস্তে কিছুমাত্রায় মোবাইলের মাধ্যমে সরকারের উপবৃত্তি বিতরণ করতে গিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হয়নি সরকারের। তখনই ডাক পড়ে মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদের। মাত্র কয়েক মাস হয় বাজারে এসেছে তারা। কিন্তু শুরু থেকেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রচলন করে এতটাই সাড়া ফেলেছে যে, সরকার সরাসরি আস্থা রাখে তাদের ওপর।

“রাত-দিন পরিশ্রম করে আমাদের কর্মীরা সরকারকে একটা সমাধানের পথ বাতলে দেয়। তার ওপর ভর করেই আমরাসহ আরও তিনটি অপারেটরকে যুক্ত করে বিতরণ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সেই সহায়তা,” বলছিলেন নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। আর তার প্রেক্ষিতেই ১৮ লাখ মানুষকে সহায়তা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় নগদকে। “সেই দফায় আমরা যে পদ্ধতি দেখিয়েছিলাম তাতে ৫০ লাখ মানুষের তালিকা পাওয়া গেলেও প্রযুক্তিগত যাচাই-বাছাইয়ে আমরা দেখিয়েছিলাম এর মধ্যে ১৪ লাখ নামই ছিল ভুয়া,” যোগ করেন তানভীর। ফলে সরকারের বেঁচে যায় কয়েকশ কোটি টাকা। পুরো প্রক্রিয়া হয় স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন। প্রযুক্তিগত এই উৎকর্ষের পুরস্কার পরে নগদ নানাভাবে পেয়েছেও।

এই দৃষ্টান্ত দেখে উৎসাহিত হলো কয়েকটি সরকারি সংস্থা ও মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর। আর সরকারের এ দুটি ভাতা ও উপবৃত্তির প্রায় পুরোটাই এখন নগদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে যাচ্ছে।

দুই দুইবার প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা প্রান্তিক পর্যায়ের সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছে দিতে পারার এই সাফল্যে অল্প দিনেই প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণের কাজ চলে আসে নগদের হাতে। আগে থেকেই একটি প্রতিষ্ঠান মোবাইলের মাধ্যমেই উপবৃত্তি বিতরণ করে আসছিল। কিন্তু তাদের নামে ছিল হাজারো অভিযোগ। অস্বচ্ছতার কারণে টাকা না পাওয়াসহ হাজারো অভিযোগ আসতে শুরু করে। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এজেন্টই ছিল না সবখানে। এসব কারণেই নগদকে ডেকে নেয় মন্ত্রণালয়। 

দায়িত্ব পেয়েই একটা পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করে নগদ। শিক্ষার্থীদের মায়ের মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে এবং শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদ মিলে তৈরি হয় এই ডেটাবেজ। ফলে নিশ্চিত হলো স্বচ্ছতা। এই পদ্ধতিতে উপবৃত্তি বিতরণ করে অবিশ্বাস্য সাফল্য পায় সরকার। আর সুনামের কিছুটা ভাগ পায় নগদ।

একই ধারাবাহিকায় সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা বিতরণের দায়িত্বও বর্তায় প্রতিষ্ঠানটির ওপর। তখন পর্যন্ত সমাজসেবা অধিদপ্তর এই ভাতা বিতরণ করত হাতে হাতে, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে। তাতে যা হওয়ার তাই-ই হতো। কিছু ভাতা ব্যাংকে গেলেও বয়স্ক ও দরিদ্র মানুষের পক্ষে শহরের ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভাতা গ্রহণ ছিল কঠিন একটা কাজ। ভাতার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যেত তখন। এর সঙ্গে ছিল ৯০০ টাকা ভাতা নিতে ২০০-৩০০ টাকা যাতায়াত খরচ। এসব সংকট ঘোচাতে দুই বছর আগে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুটি মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানকে। সেখানে প্রায় ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব পায় নগদ। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ভাতা বিতরণ করে এই খাতে অবিশ্বাস্য সাফল্য পায় সরকার। আর সুনামের কিছুটা ভাগ পায় নগদ।

প্রতিষ্ঠানটি ভাতা বিতরণ শুরু করার পর চিত্রটাই বদলে গেল। বয়স্ক, বিধবা, অসহায় মানুষগুলো ঘরে বসে পেতে শুরু করলেন ভাতার টাকা। ভাতা বিতরণ হওয়ার এক মিনিটের মধ্যে ভাতাভোগীর মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। পাশেই কোনো এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ-আউট করে নিতে পারছেন তারা।

অনন্য তিন সাফল্যের কারণে পরে আরও সরকারি সংস্থা যেমনÑ কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ও তাদের বিভিন্ন বরাদ্দ ও ভাতা বিতরণের জন্য ঘুরেফিরে নগদের কাছেই এসেছে। বর্তমানে নগদ ১০টি ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১৮টি প্রকল্পে অর্থ বিতরণের কাজ করছে।

প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি সরকারের তরফ থেকে নগদকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে খরচ কমানোও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করেছে। তাতে করে দিন বদলের অগ্রযাত্রায় প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি সুবিধা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া যেমন ডিজিটাল হয়েছে, তেমনি নিশ্চিত হয়েছে স্বচ্ছতা। আর ডিজিটাল জাতি হিসেবে বাংলাদেশেরও অগ্রগতি ঘটেছে।

সরকারের এত এত ভাতা, উপবৃত্তি ও সহায়তা দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে সবচেয়ে বড় যে পুরস্কারটি নগদ পেয়েছে সেটি হলোÑ দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন সেবার কলেবরকে আরও বিস্তৃত কলেবরে নিয়ে যেতে কাজ করছে তারা।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা