প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:১৬ পিএম
অমর্ত সেন : দ্যা লাইয়ন হু ডিফাইজ উইন্টার' বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো
অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অমর্ত্য সেন স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার উন্নতির ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের প্রশংসা করেছেন কিন্তু মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তিনি গণতন্ত্রকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি ভারতকেই এগিয়ে রেখেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএসের কনফারেন্স রুমে 'অমর্ত সেন : দ্যা লাইয়ন হু ডিফাইজ উইন্টার' বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন আলসটার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এস আর ওসমানী। অনুষ্ঠানে প্রকাশনাটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোশ্যাল এফেয়ার্সের সাবেক প্রধান উন্নয়ন গবেষক ড. নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়েক সেন।
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, জনকল্যাণের জন্য উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন একে অন্যের পরিপূরক। এই দুটিকে কখনো বিকল্প ভাবা উচিত নয়। মানবাধিকার ও ব্যক্তি মত প্রকাশের কথা অমর্ত্য সেন বলেন।
তিনি বলেন, অমর্ত্য সেন নোবেল পুরস্কার পেয়ে সরাসরি ঢাকায় এসেছিলেন। যা নিয়ে ভারতে প্রশ্নও উঠেছিল।তিনি অর্থনীতিকে মানবকল্যানে রূপান্তর করেছেন। তিনি মত প্রকাশে স্বাধীনতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উদার গনতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিপূরক।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অমর্ত্য সেনের উদার অর্থনৈতিক নীতি জনকল্যাণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার অর্থনৈতিক দর্শন আমাদের জন্য অনুকরণীয়। অমর্ত্য সেন দুই বছর আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু। তিনি বলেছিলেন , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলার বন্ধু নয় তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের বন্ধু।
বইটির লেখক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, অমর্ত্য সেনের বুদ্ধিবৃত্তিক কৃতিত্ব নিয়ে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। তিনি বাংলাদেশকে বেশি নিজের মনে করেন। তার জন্ম এখানে। তার শৈশবও কেটেছে বাংলাদেশে। তাই তার বাংলাদেশের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা রয়েছে।অমর্ত্য সেনের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় ১৯৮৭ সালে। আমি তার সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়েক সেন বলেন, সোশ্যাল ও ইকোনমিক রেসপনসিবিলিটি যেন আমাদের দেশে অব্যাহত থাকে সেটাই তিনি বলেছেন। তিনি অর্থনীতিকে কিভাবে মানব কল্যাণে ব্যবহার করা যায় সেটাই বলেছেন।
উল্লেখ্য অমর্ত্য সেন ১৯৩৩ সালের ৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৯০ তম জন্মদিন। তিনি অর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার বিজয়ী একজন ভারতীয় বাঙালি অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক। দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্রের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে তিনি অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে ব্যাংক অফ সুইডেন পুরস্কার (যা অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার হিসেবে পরিচিত) লাভ করেন। অমর্ত্য সেনই জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য মানব উন্নয়ন সূচক আবিষ্কার করেন।তিনিই প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হয়েও ন্যাশনাল হিউম্যানিটিস মেডেলে ভূষিত হন।