ফারমার্স ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩৪ পিএম
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩৫ পিএম
মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী (বায়ে) ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতী। ছবি : ফোকাস বাংলা
ফারমার্স ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছেন আদালত। বাবুল চিশতীর স্ত্রী রোজী চিশতী ও ব্যাংকের সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খানকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বাবুল চিশতি, তার স্ত্রী ও ছেলেকে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জরিমানা না দিলে বাবুল চিশতী ও তার ছেলেকে দুই বছর এবং রোজি চিশতীকে এক বছর বেশি কারাভোগ করতে হবে। কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের পাশাপাশি এই তিন আসামিদের সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আরেক আসামি মাসুদুর রহমান খানকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত এবং তার সম্পত্তিও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণার আগে বাবুল চিশতীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা রাশেদুল হকও হাজির ছিল এজলাস কক্ষে। তবে জামিনে থাকা রোজী চিশতী ও মাসুদুর রহমান আদালতে হাজির হননি। আদালত জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। রায় শেষে বাবুল চিশতী ও রাশেদুল হককে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রায় ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ব্যাংকের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদে ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলন করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়েদের ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখার মোট ২৫টি হিসাবে বেশিরভাগ অর্থ নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে মোট ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। দুদকের অভিযোগ, হিসাবগুলোতে গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করে এবং নিজেদের নামে ক্রয়কৃত ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে আসামিরা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত চার বছর এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার নানা ধাপ শেষে রায় ঘোষিত হয়।