জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল
আলমগীর হোসেন, জামালপুর
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১০:০০ এএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৪০ এএম
ফাইল ফটো
জামালপুর সদরের দিগপাইত এলাকায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) উদ্যোগে করা হয়েছে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রথম পর্যায়ে ২৩৯ একর জায়গার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮৮ একর জমি প্লট আকারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে দেশি-বিদেশি শিল্প-উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কারখানা স্থাপন করছেন। একই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে অবশিষ্ট এলাকায় উন্নয়নকাজ চলছে। চলতি বছরের শেষর দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করবে। এ প্রকল্পের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থান হবে অন্তত ২৫ হাজার মানুষের।
২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো প্রকল্পটি চালু হলে এতে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে অন্তত ৫০০ মিলিয়ন ডলার।
জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে মোট ৪৩৭ একর জমিতে করা জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন চলছে নানা কর্মযজ্ঞ। বিভিন্ন কলকারখানা স্থাপনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। দেশি-বিদেশি শিল্প-উদ্যোক্তারা প্লট বরাদ্দ নিয়ে এখানে তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করছেন। তবে এখনও উৎপাদনে যায়নি কোনো প্রতিষ্ঠান।
বেজা সূত্রে জানা গেছে, বন্যাপ্রবণ অঞ্চল হওয়ায় প্রকল্প এলাকা মহাসড়কের সমান উঁচু করা হয়েছে। পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চলের চারপাশে সীমানাপ্রাচীর, প্রকল্প এলাকার ভূমি উন্নয়নসহ প্রশাসনিক ভবন, গ্যাস স্টেশন, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, পানি শোধনাগারসহ একাধিক কর্টেজ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, ড্রেন ও নিরাপত্তাসহ সব ধরনের আধুনিক সুবিধা।
জামালপুর কৃষিসমৃদ্ধ জেলা হওয়ায় এখানে কৃষি ও মসলাজাত পণ্য, পাট, চামড়া, সিরামিক, অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ, টেক্সট্রাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করা হবে। নানা ধরনের পণ্য উৎপাদনের জন্য এখানে ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির শিল্প স্থাপন করা হবে।
জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বলেন, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা শিল্পকারখানা স্থাপন করছেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পকারখানায় উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জেলার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শ্রমিকনির্ভর কারখানা স্থাপনের জন্য শিল্প-উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে এ প্রকল্পে প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক চাকা সচল হবে। জামালপুর জেলা একটি উন্নত সচ্ছল ও আধুনিক জেলায় পরিণত হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, এ বছরের ডিসেম্বরে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কিছু প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে জেলার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। কর্মসংস্থান হবে ২৫ হাজার মানুষের। জামালপুরের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন জানান, ৪৩৭ একর জমির ওপর স্থাপিত জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথম পর্যায়ে ২৩৯ একর জায়গার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ১০২ একরে উন্নয়নকাজ চলছে। ইতোমধ্যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে ১৮৮ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ২৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরের শেষদিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই এসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করবে। ফলে এখানে কর্মসংস্থান হবে অন্তত ২৫ হাজার মানুষের।