প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪১ পিএম
খোলা বাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। সংগৃহীত ফটো
খোলা বাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে
যাচ্ছেন তাদের প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২০ টাকা পর্যন্ত। দেশে ডলারের
তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে, লাগামহীন বাড়ছে দাম। কমছে টাকার
মান। নানা পদক্ষেপ নিয়েও দাম নিয়েন্ত্রণে আনতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার
কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১১৯ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। যেখানে গত সপ্তাহে এক
ডলার ছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা। যদিও নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খুচরা ডলারের দাম ১১৩
টাকার বেশি হওয়ার কথা না।
রাজধানীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এক্সচেঞ্জ হউজ ও ডলার কেনাবেচার
সঙ্গে জড়িত লোকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ মানি
চেঞ্জারের কাছে ডলার নেই। যাদের কাছে আছে তারাও সরাসরি ডলার বিক্রি করছে না। পরিচিত কারো মাধ্যমে ডলার বিক্রি করছেন। প্রতি ডলারে রেট নিচ্ছেন ১১৯
টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশন অব
বাংলাদেশ মহাসচিব হেলাল সিকদার বলেন, বাংলাদেশ
ব্যাংক মানি চেঞ্জারগুলোর ডলারের দাম বেধে দিয়েছে ১১১ টাকা ৮০ পয়সা কেনা ও বিক্রির
রেট ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা। এ দামে কেউ ডলার পাচ্ছে না, তাই মানি
চেঞ্জারগুলো এখন শূন্য হাতে বসে আছে।
তিনি জানান, ডলার মানি চেঞ্জারগুলো না পেলেও
ট্যাভেল এজেন্সি ও ফুটপাতে ডলার বিক্রি হচ্ছে। কারণ তাদের কারো কাছে হিসাব দিতে হয়
না। তাদের কাছে ডলারের অভাব নেই। কারণ বেশি দাম দেওয়ায় গ্রাহক বিভিন্ন এজেন্সির
কাছে ডলার বিক্রি করছে। তারা ইচ্ছে মত দাম নিচ্ছে।
করণীয় কি জানতে চাইলে মানি চেঞ্জারদের এ নেতা বলেন, এখন মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে ১১৪
টাকা ৫০ পয়সায়। সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা যোগ হলে ১১৭ টাকা পড়ছে। এই রেটে
অর্থাৎ বাজার ধরে মানি চেঞ্জারগুলো ডলার সংগ্রহ করতে পারলে বাজারে ডলার সরবারহ
বাড়ছে দামও ধীরে ধীরে কমে যাবে। এখন বৈধ পথে ডলার কেনা বেচা হচ্ছে না বলে দাম
বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডলার সংকট ও বাজার স্থিতিশীলতার জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং
আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। এখন
প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা দাম দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। রপ্তানি বিল
নগদায়নে প্রতি ডলারের বিপরীতে দাম দেওয়া হচ্ছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমদানি ও
আন্তঃব্যাংক লেনদেনে দেওয়া হচ্ছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি
বজারে ডলার সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ
থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয়
ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের
অর্থবছরে ( ২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের
আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০
কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সেই রিজার্ভ এখন কমে হয়েছে ২ হাজার ৬৭৪ কোটি (২৬
দশমিক ৭৪ বিলিয়ন) ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬
অনুযায়ী, রিজার্ভ বর্তমানে ২ হাজার ৯০ কোটি (২০ দশমিক ৯০
বিলিয়ন) ডলার।