প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৩০ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৩৫ পিএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের পদক্ষেপের ব্যর্থতার কারণে ‘ডি’ গ্রেড পেয়েছেন। নিউইয়র্কভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে আব্দুর রউফকে এই গ্রেড দেওয়া হয়েছে।
গ্রেডগুলোর মধ্যে ডি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন গ্রেড। এশিয়ার আর কোনো দেশের গনর্ভর এত কম গ্রেড পাননি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও টাকার মান ধরে রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ডি গ্রেড দেওয়া হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সব সূচকে সাফল্য অর্জন করায় প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ পেয়েছেন এ প্লাস। শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়াত্ব ও ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি থেকে বের করে আনা গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহে পেয়েছেন এ মাইনাস।
১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গভর্নরদের গ্রেডিং করে আসছে গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন। সাময়িকীটির বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে নিয়মিতভাবে প্রকাশ হচ্ছে ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড’।
১০১টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনটি রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের পাঁচ ক্যাটাগরিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। ক্যাটাগরিগুলো হলো এ, বি, সি, ডি এবং এফ।
সাফল্য কমবেশি হওয়ায় এফ ছাড়া প্রত্যেক ক্যাটাগরির আবার দুইটি সাবক্যাটাগরি রয়েছে। যেমন এ প্লাস, এ মাইনাস ইত্যাদি।
আর কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অকার্যকর ও চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যর্থ হিসেবে বিবেচিত হলে সেটির গভর্নরকে এফ গ্রেড দেওয়া হয়েছে।
এশিয়ায় গভর্নরদের মধ্যে ভারত ছাড়া ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নগুয়েন থি হংও এ প্লাস পেয়েছেন। নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মহাপ্রসাদ অধিকারী পেয়েছেন ‘বি মাইনাস’ গ্রেড। মূল্যস্ফীতিসহ ভয়াবহ সংকটে থাকা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জামিল আহমদ পেয়েছেন ‘সি মাইনাস’।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আবার মূল্যস্ফীতির হার বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ শতাংশের লক্ষ্যকে ছাড়ালেও এ অতিরিক্ত হার সীমিত ছিল দশমিক ৬ শতাংশীয় পয়েন্টে। স্থিতিশীল ছিল টাকার বিনিময় হারও।
কিন্তু ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে টাকার অবমূল্যায়ন হয় সাড়ে ৯ শতাংশ। ডলার সংকটে হিমশিম খেতে থাকেন পণ্য আমদানিকারকরা। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য ব্যাপক মাত্রায় বাড়তে থাকে। মূল্যস্ফীতিও হয়ে ওঠে লাগামহীন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা কমতে থাকায় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণের কারণে মূল্যস্ফীতির মতো বাহ্যিক ধাক্কার মুখে নাজুক অবস্থানে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
সূত্র : গ্লোবাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন